ভাল মাসমাইনের চাকরি, বাড়ি, গাড়ি— সবই আছে। তার পরেও কিন্তু অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মুখে পড়েন অনেকেই। বড় ব্যবসাতেও ভরাডুবি হতে পারে। এটাই জীবন।
তবে সময় থাকতেই যদি সঠিক পদ্ধতিতে সঞ্চয় এবং ব্যয়ের অভ্যাস তৈরি করা যায়, দুর্দিনেও অসহায়তার মুখে পড়তে হবে না। অন্তত বেশ কিছু দিন পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার মতো অর্থের জোগান থাকবে।
কোন অভ্যাস জীবনে অর্থনৈতিক নিরাপত্তা দেবে?
জরুরি পরিস্থিতি: দৈনন্দিন জীবনে নির্দিষ্ট কিছু ব্যায় থাকে, যা কোনও মতেই কাটছাঁট করা যায় না। তার পরে কিছু টাকা ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করে রাখতে হয়। তার মধ্যে একটি অংশ রাখুন জরুরি পরিস্থিতির জন্য। অসুখ, চাকরি চলে যাওয়া, উপার্জন কমে যাওয়া বা বন্ধ হয়ে যাওয়া— এমন নানা পরিস্থিতি জীবনে আসতেই পারে। সেই সময়ে সংসার, ব্যয়ভার চালানোর জন্য কিছু টাকা থাকা দরকার। উপার্জনের একেংশ এই বাবদ সঞ্চয় করুন। মাসে মাসে অল্প করে টাকা জমানো যেতে পারে। আবার ভাল কোনও পলিসিও করানো যেতে পারে।
সঞ্চয় সম্পর্কে জানা: রোজগার করছেন, দু’হাতে খরচও করছেন। জমাচ্ছেনও হয়তো। কিন্তু কোন প্রকল্পে? সঞ্চয় সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা থাকাটা কিন্তু খুব জরুরি। বিষয়টিকে গুরুত্ব না দেওয়া একেবারেই কাজের কথা নয়। কর, বিনিয়োগ, ঋণ, বিমা—সংক্রান্ত স্পষ্ট ধারণা থাকলে আজীবন সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। অর্থনৈতিক পরামর্শ সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞদের লেখালেখি বা ভিডিয়ো দেখে এ সম্পর্কে ধারণা করা যায়।
বাজেট: সম্ভাব্য খরচ সম্পর্কে বাজেট তৈরি করা খুব জরুরি। আরও দরকারি হল, সেই বাজেট মেনে চলা। শখের জন্য নির্দিষ্ট অর্থ আগেই বরাদ্দ রাখুন। কিন্তু কোনও ভাবেই সেই বাজেট ছাপিয়ে যাওয়া চলবে না। এ ভাবে সন্তানের পড়াশোনা, বেড়ানো বা আনুষঙ্গিক প্রয়োজনের জন্য বাজেট এবং সেই মতো সঞ্চয়ের ধাপ স্থির করা দরকার।
স্বল্প সঞ্চয়: হাতে অনেক টাকা এলে জমাব, এই মানসিকতা বিশেষ কাজের নয়। বরং যখন যতটা পারা যায়, সঞ্চয় জরুরি। মাসে যদি ৫০০ বা এক হাজার টাকাও জমানো যায় স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পে বিনিয়োগ করুন। অনেকে বাড়িতে টাকা জমান বা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট টাকা ফেলে রাখেন। এতে টাকা কিন্তু বাড়বে না, ব্যাঙ্কে ফেলে রাখলে তেমন সুদও মিলবে না। সুতরাং ৫০০ করে টাকা ঘরে না জমিয়ে ব্যাঙ্ক বা ডাকঘরের এমন কোনও প্রকল্পে বিনিয়োগ করুন, যেখানে ভাল সুদ পাওয়া যাবে।
দৈনন্দিন খরচের হিসাব: দৈনন্দিন ছোটখাটো খরচও যদি হিসাব করে করা যায়, তা হলে সেখান থেকে অর্থ সঞ্চয় সম্ভব। অনেক সময় বেহিসেবি খরচ হয়। টাকার অঙ্ক কম হলেও, নিয়মিত অল্প টাকা জুড়লেই বড় অঙ্ক হতে পারে। চেষ্টা করে দেখতে পারেন, এমন কোনও খরচ কমানো যায় কি না।