Advertisement
০৮ মে ২০২৪

মোদীর পথেই বিশ্বনাথ দর্শনে রাহুল

মাসখানেক আগেই বারাণসীতে সভা করে যান নরেন্দ্র মোদী। জনতার মুখোমুখি হওয়ার আগে সাত সকালে দর্শন করে এসেছিলেন কাশী বিশ্বনাথের মন্দির। আজ সে পথে হাঁটলেন রাহুল গাঁধীও। বারাণসী রেল স্টেশন সংলগ্ন চৌহদ্দিতে আজ রিকশাচালকদের সঙ্গে ‘চৌপাল’ (বৈঠক) করেন রাহুল।

কাশী বিশ্বনাথ দর্শনে রাহুল। শনিবার। ছবি:  পিটিআই।

কাশী বিশ্বনাথ দর্শনে রাহুল। শনিবার। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০১৪ ০৮:৫০
Share: Save:

মাসখানেক আগেই বারাণসীতে সভা করে যান নরেন্দ্র মোদী। জনতার মুখোমুখি হওয়ার আগে সাত সকালে দর্শন করে এসেছিলেন কাশী বিশ্বনাথের মন্দির। আজ সে পথে হাঁটলেন রাহুল গাঁধীও।

বারাণসী রেল স্টেশন সংলগ্ন চৌহদ্দিতে আজ রিকশাচালকদের সঙ্গে ‘চৌপাল’ (বৈঠক) করেন রাহুল। তবে তার আগেই সকাল সকাল স্নান করে কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরে পুজো দিয়ে আসেন তিনি। রাহুলের ক্ষেত্রে যা যথেষ্ট বিরল ঘটনা বলে মনে করা হচ্ছে।

হিন্দুত্বের রাজনীতির সঙ্গে বিজেপি-র সম্পর্ক নতুন নয়। তাই নরেন্দ্র মোদী বারাণসী গেলে তিনি যে বিশ্বনাথ মন্দিরে যাবেন, সেটাই প্রত্যাশিত। কিন্তু এর আগে রাহুলকে কোনও মন্দিরে যেতে বিশেষ দেখা যায়নি। এ বার মন্দিরের পাশাপাশি পূর্ব উত্তরপ্রদেশে তাঁর দু’দিনের সফরে রাহুল বরাবাঁকির দাওয়া শরিফ দরগাতেও যান। সেখানে চাদর চড়াতে দেখা যায় তাঁকে।

অনেকের ধারণা, নরেন্দ্র মোদী বিজেপি-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হওয়ায় উত্তরপ্রদেশ নিয়ে এ বার কিছুটা চিন্তায় আছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। তাঁদের আশঙ্কা, উত্তরপ্রদেশে উচ্চবর্ণের ভোট এ বার বিজেপি-র অনুকূলেই যাবে। বিশেষ করে উত্তরপ্রদেশের গ্রামগঞ্জে বিজেপি ও সঙ্ঘ পরিবার যে ভাবে ছোট ছোট রথযাত্রা করছে, তা কংগ্রেসকে উৎকণ্ঠায় ফেলেছে। উচ্চবর্ণের ভোটের সবটাই যাতে বিজেপি-র দিকে না যায়, সেই চেষ্টায় রয়েছেন কংগ্রেস নেতারা। সম্ভবত সেই ভাবনা থেকেই রাহুল আজ কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরে গিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এ রাজ্যের সংখ্যালঘু ভোটের কথা মাথায় রেখে দরগাতেও যান রাহুল। ওই ভোট কংগ্রেসের বড় ভরসা। কারণ গত লোকসভা নির্বাচনে সংখ্যালঘু ভোটের অনেকটাই গিয়েছিল কংগ্রেসের ঝুলিতে।

তবে রাহুল শিবিরের এক নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার শীর্ষ সারির সদস্য আজ বলেন, ধর্মের ভিত্তিতে রাজনীতির পক্ষে নন রাহুল। কিন্তু পূর্ব উত্তরপ্রদেশের কংগ্রেস নেতারা তাঁকে বোঝান, বারাণসীতে সভা করতে গিয়ে রাহুল যদি বিশ্বনাথ মন্দিরে না যান, তা হলে উচ্চবর্ণের মানুষ অসন্তুষ্ট হতে পারেন। তাই রাহুল শেষ পর্যন্ত রাজি হন। একই সঙ্গে বরাবাঁকির দরগায় যাওয়ার সিদ্ধান্তও নেন তিনি। দশ নম্বর জনপথ-ঘনিষ্ঠ কংগ্রেসের ওই নেতার কথায়, উত্তরপ্রদেশে সংখ্যালঘু ভোটের দিকে কংগ্রেস তাকিয়ে ঠিকই, কিন্তু রাহুল চাইছেন, জাতপাতের রাজনীতির ঊর্ধ্বে সব বর্গের মানুষের আস্থা অর্জন করতে।

তাই পৃথক ভাবে উত্তরপ্রদেশের মহিলা ও যুব সম্প্রদায়ের সঙ্গে তিনি বৈঠক করেছেন। বারাণসীর রিকশাচালকদের সঙ্গেও বৈঠক করে সামগ্রিক ভাবে দরিদ্রদের বার্তা দিতে চেয়েছেন তিনি। ওই বৈঠকে গরিবদের ক্ষমতায়নের প্রসঙ্গই তুলে ধরেন রাহুল। তাঁর কথায়, সমাজের আর পাঁচ জন নাগরিকের মতোই রিকশাচালকদেরও সমান মর্যাদা পাওয়ার অধিকার রয়েছে। খাদ্য ও কাজের নিশ্চয়তার পাশাপাশি যেন ন্যূনতম স্বাস্থ্য পরিষেবার জন্যও তাঁদের চিন্তা না করতে হয়। কেন্দ্রের কংগ্রেস সরকার সেটাই সুনিশ্চিত করতে চেয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE