Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
relationship

একটা ব্রেক আপ শিখিয়ে দিয়ে যায় জীবনের এই সব রূঢ় সত্য

জীবনের বেশ কিছু ধ্রুব সত্যকে সামনে এনে অনেক বাস্তববাদী ও গোছানো মানুষে পরিণত করার ক্ষমতাও রাখে বিচ্ছেদ।

সম্পর্কের ভাঙন যেমন দুঃখজনক, তেমনই তা জীবন সম্পর্কে শিখিয়ে যায় অনেক কিছু। ছবি: শাটারস্টক।

সম্পর্কের ভাঙন যেমন দুঃখজনক, তেমনই তা জীবন সম্পর্কে শিখিয়ে যায় অনেক কিছু। ছবি: শাটারস্টক।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৯ ১৭:৩২
Share: Save:

চোখে হারানোর মানুষ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চক্ষুশূল হয়ে ওঠে কখনওসখনও। ফলত, ব্রেক আপ ছাড়া গতি থাকে না অনেক সময়ই। সম্পর্কের সুখী পরিণতি সব সময়ই কাম্য, কিন্তু এই ব্রেক আপ কি শুধুই কাড়ে? দেয় না কিছুই? মনোবিদরা কিন্তু বলছেন, ব্রেক আপ মানুষকে অনেকটা পরিণত করে তোলে। জীবনের বেশ কিছু ধ্রুব সত্যকে সামনে এনে অনেক বাস্তববাদী ও গোছানো মানুষে পরিণত করার ক্ষমতাও রাখে বিচ্ছেদ।

অনেক সময় দেখা যায়, যে মানুষটাকে ছাড়া এক সময় এক মুহূর্ত চলতে মন চাইত না, আজ তাকে ছাড়াই জীবন কল্পনা করতে মন চাইছে। কিংবা সেই কল্পনায় কষ্ট থাকলেও পরিস্থিতিগত কারণেই অন্য কোনও উপায়ও নেই। কারও কারও ক্ষেত্রে আবার এত দিনের প্রিয় মানুষের সব কিছুই কিছু কার্যকারণের যোগফলে হঠাৎ খারাপ লাগতে শুরু করে।

ভালবাসার সম্পর্ক যখন ক্রমশ খারাপের দিকে যেতে শুরু করে, তার চরম পরিণতি হয় ব্রেক আপ। খুব ঘৃণায় পর্যবসিত না হলে যে কোনও প্রেমের সম্পর্কের ভাঙনই মানুষের মনে হতাশা ও দুঃখের জন্ম দেয়। তিরতিরে অভিমানটুকু হয়তো কারও কারও ক্ষেত্রে থেকে যায় আজীবন। সবচেয়ে কাছের জনের কাছ থেকে পাওয়া এমন আঘাত থেকে কোনও দিনই বেরনো যাবে না, এমন ধারণাও হতে থাকে অনেকের।

আরও পড়ুন: পলিসিস্টিক ওভারির শিকার অনেকেই, কী ভাবে সামলাবেন, উপসর্গই বা কী?

তবে মনোবিদদের মতে, এই সবই খুব সাময়িক। সম্পর্কের ভাঙন যেমন দুঃখজনক, তেমনই তা জীবন সম্পর্কে শিখিয়ে যায় অনেক কিছু। কী কী সহজ বিষয় ব্রেক আপ হলে আরও বেশি করে স্পষ্ট হয়ে ওঠে, জানেন?

মিস্টার এন্ড মিসেস পারফেক্ট বলে কিছু হয় না: প্রায়ই একটা কথা শুনতে পাওয়া যায়, ‘মিস্টার অ্যান্ড মিসেস পারফেক্ট’। যতই শুনে আসুন না কেন, বাস্তবে এর কোনও ভিত্তি নেই, তবু প্রেমের ভাল সময়ে নিজেদের তেমন জুটি বলেই মনে হয় অনেক সময়। ব্রেক আপ বুঝিয়ে দিয়ে যায়, একটা মানুষ কখনওই পুরোপুরি ঠিক হতে পারে না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই প্রেমের সম্পর্কে সঙ্গী দু’জন একে অপরের গুণে এতটাই মুগ্ধ থাকে যে দোষগুলো তাদের চোখ এড়িয়ে যায়। আর এটাই একটা সম্পর্কে থাকাকালীন প্রথম ভুল। কিছু দিন সম্পর্কে থাকার পর যখন সঙ্গীর দোষগুলো চোখে পড়তে শুরু করে তখনই দেখা দেয় সমস্যা। তাই সম্পর্কের শুরুর দিক থেকেই সঙ্গীর গুণের সঙ্গে সঙ্গে খারাপ দিকটাও বিচার করা উচিত। গুণগুলো মেনে নেওয়ার পাশাপাশি দোষগুলোকেও এড়িয়ে যাওয়া যায় না।

কম্প্যাটিবিলিটিই শেষ কথা নয়: সম্পর্কে সঙ্গী দু’জন কম্প্যাটিবল হলেই যে সেই সম্পর্ক স্থায়ী হবে তার কোনও মানে নেই। সঙ্গীর সব অভ্যেসের সঙ্গে নিজের স্বভাবের সামঞ্জস্য আছে দেখলেই তা স্থায়ী হবে ভেবে ভুল করেন অনেকেই। কোনও পরিস্থিতিতে যদি এক জন উত্তেজিত হয়ে পরেন, সেই ক্ষেত্রে অপর জনের উ়চিত ঠান্ডা মাথায় সম্যসার সামাধান করা। এই কারণে অনেক ক্ষেত্রেই দু’জন বিপরীতধর্মী মানুষই হয়ে ওঠেন সেরা যুগল। আবার কখনও একই স্বভাবের দু’জন অনেক ভাল থাকেন, এটা পুরোটাই পরিস্থিতি, নিজেদের বোঝাপড়া ও বিশ্বাসের উপর নির্ভর করে। কে কতটা কম্প্যাটিবল সেটা বিচার্য হলেও কখনওই শেষ কথা নয়। কম্প্যাটিবল হলেই যে তা সম্পর্ককে মজবুত রাখবে এমনও নয়।

সব ক্ষেত্রে সমতা বজায় রাখা সম্ভব নয়: আমাদের এই প্রজন্ম সমতায় বিশ্বাসী। অর্থাৎ নারী-পুরুষ একে অপরের কাছে কোনও দিক থেকেই পিছিয়ে নেই এখন। আর এই ধারণা ঢুকে পড়েছে ভালবাসার সম্পর্কেও। যা সব ক্ষেত্রে সম্ভব হয় না। আর এটাই অনেক সময় অশান্তির বীজ বপন করে সম্পর্কের মাঝে। সঙ্গী দু’জনকে তাঁদের সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে জানতে হবে। দু’জনের মধ্যে কারও পক্ষে কোন কাজটা করা সম্ভব, আর কোনটা নয় তা জানা প্রয়োজন।

আরও পড়ুন: এই সব ড্রাই ফ্রুট অবশ্যই রোজ খান, কমবে শরীরের বাড়তি মেদ

তিক্ত সম্পর্ক থেকে বেড়িয়ে আসতে দ্বিধাবোধ নয়: একটা সম্পর্ক হঠাৎ করেই খারাপ হয়ে যায় না। তার সূত্রপাত হয় অনেক দিন ধরেই। প্রতিনিয়ত হওয়া অশান্তি দেয় তারই ইঙ্গিত। কিন্তু সম্পর্ক বাঁচিয়ে রাখার তাড়নায় আমরা সেই সব ইঙ্গিতকে এড়িয়ে যাই। কিন্তু পরিস্থিতি সহ্যের বাইরে চলে গেলে তা দু’জনের পক্ষেই ক্ষতিকর। তাই ক্ষতিকর ‌সম্পর্ক থেকে তিক্ততা বাড়ার আগেই নির্দ্বিধায় সেই সম্পর্ক থেকে বেড়িয়ে যাওয়া ভাল। একটা ব্রেক আপ কিন্তু সেই কঠিন সত্যকেও মেনে নিতে শেখায়।

তৃতীয় ব্যক্তির উপস্থিতি অস্বাভাবিক নয়: সম্পর্কে থাকাকালীন যে তৃতীয় কোনও ব্যক্তিকে ভাল লাগবে না তার কোনও মানে নেই। নানা পরিস্থিতিতে একটা সম্পর্কে থাকা সত্ত্বেও অন্য কারও প্রতি আকৃষ্ট হতেই পারে কেউ। অনেক সময় আমরা ধরেই নিই, সঙ্গীর সঙ্গে দারুণ সম্পর্ক বজায় রাখলে কোনও ফাঁক গলে তৃতীয় কেউ আসতে পারে না। এই ধারণা সব সময় ঠিক নয়। দু’জনের মধ্যে কোনও অশান্তি বা সমস্যা ছাড়াও যে কোনও সময় তৃতীয় কেউ ঢুকে পড়তেই পারেন সম্পর্কে। তেমন হলে সঙ্গীর সঙ্গে আলোচনা করুন। ঝগড়া-অশান্তিতে না গিয়ে তার সঙ্গে খোলাখুলি আলোচনায় বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করুন সেই আকর্ষণের প্রকৃতি। প্রয়োজন বুঝলে সরেও আসতে হবে নিজেকে। কিন্তু আলোচনার মাধ্যমেও সুষ্ঠু ভাবে সমস্যার সমাধান করা সম্ভব এমন ধরনের সমস্যা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Relationship Tips Break Up Love Tips Life Hacks
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE