Advertisement
E-Paper

মহাসমুন্দে ‘চন্দু’র হাট, বিতর্কে অজিত জোগী

এ যেন চাঁদের হাট! ভোটের বাজারে গোটা মহাসমুন্দ লোকসভা কেন্দ্র জুড়ে শুধুই ‘চন্দু’র ছড়াছড়ি! ছত্তীসগঢ়ের এই মহাসমুন্দ কেন্দ্র থেকেই এ বারে কংগ্রেস প্রার্থী অজিত জোগী।

তাপস সিংহ

শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০১৪ ০৩:৩৭

এ যেন চাঁদের হাট!

ভোটের বাজারে গোটা মহাসমুন্দ লোকসভা কেন্দ্র জুড়ে শুধুই ‘চন্দু’র ছড়াছড়ি! ছত্তীসগঢ়ের এই মহাসমুন্দ কেন্দ্র থেকেই এ বারে কংগ্রেস প্রার্থী অজিত জোগী। আর তাঁর বিপক্ষে বিজেপি-র প্রার্থী চন্দুলাল সাহু। কিন্তু, তাতে গোলমালটা কোথায়?

গোলমালটা এখানেই যে, এই কেন্দ্রে শুধু যে বিজেপি-র চন্দুলালই রয়েছেন তা নয়। রাতারাতি আবির্ভূত হয়েছেন আরও দশ জন ‘চন্দু’। তাঁদের মধ্যে সাত-সাত জন চন্দুলাল সাহু এবং বাকি তিন জন চন্দুরাম সাহু! এবং তাঁরা প্রত্যেকেই এই লোকসভা কেন্দ্র থেকেই প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ। এবং প্রত্যেকেই ‘নির্দল’! এই নিয়ে শোরগোল, হইহই, অভিযোগের বন্যা এবং অনেকেরই আশঙ্কা, ভোটারদের চরম বিভ্রান্ত হওয়াটা স্রেফ সময়ের অপেক্ষা! এবং এ বারেও বিতর্কের কেন্দ্রে সেই অজিত জোগী!

অভিযোগ উঠেছে, এই ‘মাস্টারস্ট্রোক’ তাঁর ছাড়া অন্য কারও মস্তিষ্কপ্রসূত হতে পারে না।

যেমন, প্রথম চন্দুরাম সাহু। নিবাস: খল্লারি, মহাসমুন্দ। মনোনয়নপত্রে তিনি জানিয়েছেন, তাঁর কাছে নগদ আছে পাঁচ হাজার টাকা এবং ব্যাঙ্কে রয়েছে দু’হাজার। এ ছাড়া তাঁর কাছে আর কিছুই নেই। পড়েছেন পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত। তিনি খেতমজুর।

যেমন, দ্বিতীয় চন্দুরাম সাহু। টুন্ডরা বলৌদাবাজারে বাড়ি। পড়েছেন অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত। তাঁর কাছে যে দু’একর কৃষিজমি আছে তার মূল্য ৬ লক্ষ টাকা। এ ছাড়া তাঁর অস্থাবর সম্পত্তির মূল্য ৪৮ হাজার টাকা। হলফনামা অনুসারে, তিনিও খেতমজুর।

যেমন, তৃতীয় চন্দুরাম। খল্লারি দুরুগপালি নিবাসী এই চন্দুরামও খেতমজুর। তাঁর কাছেও নগদ আছে পাঁচ হাজার টাকা। ব্যাঙ্কের খাতায় দু’হাজার। তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছেন এই ‘চন্দু’।

যেমন, চন্দুলাল। এই চন্দুলাল থাকেন মহাসমুন্দের গড়সিওনিতে। তাঁর সাইকেল মেরামতির দোকান রয়েছে। নগদে ও ব্যাঙ্কে রয়েছে দু’হাজার টাকা করে। পড়েছেন নবম শ্রেণি পর্যন্ত।

এই রকম উদাহরণ আরও অনেক। এই দশ জনের অনেকে তাঁদের নির্বাচনী প্রতীক চিহ্ন সম্পর্কেও ঠিক মতো জানাতে পারেননি। যেমন, এক জনের প্রতীক চিহ্ন বেলুন। কিন্তু তিনি জানতেন তাঁর প্রতীক গরুর গাড়ি। আর বিজেপি-র প্রার্থী চন্দুলাল সাহু? তিনি বি কম, এলএলবি। তাঁর গাড়ি রয়েছে। স্থাবর-অস্থাবর মিলিয়ে তাঁর সম্পত্তির মূল্য কোটি টাকার বেশি।

বিজেপি-র এই ‘চন্দু’র সঙ্গে সঙ্গেই যে ভোটের ময়দানে আরও দশ জন ‘চন্দু’র উত্থান হল? তাঁদের সামলাবেন কী করে বিজেপি নেতৃত্ব? দিশাহারা বিজেপি তাই নির্বাচন কমিশনের কাছে এই ঘটনার তদন্ত দাবি করেছে। মহাসমুন্দ এলাকার বিধায়কেরা, যেমন, রামলাল চৌহান, রূপকুমারী চৌধুরি, চুন্নিলাল সাহু, সন্তোষ উপাধ্যায় এবং গোবর্ধন মানঝি-রা এক যৌথ প্রেস বিবৃতিতে বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের এই বিষয়টি তদন্ত করে দেখা উচিত এবং দোষী প্রমাণিত হলে কংগ্রেস প্রার্থীকে ভোটে দাঁড়ানোর অযোগ্য বলে ঘোষণা করা উচিত। তাঁদের অভিযোগ, ঘটনাচক্রে ওই দশ জন প্রার্থীই একই দিনে তাঁদের মনোনয়নপত্র পেশ করেছেন এবং তার পর থেকেই তাঁরা উধাও হয়ে গিয়েছেন। ফিরেছেন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সময়সীমা শেষ হয়ে যাওয়ার পর। এবং ওই দশ জনের মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জামানত হিসেবে একই সিরিজের নোট জমা দেওয়া হয়েছে বলে তাঁরা অভিযোগে জানিয়েছেন।

যাঁকে ঘিরে এত অভিযোগ সেই অজিত জোগী কী বলছেন? মহাসমুন্দে প্রচারে ব্যস্ত জোগী বুধবার রাতে আনন্দবাজারকে বললেন, “আমি এর মধ্যে কী ভাবে আসছি, বুঝতে পারছি না। প্রত্যেকেরই গণতান্ত্রিক অধিকার আছে নির্বাচনে লড়ার।” কিন্তু বিজেপি প্রার্থীর সঙ্গে এ রকম নামের মিল খুঁজে ভোটপ্রার্থী নামাল কে? তাঁরা নিজেরাও কি আদৌ ভোটে লড়ার ব্যাপারে আগ্রহী? জোগীর পাল্টা প্রশ্ন: “এই কথাগুলো কি আমাকে জিগ্যেস করার? এর উত্তর আমি নয়, যাঁরা দাঁড়িয়েছেন তাঁরাই দিতে পারবেন। আমি এঁদের কাউকেই চিনি না।” বিজেপি যে এ ব্যাপারে তদন্ত

দাবি করছে? প্রচারসভার ফাঁকেই অজিত জোগীর জবাব: “তদন্ত হলে হবে। তা-ও তো গণতান্ত্রিক পদ্ধতির মধ্যেই পড়ে।”

ajit jogi tapas sinha
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy