Advertisement
E-Paper

সিভি লিখতে হলে

নিয়োগকর্তার মুখোমুখি হওয়ার আগে কারিকুলাম ভিটা বা সিভি-ই হল তাঁর কাছে তোমাকে চেনার চাবি। সিভি ঠিকমতো তৈরি করতে পারলে তা সঙ্গে সঙ্গে নজর কাড়বে নিয়োগকর্তার। কী ভাবে লিখতে হয় সিভি, আলোচনা করলেন সৌরজিৎ দাস নিয়োগকর্তার মুখোমুখি হওয়ার আগে কারিকুলাম ভিটা বা সিভি-ই হল তাঁর কাছে তোমাকে চেনার চাবি। সিভি ঠিকমতো তৈরি করতে পারলে তা সঙ্গে সঙ্গে নজর কাড়বে নিয়োগকর্তার। কী ভাবে লিখতে হয় সিভি, আলোচনা করলেন সৌরজিৎ দাস

শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:০৫

গবেষণা করো

আগে ভেবে নাও, তুমি ঠিক কী ধরনের কাজ করতে চাও। বা তুমি যে পড়াশোনা করেছ, তাতে তুমি কী ধরনের কাজ পেতে পারো। আর তুমি ঠিক কী ধরনের সিভি লিখবে। কারণ তোমার সিভি-তে যদি শুধু ‘আমি এই করেছি, আমি ওই সাফল্য অর্জন করেছি’ এই ধরনের কথার বারবার উল্লেখ থাকে তা হলে ধরেই নিতে পারো, নিয়োগকর্তা সেটা এক ঝলকেই বাতিল করে দেবেন। তোমাকে তোমার সাফল্যের কথাই বলতে হবে, কিন্তু ওই ‘আমি, আমি’টা বাদ দিয়ে। সুকৌশলে, যাতে তা নিয়োগকর্তার নজর কাড়ে।

খেয়াল করবে, চাকরির ক্ষেত্রে কিন্তু জব ডেসক্রিপশন-এর সঙ্গে সঙ্গে পার্সন স্পেসিফিকেশন-এর বিষয়েও তথ্য দেওয়া থাকে। জব ডেসক্রিপশন-এ তোমার কী কাজ সেটা বলা থাকবে। আর পার্সন স্পেশিফিকেশন হল ওই কাজটা করার জন্য কর্মীর কাছে কী ধরনের সামর্থ্য বা দক্ষতা চাওয়া হচ্ছে, তার তথ্য। হতেই পারে জব ডেসক্রিপশন দেখে তোমার মনে হল, এই ধরনের চাকরিই তো আমি চেয়েছিলাম। কিন্তু পার্সন স্পেশিফিকেশন-এ চোখ রেখে তুমি হয়তো বুঝতে পারলে, বেশ কিছু জায়গায় তোমার খামতি রয়েছে। ফলে সিভি লেখার সময় এই বিষয়গুলো কিন্তু মাথায় রাখতে হবে।

সিভি-র কাঠামো

• খুব প্রয়োজন না হলে সিভি দু’পাতার বেশি বড় করার দরকার নেই। • পুরো সিভি-টা একটাই ফন্টে লিখতে হবে। পরিচিত ফন্ট ব্যবহার করাই ভাল। ফন্টের সাইজ় ১১ বা তার বেশি হলে ভাল হয়। দুটি বাক্যের মধ্যে পর্যাপ্ত জায়গা রাখো।

• কোনও ধরনের অলঙ্করণ সিভিতে একেবারেই করবে না। অনেকে সিভিতে নিজেদের পাসপোর্ট আকারের ছবি আটকে দেয়। মাথায় রেখো, সাধারণত সিভি-তে কিন্তু ছবির দরকার পড়ে না।

• ইংরেজিতেই সিভি লেখা হয়। ভাষা রাখো সহজ-সরল। বাক্যগঠন, বানান ভুল— এ সব সিভি-তে থাকলে কিন্তু তাতে নিয়োগকর্তার তোমার উপরে নেতিবাচক মনোভাব তৈরি হবে। সিভি বানানো হয়ে গেলে কোনও পেশাদার ব্যক্তি, যিনি এই ধরনের নিয়োগপ্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত, তাঁকে দেখিয়ে নাও।

• সাধারণত সিভি মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ফরম্যাটেই লেখা হয়। কারণ অধিকাংশ জায়গাতেই প্রিন্ট আউট জমা দেওয়া হয়। তবে সিভি-র সফ্ট ফাইলও রেখো। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান ইমেল-এর মাধ্যমে সিভি পাঠাতে বলে।

শিক্ষাগত যোগ্যতা

• সর্বশেষ যে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছ সেটা দিয়ে শুরু করে ক্রমপর্যায়ে বোর্ডের পরীক্ষা পর্যন্ত লিখতে হবে। লেখার সময় কেবল প্রতিষ্ঠান, ডিগ্রি এবং প্রাপ্ত নম্বর লিখলে হয়তো যথেষ্ট না-ও হতে পারে। কোনও কোনও প্রতিষ্ঠান হয়তো দেখতে চাইতে পারে তুমি কোন কোন বিষয়ে পড়াশোনা করেছ। সে ক্ষেত্রে সংক্ষেপে সেই তথ্যগুলি উল্লেখ করতে হবে।

- কোথাও কোনও সেমিনার বা ওয়ার্কশক করে সার্টিফিকেটও পেয়েছিলে। সিভি-তে তা উল্লেখ করবে। সঙ্গে এখানে তোমার ভূমিকা বা সাফল্যের কথাও অল্প কথায় বলে দিতে পারো।

• এমনও হতে পারে, কোনও স্বল্পমেয়াদের কম্পিউটার বা বিদেশি ভাষার কোর্স করা শুরু করেছিলে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত পুরোটা করতে পারোনি। সে ক্ষেত্রে সেই বিষয়টা কী ছিল, কত দিন করেছিলে, সে কথা উল্লেখ করে দিও।

অভিজ্ঞতা

• অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানই ফ্রেশারদের সুযোগ দেয়। তবে আবেদন করার আগে যদি কোনও কোর্স বা ইন্টার্নশিপ করে থাকো, সেই তথ্য সিভিতে উল্লেখ করে দিও।

• যাদের আগে চাকরির অভিজ্ঞতা রয়েছে, তাদের পুরনো চাকরির বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সব তথ্য লিখতে হবে। যেমন, কোন সংস্থায় কাজ করতে, কত বছর করেছ, কী ধরনের প্রোজেক্ট-এর সঙ্গে যুক্ত ছিলে, কী পদে ছিলে ইত্যাদি। শিক্ষাগত যোগ্যতার মতোই শেষ যে চাকরিটা করেছ, সেটাই প্রথমে রেখো। এ ক্ষেত্রেও মাথায় রেখো, বাড়তি কথা বা অপ্রয়োজনীয় বিশেষণ ব্যবহার করা করাই ভাল।

• আজকাল ‘লিডারশিপ’ বিষয়টাকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। ফলে কোনও প্রোজেক্টে তোমার টিম লিডারশিপ-এর অভিজ্ঞতা থাকলে, সেটা উল্লেখ করতে ভুলো না।

এক্সট্রাকারিকুলার

• খেলাধুলো, নাটক, লেখালিখির মতো এক্সট্রাকারিকুলার অ্যাকটিভিটি-র সঙ্গে যুক্ত থাকলে, সেটা সিভিতে জায়গা অনুসারে যোগ করে দিতে হবে।

• যদি তোমার কোনও হবি থাকে, সেটা উল্লেখ করতে ভুলো না। হয়তো তুমি একটা টেকনিক্যাল কাজের জন্য আবেদন করছ। অন্য দিকে, তুমি নিজেই একটা পার্সোনাল ওয়েবসাইট চালাও নিজের অবসর সময়ে। এই তথ্য কিন্তু তোমার সিভিকে অন্যদের থেকে বেশ কিছুটা এগিয়ে দিতে পারে।

• যদি এলাকায় স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ যেমন, রক্তদান শিবির, দরিদ্র শিশুদের পড়াশোনা করানো, লোকালয় পরিষ্কার-এর মতো কাজে যুক্ত থেকে থাকো— অবশ্যই উল্লেখ করবে। এই ধরনের কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকাকে ইতিবাচক চোখেই দেখেন নিয়োগকর্তারা।

সিভি লেখার সময় বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে ধরনের ইংরেজি শব্দ ব্যবহার করতে পারো:

সাফল্য বা ওয়ার্ক এথিক্স নিয়ে লেখার সময়— Achieved, Capitalized, Deciphered, Spearheaded, Stimulated, Surpassed ইত্যাদি

তোমার কাজের বিষয়ে বলার সময়— Accelerated, Accomplished, Developed, Volunteered, Simplified, Initiated, Reached, Guided, ইত্যাদি

তুমি এক জন ভাল টিম মেম্বার বোঝাতে— Collaborated, Conveyed, Performed, Instructed, Trained ইত্যাদি।

Tips CV Curriculum Vitae
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy