Advertisement
E-Paper

ভরসা তিন মন্ত্রে, বাজেটের কাজ শুরু জেটলির

প্রত্যাশার পাহাড় কাঁধে নিয়েই পায়ের নীচে ভারসাম্যের দড়ি খুঁজছেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। যাতে হেঁটে প্রথম বাজেটেই মোদী-সরকারের অভিমুখ নির্দিষ্ট করে দেওয়া যায়। স্পষ্ট তুলে ধরা যায় তার লক্ষ্য। নর্থ ব্লকে ফিসফাস, তা করতে গিয়ে মূলত তিনটি জিনিস খতিয়ে দেখছেন তিনি।

প্রেমাংশু চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৪ ০২:৫০

প্রত্যাশার পাহাড় কাঁধে নিয়েই পায়ের নীচে ভারসাম্যের দড়ি খুঁজছেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি।

যাতে হেঁটে প্রথম বাজেটেই মোদী-সরকারের অভিমুখ নির্দিষ্ট করে দেওয়া যায়। স্পষ্ট তুলে ধরা যায় তার লক্ষ্য। নর্থ ব্লকে ফিসফাস, তা করতে গিয়ে মূলত তিনটি জিনিস খতিয়ে দেখছেন তিনি। এক, আমজনতার (বিশেষত মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত) ঘাড় থেকে আয়করের বোঝা কমানোর সুযোগ আদৌ রয়েছে কি না। দুই, অপ্রয়োজনীয় খরচ ছেঁটে রাজকোষ ঘাটতিতে রাশ টানার উপায়। আর তিন, বৃদ্ধির চাকায় গতি ফেরাতে কল-কারখানার উৎপাদনে গতি আনা।

অর্থ মন্ত্রকের এক কর্তার দাবি, এই ‘তিন মন্ত্র’কে সামনে রেখেই বাজেট তৈরির কাজ শুরু করেছেন জেটলি। সে জন্য চলতি সপ্তাহ থেকেই প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে পুরোদমে। দফায় দফায় বৈঠক হচ্ছে শিল্পমহল, বণিকসভা থেকে শুরু করে বিভিন্ন মহলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে। আর এরই মধ্যে উঁকি দিচ্ছে প্রশ্ন, সত্যিই কি করশূন্য আয়ের ঊর্ধ্বসীমা বাড়াবেন অর্থমন্ত্রী? এক লাখের বেশি জমালে, করছাড়ের সুবিধা কি এ বার মিলবে? ঘাটতি কমাতে কি আদৌ তেতো ওষুধ প্রয়োগের সাহস দেখাবেন জেটলি?

আসলে জেটলি বিলক্ষণ জানেন, চড়া মূল্যবৃদ্ধিতে জেরবার মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্তদের একটা বড় অংশ এ বার ভোট দিয়েছেন পদ্মে। এই আশায় যে, মোদী-সরকার এলে হয়তো আয়করের বোঝা কিছুটা কমবে। সরকার বুঝবে, আকাশছোঁয়া দামের এই বাজারে থলি ভরতে পকেটে কিছুটা বাড়তি টাকা প্রয়োজন। আর হয়তো সে কারণেই অনেকে মনে করছেন, করশূন্য আয়ের ঊর্ধ্বসীমা এখনকার দু’লক্ষ টাকা (৬০ বছরের কম বয়সীদের জন্য) থেকে বাড়িয়ে আড়াই বা তিন লক্ষ টাকা করতে পারেন জেটলি। ৮০সি ধারায় এখন এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয়ে করছাড় মেলে। বাজেটে বাড়তে পারে সেই অঙ্কও।

তবে জল্পনা আর অর্থনীতির অঙ্ক এক নয়। তাই বিশেষজ্ঞরা অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, ওই দুই ঊর্ধ্বসীমা যদি সত্যিই বাড়ে, তবে কর আদায়ের সেই ঘাটতি কী ভাবে পূরণ করবে নতুন সরকার?

সে ক্ষেত্রে আশাবাদীদের যুক্তি, ভোটের ফল সামনে আসার পর অর্থমন্ত্রী হওয়ার ঠিক আগে খোদ জেটলিই বলেছিলেন, আয়কর অবশ্যই কমা উচিত। করশূন্য আয়ের ঊর্ধ্বসীমা দু’লক্ষ থেকে নিয়ে যেতে হবে পাঁচ লক্ষ টাকায়। তা হলে সাধারণ মানুষের হাতে খরচের জন্য বাড়তি টাকা আসবে। বাড়বে কেনাকাটা। ফলে বাড়বে যুক্তমূল্য কর (ভ্যাট) এবং উৎপাদন শুল্কের অঙ্কও। তবে কত দিনে ওই ঊর্ধ্বসীমা বাড়ানো উচিত, তা স্পষ্ট করেননি তিনি।

কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে কি সেই কথা রাখা সম্ভব অর্থমন্ত্রীর পক্ষে? ডেলয়েট হাস্কিনস অ্যান্ড সেলসের পার্টনার দিব্য বাদেজা বলছেন, “করশূন্য আয়ের ঊর্ধ্বসীমা বাড়ানোর বিষয়টি করদাতারা আশা করতেই পারেন। বাড়তে পারে ৮০সি ধারায় করছাড়ের সুযোগও।” মধ্যবিত্তদের খুশি করতে ফ্ল্যাট-বাড়ি কেনার ঋণেও কিছু সুরাহা দেওয়ার ভাবনাচিন্তা চলছে।

অর্থ মন্ত্রকের দায়িত্ব নিয়েই জেটলি বলেছিলেন, তাঁর প্রধান তিন লক্ষ্য, বৃদ্ধির গতি ফেরানো, মূল্যবৃদ্ধিতে রাশ আর কাজের সুযোগ তৈরি। অর্থ মন্ত্রকের কর্তারাই বলছেন, অর্থনীতিকে ঘুরিয়ে দাঁড় করাতে উৎপাদন শিল্পকে চাঙ্গা করার উপরই সবথেকে বেশি জোর দিচ্ছেন জেটলি। মন্ত্রক সূত্রে খবর, এ জন্য কর কাঠামোয় বদলের ভাবনা চলছে। যাতে অ্যালুমিনিয়াম পণ্য, সিমেন্ট, কাগজ, ইস্পাত ইত্যাদি শিল্পে কাঁচামাল আমদানির জন্য করের বোঝা কিছুটা কমে। আর তার দৌলতে বিশ্ব বাজারেও দামের লড়াইয়ে পাল্লা দিতে পারে দেশীয় সংস্থাগুলি।

সরকারি সূত্রের বক্তব্য, এত দিন এই আন্তর্জাতিক বাজার দখলের পথে অন্যতম বড় অসুবিধা ছিল শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রকের সঙ্গে অর্থ মন্ত্রকের সমন্বয়ের অভাব। সেই সমস্যা মেটাতে এ বার শিল্প-বাণিজ্য মন্ত্রকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে নির্মলা সীতারামনকে। যিনি আবার অর্থ মন্ত্রকে জেটলির প্রতিমন্ত্রী।

premangshu chowdhury arun jetly
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy