Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

বালাকোটে জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস! ধন্দে রয়টার্স এবং বহু বিদেশি কাগজ

দুই পশ্চিমি নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’-এর প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন, বালাকোটে যেখানে ভারতীয় বিমান বোমা ফেলেছে, সেখানে সত্যিই জঙ্গি ঘাঁটি ছিল। কিন্তু ২০০৫-এ ভয়ঙ্কর ভূমিকম্পের পরে বিদেশি ত্রাণ সংস্থাগুলি ওই অঞ্চলে যাতায়াত শুরু করে।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:৫৬
Share: Save:

পাকিস্তানের বালাকোটে মঙ্গলবারের বিমান অভিযানে জঙ্গি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ধ্বংস হয়ে অন্তত ৩৫০ জঙ্গি নিহত হওয়ার দাবি পাকিস্তান মানেনি। নামী আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলিও কার্যত সে দাবি স্বীকার করছে না।

সংবাদমাধ্যমের স্থানীয় প্রতিনিধিদের কালই বালাকোটে নিয়ে যান পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ। ইসলামাবাদ থেকে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের এক দল সাংবাদিককে বুধবার বালাকোটের ঘটনাস্থলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

দুই পশ্চিমি নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’-এর প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন, বালাকোটে যেখানে ভারতীয় বিমান বোমা ফেলেছে, সেখানে সত্যিই জঙ্গি ঘাঁটি ছিল। কিন্তু ২০০৫-এ ভয়ঙ্কর ভূমিকম্পের পরে বিদেশি ত্রাণ সংস্থাগুলি ওই অঞ্চলে যাতায়াত শুরু করে। ধরা পড়ে যাওয়ার ভয়েই জঙ্গিরা বালাকোটের এই এলাকা ছেড়ে অন্য কোথাও সরে যায়। সুতরাং ভারতীয় বোমায় ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা বেশ কম বলে তাদের ধারণা।

বিশ্বে বিভিন্ন সার্জিকাল স্ট্রাইক নিয়ে প্রশ্নোত্তরে যোগ দিন

আরও পড়ুন: শত্রু ট্যাঙ্ককে এক নিমেষে গুঁড়িয়ে দিতে পারে, ভারতের এই ‘নাগ’

সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানাচ্ছে, ‘ভারতীয় বিমান বোমা ফেলার পরে সে দেশে উৎসব পালন করা হচ্ছে। কিন্তু এই হামলায় বিশেষ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে মনে হয় না। কারণ স্থানীয় গ্রামবাসীরা এই আমাদের এবং অন্য স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলিকে জানিয়েছেন, রাতে চার-পাঁচটি বোমা বিস্ফোরণের শব্দ তাঁরা শুনেছেন। তাতে কয়েকটি বাড়িতে ফাটল ধরেছে। এক জন সামান্য জখমও হয়েছেন। কিন্তু ফাঁকা মাঠে বোমাগুলি পড়ায় বড় কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।’ রয়টার্সের এই প্রতিবেদন লন্ডনের ‘দ্য গার্ডিয়ান’, ‘ডেলি টেলিগ্রাফ’-সহ বেশ কিছু সংবাদপত্র প্রকাশ করেছে। সকালেই ঘটনাস্থল ঘুরে এসেছিলেন স্থানীয় যুবক মহম্মদ আজমল। রয়টার্সের প্রতিনিধিকে তিনি জানিয়েছেন, ‘‘বেশ কিছু গাছ পড়ে গিয়েছে। ফাঁকা মাঠে চারটি বড় বড় গর্তের দাগে প্রমাণ, বোমাগুলি ওখানেই পড়েছে।’’

আরও পড়ুন: ভারতের মিরাজ ২০০০ বনাম পাকিস্তানের এফ ১৬, এগিয়ে কোন যুদ্ধবিমান?

‘ওয়াশিংটন পোস্ট’-ও জানিয়েছে, ‘স্থানীয় থানার পুলিশ ও বাসিন্দারা নাম গোপনের শর্তে জানিয়েছেন, বালাকোট শহরের কয়েক কিলোমিটার বাইরে একটি পাহাড়ি এলাকায় ভারতীয় বিমান থেকে বোমা ফেলা হয়েছে। কিন্তু সেখানে মানুষ মারা যাওয়ার কোনও চিহ্ন তাঁরা দেখেননি।’ ভারতীয় বিমান সম্ভবত নিশানা ভুল করেছে বলে মন্তব্য করেছে ‘গাল্ফ নিউজ’।

গাল্ফ নিউজ জানিয়েছে, ‘মাদ্রাসার থেকে এক কিলোমিটার দূরে পড়ে বোমা। তবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারেনি তারা। ফিদা হুসেইন শাহ নামে এক কৃষিজীবী বলেন ভারতের থেকে ছুটে সামরিক অস্ত্রের কিছু অংশ পাইন গাছে আটকে গিয়েছিল। বাড়িতে এক ব্যক্তি ঘুমাচ্ছিলেন। সেই সময় তাঁর জানলার কাচ ভেঙে যায়।’

দ্য গার্ডিয়ান বলছে, ‘‘এই অভিযানের পর ভারতে উৎসব শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে এটা স্পষ্ট নয় যে, যুদ্ধবিমান মারাত্মক কোনও ক্ষতি আদৌ হয়েছে কি না। পাকিস্তানের স্থানীয় মিডিয়া বলেছে, বালাকোটের বাসিন্দাদের কথায়, রাতের দিকে সেদিন তাঁরা বেশ কিছু বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন, এর ফলে বেশ কিছু বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

India-Pakistan Conflict Newspaper Balakot
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE