Advertisement
E-Paper

TISSস্টার

টাটা ইনস্টিটিউট অব সোশাল সায়েন্সেস-এ পড়তে গেলে দিতে হয় অ্যাডমিশন টেস্ট। কী ভাবে নেবে তার প্রস্তুতি, জানাচ্ছেন ক্যাটালিস্ট লার্নিং সার্ভিসেস-এর কর্ণধার সৌরভেশ্বর সেন।

সৌরজিৎ দাস

শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৩ ২৩:৫৪

টিআইএসএস-নেট পরীক্ষা কবে হয়? পরীক্ষায় কী থাকে? যোগ্যতা কী? কবে বের হয় এর বিজ্ঞপ্তি?

টিআইএসএস-এর পুরো ভর্তির প্রক্রিয়াটি তিনটি ভাগে বিভক্ত এক, টিআইএসএস ন্যাশনাল এন্ট্রান্স টেস্ট (টিআইএসএস-নেট, ১০০ নম্বর); দুই, প্রি-ইন্টারভিউ টেস্ট (পিআইটি, ৫০ নম্বর) আর শেষে, পার্সোনাল ইন্টারভিউ (পিআই, ৭৫ নম্বর)। প্রতি বছর হয় মাঝ ডিসেম্বর অথবা জানুয়ারির মাঝামাঝি এক বারই হয় এই পরীক্ষা। মূলত এখানকার স্নাতকোত্তর কোর্সে ভর্তি হতেই ছাত্রছাত্রীদের এই এগজামিনেশন দিতে হয়। টিআইএসএস-নেট’এ উত্তীর্ণ হতে পারলে তবেই পরের রাউন্ডগুলিতে যাওয়ার সুযোগ মেলে। পরীক্ষার ক্ষেত্রে এমনিতে যোগ্যতা, যে কোনও বিষয়ে গ্র্যাজুয়েট। যদিও এখানে কোনও বয়সসীমা নেই। কর্মরতরাও এই পরীক্ষা দিতে পারেন। তবে কাজের অভিজ্ঞতা আছে বলে যে পার্সোনাল ইন্টারভিউ-তে কেউ আলাদা করে ওয়েটেজ পাবেন, এমন কিন্তু নয়।

এখানে যে সমস্ত স্নাতকোত্তর কোর্সগুলি রয়েছে, তাদের মধ্যে থেকে ছাত্ররা র্যাঙ্কিং অনুসারে তিনটি বিষয় বেছে নিতে পারে। ধরো, তুমি প্রথমেই বাছলে হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড লেবার রিলেশন্স, দুইয়ে রাখলে ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ আর তিনে, মিডিয়া অ্যান্ড কালচারাল স্টাডিজ। এ বার পরীক্ষায় এই প্রত্যেক বিষয়ের জন্য কাট-অফ নির্ধারণ করবে প্রতিষ্ঠান। তুমি নির্ধারিত কাট-অফ পেলে তবেই সেই বিষয়ের জন্য কল পাবে পিআইটি এবং পিআই-এর জন্য। নেট-এর রেজাল্ট বেরিয়ে পিআইটি এবং পিআই-এর জন্য কল পেতে ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ লেগে যায়। এই দুটো রাউন্ড কিন্তু একসঙ্গেই হয়।

টিআইএসএস-এর মোট চারটি ক্যাম্পাস রয়েছে। মুম্বই, হায়দরাবাদ, তুলজাপুর এবং গুয়াহাটি। ছেলেমেয়েরা যখন এখানে অ্যাপ্লাই করে, তখন তারা সর্বাধিক দুটো ক্যাম্পাস পর্যন্ত আবেদন জানাতে পারবে। সাধারণত, অগস্ট-এর শেষ কিংবা সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে টিআইএসএস-নেট পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি বের হয়। আবেদন করা যায় নভেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত।

পরীক্ষার ক্ষেত্রে যে বিভিন্ন সেকশনগুলি রয়েছে, সেগুলিতে কী ধরনের প্রশ্ন থাকে? এর জন্য কী ভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে?

টিআইএসএস-নেট’এর জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার সময় মনে রাখতে হবে যে এই পরীক্ষার ধাঁচ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের এম এ পরীক্ষার তুলনায় অনেকটা আলাদা। জেএনইউ বা দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের এম এ-তে ভর্তির জন্য যে পরীক্ষা হয়, সেগুলি মূলত বিষয়ভিত্তিক। টিআইএসএস-নেট কিন্তু ছাত্রের আই কিউ-এর পাশাপাশি তার এমপ্লয়েবিলিটি স্কিল (যে কাজের জন্য তাকে নেওয়া হবে সে বিষয়ে সে কতটা দক্ষ) যাচাই করার ওপর বিশেষ জোর দেয়। এদের নেট পরীক্ষার ধরন দেখলেই সেটা বোঝা যায়। যেমন, নেট-এর মোট ১০০ নম্বরের মধ্যে থাকে ৩৫ নম্বরের অ্যানালিটিকাল অ্যান্ড নিউমেরিকাল এবিলিটি (এ এন এ), ৩৫ নম্বরের ল্যাংগোয়েজ এবিলিটি (এল এ) এবং ৩০ নম্বরের জেনারেল অ্যাওয়ারনেস-এর (জি এ) প্রশ্ন।

এ বার এ এন এ, এল এ এবং জি এ-তে কী কী থাকে সেই বিষয়ে আলোচনা করা যাক। অ্যানালিটিকাল অ্যান্ড নিউমেরিকাল এবিলিটি-তে থাকে অংক, লজিকাল রিজনিং এবং ডেটা ইন্টারপ্রিটেশন থেকে প্রশ্ন। ক্যাট বা অন্যান্য অ্যাপটিটিউড টেস্ট-এ ক্লাস টেন পর্যন্ত সি বি এস ই-র যে অংকের সিলেবাস ফলো করে, এখানেও তাই-ই করা হয়। প্রশ্ন আসে বেসিক পাটিগণিত, বীজগণিত, জ্যামিতি ইত্যাদি থেকে। অংকের প্রশ্ন থাকে ডেটা ইন্টারপ্রিটেশন-এও। এখানে হয়তো বিভিন্ন পরিসংখ্যান অথবা কোনও চার্ট/গ্রাফ দিয়ে কোনও নির্দিষ্ট ক্ষেত্রের পার্সেন্টেজ বার করতে বলা হয়। ডেটা ইন্টারপ্রিটেশনের প্রশ্নের মাধ্যমে সাধারণত ছেলেমেয়েদের অ্যানালিটিকাল স্কিল-এর ক্ষমতা দেখে নেওয়া হয়। ল্যাংগোয়েজ এবিলিটি-তে থাকে গ্রামার, রিডিং কমপ্রিহেনশন, ভার্বাল রিজনিং এবং ভোকাবুলারি। সেনটেন্স এরর কারেকশন, ফিল ইন দ্য ব্ল্যাঙ্কস-এর মতো নানান প্রশ্ন দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে ইংরেজি গ্রামারের বেসিক জ্ঞানের পাশাপাশি তোমার ভোকাবুলারি ঠিকঠাক থাকতে হবে। এমনিতে এই ধরনের প্রশ্নের জন্য হাই স্কুল সিলেবাস ফলো করলেই হবে। রেন অ্যান্ড মার্টিন-এর বই থেকে ভাল করে প্র্যাকটিস করতে পারো। ল্যাংগোয়েজ এবিলিটিতে একটা বড় অংশ থাকে রিডিং কমপ্রিহেনশন। এখানে ১২-২০ লাইনের একটা ছোট প্যাসেজ দেওয়া হয়। প্রশ্ন থাকে দুটো থেকে তিনটে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে সোজা প্রশ্ন থাকে, আবার কোথাও কোথাও থাকে অনুমাননির্ভর (ইনফারেনশিয়াল) প্রশ্ন। কোয়ান্টিটেটিভ অ্যাপটিটিউড ও ভার্বাল এবিলিটি বাড়িতে প্র্যাকটিস করতে এস চন্দ পাবলিকেশন-এর আর এস অগ্রবাল-এর বইগুলি দেখতে পারো। আর ভোকাবুলারি বাড়ানোর জন্য কাছে রাখতে পারো নরম্যান লুইস-এর ‘ওয়ার্ড পাওয়ার মেড ইজি’। বাকি রইল জেনারেল অ্যাওয়ারনেস। এখানে মূলত কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন নীতি এবং সামাজিক প্রকল্পের ওপর প্রশ্ন থাকে। এ ছাড়া, আসে ভারতীয় সংবিধান থেকে প্রশ্নও। সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প ও নীতির সম্বন্ধে অনেক জেনারেল নলেজ-এর বইতেই বিস্তারিত দেওয়া থাকে। বিশেষত ব্যাঙ্কিং বা সিভিল সার্ভিসের পত্রিকাতে তো এগুলি প্রায়শই দেয়। সেগুলি পড়ো। সঙ্গে এই ধরনের প্রকল্পের সম্বন্ধে নিজে নিজে লেখার অভ্যেসও করতে হবে। কাজে লাগবে।

টিআইএসএস-নেট’এর পর থাকে প্রি-ইন্টারভিউ টেস্ট (পি আই টি) ও পার্সোনাল ইন্টারভিউ (পি আই)। এখানে কী থাকে?

টিআইএসএস নেট-এর প্রথম ধাপটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আগেই বলেছি এখানে প্রত্যেকটি বিষয়ের জন্য একটি নির্দিষ্ট কাট-অফ মার্ক রাখা হয়। সেই কাট-অফ নম্বর পেরোতে পারলে তবেই ছাত্রটি পরের রাউন্ডদুটোর জন্য কোয়ালিফাই করতে পারবে। পি আই টি-তে হয় গ্রুপ ডিস্কাশন (জি ডি) থাকে, বা একটা রিট্ন টেস্ট দিতে হয়। যে সব ছাত্রছাত্রী টিআইএসএস মুম্বই-এর যে কোনও সোশাল ওয়ার্ক প্রোগ্রামের জন্য আবেদন জানায়, তাদের পি আই টি-তে জি ডি থাকে। বাকি আর সমস্ত প্রোগ্রামের ক্ষেত্রে রিট্ন টেস্ট নেওয়া হয়। এই পি আই টি-তে থাকে ৫০ নম্বর। জি ডি-তে সাধারণত কোনও সামাজিক বিষয় টপিক হিসেবে দেওয়া হয়। এর মাধ্যমে যাচাই হয়ে যায় ছাত্রের কমিউনিকেশন স্কিল, পিপ্ল ম্যানেজমেন্ট স্কিল তথা নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা। অন্য দিকে, রিট্ন টেস্ট-এ থাকে প্রবন্ধ ও কেস স্টাডি। প্রবন্ধতে ধরো জওহরলাল নেহরু ন্যাশনাল আরবান রিনিউয়াল মিশন (জেএনএনইউআরএম) স্কিম-এর একটা বিশদ পর্যালোচনা করতে বলা হল প্রকল্পটি কতটা সফল হয়েছে, কোন কোন ক্ষেত্রে গলদ রয়েছে বা একে আরও কতটা পরিশীলিত করা যাবে। আবার, কেস স্টাডি-তে কোনও একটি নির্দিষ্ট ঘটনা দেওয়া হল। কলকাতার যশোর রোডে রাস্তাঘাটের অবস্থা ভীষণ খারাপ। ছাত্রকে প্রশ্ন করা হল, আরবান পলিসি বিভাগের অধিকর্তা হিসেবে তোমার কী করণীয়, কী ভাবে এই সমস্যার সমাধান করা যাবে। এই ধরনের প্রশ্ন দিয়ে দেখা হয় যে ছাত্রটির এই বিষয়ে ভাবনা কী। সরকার এই সব ক্ষেত্রে কী ধরনের সমাধান গ্রহণ করতে পারে, সেই বিষয়ে তার কোনও জ্ঞান আছে কি না।

পিআইটি-র পর পরই একই দিনে পার্সোনাল ইন্টারভিউও হয়ে যায়। নম্বর থাকে ৭৫। এখানে অধিকাংশ প্রশ্নই থাকে হিউম্যান রিসোর্স সংক্রান্ত। যেমন, তুমি কেন টিআইএসএস-এ পড়তে চাও, পাঁচ বছর পর নিজেকে কোথায় দেখতে চাও, তুমি যে কোর্সটা পড়তে এসেছ, সেটা থেকে তুমি সমাজের কী ভাল করতে পারবে ইত্যাদি। তোমার চিন্তাভাবনা কতটা স্বচ্ছ, সেটাই পরখ করতে চান প্রশ্নকর্তারা। পি আই-তে প্রশ্নের ধরন কিন্তু অনেকটাই আগের দুটি রাউন্ডের ওপর নির্ভর করে। যদি দেখা যায় যে সেই রাউন্ডগুলিতে ছাত্রটি বেশ ভাল স্কোর করেছে তা হলে এখানে তাকে মোটামুটি সোজাই প্রশ্ন করা হয়।

এই বার সব মিলিয়ে তৈরি হয় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের লিস্ট। অর্থাৎ, ১০০+৫০+৭৫=২২৫। প্রথমেই টিআইএসএস নেট-এ বিভিন্ন বিষয়ে কাট-অফ মার্ক রেখে কিছুটা স্ক্রিনিং করা হয়ে গিয়েছে। এ বার ফাইনাল স্ক্রিনিং হবে সব মিলিয়ে। এখানেও প্রত্যেকটি বিষয়ের জন্য একটা নির্দিষ্ট মার্কস ধরা থাকে। জাস্ট উদাহরণ হিসেবে ধরো, সোশাল অন্ত্র্প্রেনরশিপ-এর জন্য ২২৫-এ ১৫০, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ-এ ১৬৫, মিডিয়া অ্যান্ড কালচার স্টাডিজ-এ ১৬০ ইত্যাদি। সেগুলি টপকালে তুমি হয়ে যাবে ‘টিসিয়ান’।

এই পরীক্ষাও তো ক্যাট, জিআরই-র মতো কম্পিউটার বেস্ড টেস্ট। ক্যাট বা জিআরই তে যেমন পরীক্ষার ক্ষেত্রে হরেক নিয়ম রয়েছে (যেমন জিআরই সম্ভবত অ্যাডাপটিভ টেস্ট বা ক্যাট-এ নির্দিষ্ট সময়ে একটা সেকশন শেষ করার পরই অন্য সেকশন করা যায়)। এখানে তেমন কোনও নিয়ম আছে কি?

হ্যাঁ, ক্যাট বা জিআরই-র মতো এটিও অনলাইন টেস্ট। কিন্তু এখানে তেমন কোনও বাঁধাধরা নিয়ম থাকে না। ক্যাট-এর মতো নির্দিষ্ট কোনও বিভাগ না-ও থাকতে পারে। প্রশ্ন আসতে পারে মিলিয়ে-মিশিয়ে। তা ছাড়া, এখানে এ বছর পর্যন্ত নেগেটিভ মার্কিং-এর ব্যাপার নেই। ভুল উত্তর করলে নম্বর কাটা যাবে না।

টিআইএসএস-নেট’এ বেশির ভাগ ছাত্রই আসে হিউম্যানিটিজ বা আনুষঙ্গিক ক্ষেত্র থেকে। যাদের অনেকেরই হয়তো আগে কোনও অনলাইন টেস্ট দেওয়ার অভিজ্ঞতা থাকে না। টিআইএসএস-এর অনলাইন টেস্ট দিতে এসে তাই অনেকেই বেশ অসুবিধেয় পড়ে। এর জন্য ছাত্রছাত্রীদের রীতিমত প্রস্তুতি নিতে হয় আগে থেকে। যেমন ধরো, অনলাইন কোনও একটা রিপোর্ট পড়লে। এ বার উলটো দিকে ফিরে সেটার একটা সিনপসিস লিখে ফেললে। তোমার সিনপসিস লেখার টাইমটা নোট করলে। এই ভাবে ক্রমাগত নানা রকম প্র্যাকটিস-এর মাধ্যমে ছেলেমেয়েরা নিজেদের এই পরীক্ষার জন্য রেডি হতে পারে। এই সব পরীক্ষার জন্য যে সব কোচিং সেন্টার আছে, সেগুলির সাহায্য নিতে পারো। যেমন, আমাদের ক্যাটালিস্ট-এ আমরা চেষ্টা করি ছাত্রছাত্রীদের সব রকম ভাবে প্রস্তুত করতে, যাতে তাদের অনলাইন পরীক্ষা দিতে কোনও অসুবিধে না হয়। তা ছাড়া, টিআইএসএস-নেট’এর ওয়েবসাইটেও প্রতি বছর একটা অনলাইন পোর্টাল থাকে, যেটায় এই অনলাইন পরীক্ষা সম্বন্ধে অনেক কিছু দেওয়া থাকে। সেটা দেখলেও এর সম্বন্ধে অনেক কিছু জানতে পারবে ছেলেমেয়েরা।

এখন তো অনেক ছেলেমেয়েই গ্র্যাজুয়েশন করে ক্যাট, ম্যাট, জ্যাট দিয়ে এমবিএ পড়তে চলে যায় বা কোনও পেশাদার কোর্সে যোগ দেয় ভাল চাকরি পেতে। সে ক্ষেত্রে টিআইএসএস-এর স্নাতকোত্তর কোর্সগুলির গুরুত্ব কতটা?

টিআইএসএস-এ যে স্নাতকোত্তর কোর্সগুলি রয়েছে সেগুলি এমবিএ-র মতো পেশাদারি কোর্স নয় ঠিকই। কিন্তু আমার মতে, তাতেও এগুলির গুরুত্ব কোনও অংশে কমে যায় না। কারণ এখানকার পড়াশোনায় থিয়োরিটিকাল স্টাডি-র সঙ্গে ফিল্ড ওয়ার্ক এবং ইন্ডাস্ট্রি ইন্টার্নশিপও করানো হয়, যাতে ছেলেমেয়েরা যা পড়ছে তা হাতে-কলমে শিখতে পারে। ছাত্রদের সঙ্গে ইন্ডাস্ট্রির এই ইন্টারঅ্যাকশন আগামী দিনে বিশেষ কাজে দেয়। ইন্টার্নশিপের মাধ্যমে সংস্থাগুলিও আগাম দেখে ও বুঝে নিতে পারে, কাদের কাদের তারা পরে রিক্রুট করতে পারবে। যেমন ধরো, অনেক ইংরেজি-র ছাত্র এখানে মিডিয়া অ্যান্ড কালচার স্টাডিজ নিয়ে পড়াশোনা করে। পরে অনেকেই যোগ দেয় বিবিসি ওয়ার্ল্ড নিউজ, রেডিয়ো ওয়ান, রেড চিলিজ এন্টারটেনমেন্ট, এনডিটিভি, সিএনএন আইবিএন-এর মতো নামজাদা সংস্থায়। তার পর যারা ধরো সোশাল ওয়ার্ক নিয়ে পড়ছে, তারা কাজ পায় ইউনেসকো, ক্রাই, ফ্যামিলি প্ল্যানিং অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া-র মতো জায়গায়। ফলে বুঝতেই পারছ, অপেশাদার কোর্স হলেও কেরিয়ার গড়ার পরিধি এখানে নেহাত কম নয়। আবার উচ্চশিক্ষার ইচ্ছে থাকলে এখানে এমএ-র পর এম ফিল, পিএইচ ডি করতে পারে ছেলেমেয়েরা।

তা ছাড়া, এখানে পড়ার খরচ এমবিএ-র মতো নয়। এখন ভাল জায়গায় এমবিএ পড়তে হলে তোমাকে কমপক্ষে দশ-পনেরো লাখ টাকা খরচ করতেই হয়। টিআইএসএস-এ কিন্তু এমএ পড়তে অত খরচ লাগে না। সব মিলিয়ে পুরো কোর্সের জন্য হয়তো সর্বাধিক আড়াই লাখ টাকা দিতে হতে পারে।

কখন থেকে টিআইএসএস-নেট’এর জন্য প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করা উচিত?

আমার মতে, আইডিয়ালি ছেলেমেয়েরা যখন কলেজে দ্বিতীয় বর্ষে পড়ছে, তখন থেকে। কম করে এক বছরের প্রস্তুতি চাই। কেউ যদি পরের বছর টিআইএসএস-নেট দিতে চায়, তার উচিত মোটামুটি সেপ্টেম্বর-অক্টোবর থেকেই পড়াশোনা শুরু করে দেওয়া যাতে পরের বছরের অক্টোবর-নভেম্বরের মধ্যে সে এই পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত হয়ে যায়। কারণ, এর মধ্যে ছেলেমেয়েদের নিজেদের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা ও পরীক্ষা থাকে। তার জন্য সময় দিতে হবে। সেই কারণে এই পরীক্ষার জন্য নিয়ম করে প্রস্তুতি নিতে হবে। চেষ্টা করবে টিআইএসএস-নেট’এর এক থেকে দেড় মাস আগেই পুরো সিলেবাস শেষ করে রাখতে। এবং যত পারো সময় ধরে প্রশ্নপত্র প্র্যাকটিস করে যাও। পরীক্ষায় তো এমনিতে থাকে ১০০টা প্রশ্ন। সময় ১০০ মিনিট। অর্থাৎ, প্রতিটি প্রশ্নে এক মিনিট করে। ফলে তোমাকে প্রশ্নটা দেখেই বুঝে নিতে হবে সেটা তুমি পারবে না পারবে না। অংকের মতো প্রশ্নের ক্ষেত্রে যেমন ক্যালকুলেশন-এর অনেক শর্টকাট টেকনিক থাকে। এর জন্য দেখতে পারো ‘দ্য ট্র্যাকটেনবার্গ স্পিড সিস্টেম অব বেসিক ম্যাথমেটিক্স’ বইটি। সঙ্গে খুব কম সময়ে কোনও বিষয় পড়ে ফেলে সেটা বোঝার চেষ্টা করো। ভার্বাল এবিলিটি-র ক্ষেত্রে তা খুব কাজে দেয়।

পরীক্ষা দেওয়ার সময় ছেলেমেয়েদের কী কী মাথায় রাখা উচিত? অর্থাৎ আপনি কী কী টিপ্স দেবেন?

টিআইএসএস-নেট@এর প্রথম পার্ট তো এক অর্থে অ্যাপটিটিউড টেস্ট। মাথায় কোনও চাপ নিয়ে যেও না যে সব উত্তর করে আসতে হবে। লক্ষ্য হওয়া উচিত যথাসম্ভব ঠিক উত্তর করে আসা। যাতে স্কোরটা অনেক ওপরের দিকে থাকে। যদি পরীক্ষার আগে বেশ ভাল করে প্রস্তুতি নিয়ে থাকো, তা হলে নিজের স্ট্রং এবং উইক এরিয়াগুলি সম্পর্কে তোমার একটা ধারণা হয়ে যাওয়া উচিত। এ বার পরীক্ষায় তোমাকে সেই মতো স্ট্র্যাটেজি নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। পরীক্ষা শুরু হওয়ার প্রথম ৫-১০ মিনিট প্রশ্নগুলি ভাল করে দেখে নাও। কোন কোন প্রশ্ন তোমার জানা, কোনগুলো কিছুটা জানা এবং কোনগুলো একেবারে ছেড়ে দেবে। এ বার প্রথম ১৫-২০ মিনিট সব থেকে ভাল করে জানা প্রশ্নগুলি করে ফেল। তার পর অন্যগুলির দিকে এগোও। প্রথম এক ঘণ্টায় তোমার যেন সব জানা প্রশ্নগুলি ঠিক ঠিক অ্যাটেম্প্ট করা হয়ে যায়। ক্যাট-এ এক ধরনের সিস্টেম আছে যেখানে তুমি যে প্রশ্ন জানা মনে হচ্ছে, কিন্তু তখনই না করে পরে করবে, সেগুলি মার্ক করে রাখতে পারো। এখানেও তেমন ব্যবস্থা আছে। ফলে জানা প্রশ্নগুলি করে নেওয়ার পর চলে এস এই ধরনের প্রশ্নে। অ্যাটেম্প্ট করতেই পারো, যখন এখানে কোনও নেগেটিভ মার্কিং নেই। মনে রেখো, প্রত্যেকটি প্রশ্নের জন্য ম্যাক্সিমাম এক মিনিট থাকবে। আর কোনও সোজা প্রশ্ন যেন ছেড়ে এসো না।

TISS NET TISS NATIONAL ENTRANCE TEST abp feature prastuti
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy