Advertisement
E-Paper

‘এই হত্যার অজুহাত হতে পারে না’! নিহত দীপুর পরিবারের ‘দায়িত্ব’ নিল ইউনূস সরকার, বাড়ি গিয়ে বিচারেরও আশ্বাস

দীপুর বাবা রবিচন্দ্র দাস পুত্রের হত্যার বিচার চেয়েছেন। রোজগেরে পুত্রকে হারিয়ে তাঁদের এখন কী অবস্থা, সে কথাও উপদেষ্টার কাছে তুলে ধরেছেন।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৩:৪৬
মুহাম্মদ ইউনূস।

মুহাম্মদ ইউনূস। — ফাইল চিত্র।

ময়নমনসিংহে নিহত দীপু দাসের পরিবারের দায়িত্ব নেবে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। এ কথা জানিয়েছেন সরকারের এক উচ্চপদস্থ উপদেষ্টা। ২৫ বছরের দীপুকে কয়েক জন পিটিয়ে খুন করে তাঁর দেহ পুড়িয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ। মঙ্গলবার বাংলাদেশের শিক্ষা উপদেষ্টা সিআর আবরার নিহতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান। সেখানে গিয়েই কাপড়কলের শ্রমিক দীপুর খুনের ঘটনাকে ‘পাশবিক অপরাধ’ বলে উল্লেখ করেন তিনি। এ-ও জানান, এই অপরাধের কোনও অজুহাত হতে পারে না।

মঙ্গলবার দীপুর পরিবারের সঙ্গে দেখা করার পরে আবরার বলেন, ‘‘দীপু দাসের সন্তান, স্ত্রী এবং বাবা-মায়ের দেখভালের দায়িত্ব নিয়েছে রাষ্ট্র। ওই ঘটনা হল পাশবিক অপরাধ, যার কোনও অজুহাত থাকতে পারে না।’’ তিনি জানান, নিহতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করার আগে ইউনূসের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা ওই পরিবারকে সমবেদনা জানিয়েছেন।

‘প্রথম আলো’ সূত্রে জানা গিয়েছে, দীপুর বাবা রবিচন্দ্র দাস পুত্রের হত্যার বিচার চেয়েছেন। রোজগেরে পুত্রকে হারিয়ে তাঁদের এখন কী অবস্থা, সে কথাও উপদেষ্টার কাছে তুলে ধরেছেন। তাঁদের পরিবারের দায়িত্ব নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ইউনূস সরকারের সংবাদমাধ্যম শাখার তরফে মঙ্গলবার বিবৃতি দিয়ে বলা হয়, ‘‘অভিযোগ, রটনা বা বিশ্বাসের প্রভেদ কখনও হিংসার অজুহাত হতে পারে না। আইন নিজের হাতে নেওয়ার অধিকার কারও নেই।’’ নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিচারের আশ্বাসও দিয়েছে সরকার। উপদেষ্টা আবরার বলেন, ‘‘তদন্ত চলছে। যারা দায়ী, যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের বিচারের অধীনে আনা হবে। এ ধরনের হিংসার বিরুদ্ধে আইন তার পূর্ণ শক্তি প্রয়োগ করবে।’’

আবরার এ-ও জানিয়েছেন, কিছু দুষ্কৃতী বিভাজন উস্কে দিচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘‘ধর্ম বা পরিচয় নির্বিশেষে সব নাগরিকের নিরাপত্তা ও মর্যাদা রক্ষায় রাষ্ট্র অঙ্গীকারবদ্ধ। একই সঙ্গে রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সমাজ একসঙ্গে কাজ করবে। নিশ্চিত করবে, যাতে হিংসা বরদাস্ত করা না হয়। বর্তমানে কিছু দুষ্কৃতকারী গোষ্ঠী বিভাজন সৃষ্টি করে অস্থিরতা উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমাদের এই গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে হবে।’’

দীপু হত্যার পরে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত। সোমবার রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজ়ারিককে প্রশ্ন করা হয় বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে। গত কয়েক দিনে সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণের ঘটনায় মহাসচিবের অবস্থান জানতে চাওয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খুলেছে রাষ্ট্রপুঞ্জও। তারা জানিয়েছে, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক হিংসার ঘটনা নিয়ে তারা খুবই উদ্বিগ্ন। গুতেরেসের মুখপাত্র বলেন, ‘‘বাংলাদেশেই হোক বা অন্য কোনও দেশে— যাঁরা ‘সংখ্যাগরিষ্ঠ’ সম্প্রদায়ের নন, তাঁদেরও নিরাপদ বোধ করা উচিত। প্রত্যেক বাংলাদেশিরই নিরাপদ বোধ করা উচিত। আমরা বিশ্বাস করি (অন্তর্বর্তী) সরকার প্রত্যেক বাংলাদেশিকে নিরাপদে রাখতে সাধ্যমতো সব পদক্ষেপ করবে।”

বাংলাদেশের গণআন্দোলনের অন্যতম মুখ তথা ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গত ১২ ডিসেম্বর গুলি করা হয়। ১৮ ডিসেম্বর তাঁর মৃত্যু হয়। তার পরেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বাংলাদেশ। ময়মনসিংহে পিটিয়ে হত্যা করা হয় দীপুকে। ঢাকায় সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ছায়ানটে ভাঙচুর চালানো হয়। দীপুর মৃত্যুতে ঘরে-বাইরে প্রশ্নের মুখে পড়ে ইউনূস সরকার। এ বার সেই দীপুর পরিবারের দায়িত্ব নেওয়ার কথা ঘোষণা করল তারা।

Bangladesh Unrest
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy