ঘরে ফিরছেন সুনীতা উইলিয়ামস এবং বুচ উইলমোর। মহাশূন্য থেকে দুই নভশ্চরের পৃথিবীতে ফেরার দিকেই নজর গোটা দুনিয়ার। রুদ্ধশ্বাসে চলছে অপেক্ষা। সকলের প্রার্থনা, নিরাপদে পৃথিবীতে ফিরে আসুন সুনীতা-বুচ। কিন্তু ঘরে ফেরার পরেই কি দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি?
একটানা ন’মাস মহাশূন্যে দিন যাপন করেছেন তাঁরা। যেখানে মাধ্যাকর্ষণের প্রভাব প্রায় নেই বললেই চলে। ক্ষতিকারক রশ্মি, মানসিক চাপ, মাসের পর মাস এমনই বিভিন্ন চরম পরিস্থিতিতে থাকার ফলে স্বাস্থ্যে নানা ধরনের সঙ্কট দেখা যায়। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে এত দিন কাটানোর ফলে জটিল রোগ হওয়ার আশঙ্কা থাকে বলে জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।

কী কী সমস্যায় ভুগতে পারেন সুনীতা এবং বুচ। ছবি: সংগৃহীত।
কী কী সমস্যায় ভুগতে পারেন সুনীতা এবং বুচ?
হাড় এবং পেশির ক্ষয়, মাধ্যাকর্ষণের অনুপস্থিতির ফলে শরীরের তরল পদার্থ মাথার দিকে উঠে যাওয়ায় মস্তিষ্কের ক্ষতি, মূত্রে ক্যালশিয়ামের মাত্রা বৃদ্ধির ফলে কিডনিতে পাথর জমা, দৃষ্টিশক্তির হ্রাস, স্মৃতিশক্তির হ্রাস, মাথা যন্ত্রণার মতো স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নানা সমস্যা তৈরি হতে পারে মহাকাশচারীদের। মস্তিষ্কের গঠন ও আয়তনেও পরিবর্তন আসতে পারে, যা স্পেসফ্লাইট-অ্যাসোসিয়েটেড নিউরো-অকুলার সিনড্রোম (SANS) নামে পরিচিত।
কিন্তু এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তার কারণ হল ক্যানসারের আশঙ্কা। এমনই বক্তব্য বহু বিজ্ঞানীর। মহাকাশ থেকে ফেরার পরে কি মারণরোগ বাসা বাঁধতে পারে শরীরে?

মহাকাশযানে সুনীতার জীবনযাত্রা। ছবি: সংগৃহীত।
ন’মাস ধরে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে থাকার ফলে সর্ব ক্ষণ বিকিরণের (রেডিয়েশন) সংস্পর্শে ছিলেন সুনীতারা। পৃথিবীতে সৌর বিকিরণ থেকে রক্ষা করায় বায়ুমণ্ডল এবং চৌম্বক ক্ষেত্রের অবদান রয়েছে। কিন্তু মহাকাশে তা নেই। দীর্ঘকাল বিকিরণের সংস্পর্শে থাকলে কার্সিনোজেনিক উপাদানের মাত্রা বেড়ে যায় শরীরে। আর এর ফলেই ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে। মহাজাগতিক রশ্মি এবং সৌর বিকিরণ কেবল ডিএনএ-র ক্ষতি করে না, কোষের মিউটেশনেও অংশ নেয়।
আরও পড়ুন:
নাসার মতে, পৃথিবীর মানুষের তুলনায় আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে থাকা নভশ্চরদের প্রায় ২০ গুণ বেশি বিকিরণ সহ্য করতে হয়। ফলে লিউকেমিয়া এবং টিউমারের মতো ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে। যদিও নাসা জানিয়েছে, ক্ষতিকারক বিকিরণ থেকে নভশ্চরেদের রক্ষা করার ব্যবস্থা তারা নেয়। মহাকাশচারীরা যাতে বিকিরণের সংস্পর্শে কম থাকেন, সে দিকে নজর রাখে বলে দাবি নাসার।