Advertisement
E-Paper

রাখির গেরিলা হানায় কোণঠাসা ভি কে

রাখির ‘রাখি’-তে কার্যত দিশাহারা হলেন প্রাক্তন সেনাপ্রধান। এক সময়ে অণ্ণা হজারের ঘনিষ্ঠ ছিলেন প্রাক্তন সেনাপ্রধান ভি কে সিংহ। কিন্তু পরে নরেন্দ্র মোদীর সভাতেও উপস্থিত থাকতে দেখা যায় তাঁকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০১৪ ০৮:৪২

রাখির ‘রাখি’-তে কার্যত দিশাহারা হলেন প্রাক্তন সেনাপ্রধান।

এক সময়ে অণ্ণা হজারের ঘনিষ্ঠ ছিলেন প্রাক্তন সেনাপ্রধান ভি কে সিংহ। কিন্তু পরে নরেন্দ্র মোদীর সভাতেও উপস্থিত থাকতে দেখা যায় তাঁকে। তখনই প্রাক্তন সেনাদের প্রতিনিধি হিসেবে ভি কে-র বিজেপিতে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনার কথা শোনা গিয়েছিল। সম্প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে অণ্ণার ঘনিষ্ঠতা বেড়েছে। পাশাপাশি অণ্ণা শিবিরের সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়েছেন ভি কে। আজ দিনক্ষণ দেখে দলবল নিয়ে একেবারে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। কিন্তু বলিউড অভিনেত্রী রাখি সবন্তের গেরিলা আক্রমণের আজ কার্যত তল পাননি প্রাক্তন সেনাপ্রধান।

ভি কে সিংহ বিজেপি সদর দফতরে পৌঁছনোর কিছু ক্ষণের মধ্যেই দলে যোগ দেবেন, এই আবদার নিয়ে সেখানে আসেন রাখি। বুঝিয়ে-সুঝিয়ে এ যাত্রায় কোনও ভাবে তাঁর বিজেপিতে যোগদান ঠেকানো গিয়েছে। কিন্তু উপস্থিত প্রাক্তন সেনানীদের রাখি পরিয়ে দিয়ে প্রচারের আলো শুষে নেন রাখিই। দিল্লিতে ঘাঁটি গেড়ে বসে রয়েছেন আর এক অভিনেত্রী মহিমা চৌধুরী। বিজেপি সভাপতি রাজনাথ সিংহের ডাক পেলেই যোগ দেবেন দলে।

নয়াদিল্লিতে বিজেপি-র সদর দফতরে ভি কে সিংহ ও রাখি সবন্ত। শনিবার। ছবি: পিটিআই।

এখন অধিকাংশ প্রাক্-নির্বাচনী সমীক্ষায় এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। ফলে অতিথিদের কড়া নাড়াও বেড়ে গিয়েছে দিল্লির ১১ অশোক রোডের বিজেপি সদর দফতরে। দশ বছর আগে যে বাপ্পি লাহিড়ী ছিলেন সনিয়া গাঁধীর গুণগ্রাহী, হঠাৎই কয়েক সপ্তাহ আগে তিনি বিজেপিতে যোগ দিয়ে চমকে দেন সকলকে।

রাজ্য বিজেপিতে যোগ দিয়ে ইতিমধ্যেই লোকসভার টিকিটও পেয়েছেন পি সি সরকার, জর্জ বেকারেরা। তার পরে আজ দিল্লিতে সরকারি ভাবে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার কথা ছিল প্রাক্তন সেনাপ্রধান ভি কে সিংহের। এ দিন কয়েকশো সমর্থক ও প্রাক্তন সেনাকে নিয়ে বিজেপিতে যোগ দিতে আসেন তিনি। কিন্তু রাখির আচমকা হানায় প্রচারের আলো তাঁর উপর থেকে সরে যায়। শেষে ভি কে-কে রক্ষা করেন রাজনাথই। আলাদা বৈঠক করে তিনি রাখিকে জানা ন, এখন তাঁকে দলে নেওয়া সম্ভব নয়।

ব্যর্থ মনোরথ হয়ে ফিরে যান রাখি সবন্ত। জানিয়ে গিয়েছেন, ফের আসবেন। প্রাক্তন সেনাপ্রধান অবশ্য দলে যোগ দিয়েছেন।

ভোট আসতেই গ্ল্যামার জগতের প্রতিনিধিদের রাজনীতির অলিন্দে খুঁজে পাওয়ার ঘটনা নতুন নয়। গত লোকসভা নির্বাচনের আগে হাওয়া কংগ্রেসের দিকে থাকায় চিত্রতারকা রাজ বব্বর কিংবা প্রাক্তন ভারতীয় অধিনায়ক আজহারউদ্দিনকে টিকিট দিয়েছিল কংগ্রেস। এ বার কংগ্রেসের পরিস্থিতি অনেকটাই দুর্বল। উপরন্তু অধিকাংশ নির্বাচনী সমীক্ষাই বলছে মোদীর নেতৃত্বে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হতে চলেছে বিজেপি। তার ফলে অতিথিরাও এ বার ঝুঁকেছেন বিজেপির দিকে।

অনেকের মতে, গ্ল্যামার জগৎ তথা অন্য ক্ষেত্রের প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিদের টিকিট দেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল ও আম আদমি পার্টি (আপ)। গত লোকসভা নির্বাচনে শতাব্দী রায়, তাপস পাল কিংবা হালে মিঠুন চক্রবর্তীদের সংসদে পাঠিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আবার লোকসভা ভোটে মেধা পাটকর, রাজমোহন গাঁধী, বিশিষ্ট সাংবাদিকদের টিকিট দিয়েছে আপ।

রাজনৈতিক শিবিরের মতে, অনেক সময়ে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে রাজনৈতিক ছাতা খোঁজেন বিশিষ্টরা। আবার জনমানসে পেশাদার রাজনীতিকদের চেয়ে অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের ভোটে দাঁড় করাতে আগ্রহী হয় দলগুলিও।

সব সময়ে দলে যোগ দেওয়ারও প্রয়োজন হয় না। প্রিয়া দত্তকে ভোট দেবেন বলে জানালেও নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ঘুড়ি ওড়াতে আপত্তি করেননি সলমন খান। এ ক্ষেত্রে বিজেপি যে সলমনের জনপ্রিয়তা কাজে লাগিয়েছে তা ঘরোয়া আলোচনায় মানতে আপত্তি নেই দলের নেতাদের। এক বিজেপি নেতার কথায়, “এতে মানুষের মধ্যে সেই রাজনৈতিক দল ও নেতার প্রতি বিশ্বাসযোগ্যতা জন্মায়। আর সলমন খানের মতো জনপ্রিয় সংখ্যালঘু অভিনেতা মোদীর পাশে দাঁড়ালে নির্দিষ্ট ভোটব্যাঙ্কের কাছে বার্তা পৌঁছনো সম্ভব হয়।”

বিশিষ্ট জন ও রাজনীতি, গ্ল্যামার ও সংসদের মিতালি তা-ই চলবেই।

former army general vk singh rakhi sawant bjp joining rajnath singh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy