তিনি আসবেন নাকি তিনি আসবেন না! কান চলচ্চিত্র উৎসবের শেষের দিন যত এগিয়ে আসছিল, ততই আশার আলো নিভে আসছিল বলিউডের ভক্তদের মনে। অনেকে ভেবেই নিয়েছিলেন, এ বছরে কান চলচ্চিত্র উৎসবের লাল গালিচায় আর দেখা যাবে না ঐশ্বর্যা রাই বচ্চনকে। গত ২৩ বছরের নিয়ম এ বার ভাঙল বুঝি! কিন্তু নাহ, ঐশ্বর্যা নিরাশ করলেন না। বুধবার ভারতীয় সময় রাত এগারোটা নাগাদ আবির্ভূত হলেন তিনি। সেই সঙ্গে বুঝিয়ে দিলেন কেন আজও কানের অজস্র ভারতীয় শৌখিনী এবং তারকাদের ভিড়েও তিনি প্রাসঙ্গিক।

বহু দিন পরে কানে আবার শাড়ি পরে এলেন ঐশ্বর্যা। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
কানের লাল গালিচায় বুধবার ঐশ্বর্যা এসেছিলেন ‘দ্য হিস্ট্রি অফ সাউন্ড’ ছবির প্রিমিয়ারে। পরেছিলেন একটি দুধ সাদা বেনারসি শাড়ি। তার সঙ্গে লাল চুনির কয়েক ছড়া মালা আর খোলা চুলে মাঝামাঝি সিঁথি কেটে পরেছিলেন চওড়া সিঁদুর। ওই সাজে লাল গালিচায় আসতেই অভিনেত্রীকে দেখে ঝলসে উঠল ক্যামেরার ফ্লাশবাল্ব।

সাদা বেনারসির সঙ্গে ৫০০ ক্যারেটের মোজাম্বিকে চুনির মালা এবং একটি বড় না-কাটা হিরের গয়না পরেছিলেন ঐশ্বর্যা। আঙুলে ছিল চুনি এবং হীরের বড় আংটি। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
বহু দিন পরে কানে আবার শাড়ি পরে এলেন ঐশ্বর্যা। ২০০২ সাল থেকে কান চলচ্চিত্র উৎসবে আসছেন তিনি। প্রথম বছর কানে শাড়ি পরেছিলেন অভিনেত্রী। তার পরে প্রতি বছরই তাঁকে দেখা গিয়েছে নানা ধরনের পশ্চিমী আদলের গাউনে। ২৩ বছর পরে আবার কানে তাঁকে দেখা গেল শাড়িতে।

সোনা এবং রুপোর জরি দিয়ে কড়ওয়া পদ্ধতিতে হাতে বোনা হয়েছে ঐশ্বর্যার বেনারসি শাড়িটি। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
ঐশ্বর্যার শাড়িটি তৈরি করেছেন বলিউডের পোশাকশিল্পী মণীশ মালহোত্র। শাড়িটি হাতে বোনা কড়ওয়া বেনারসি শাড়ি। কড়ওয়া বুনন হল বেনারসির সবচেয়ে কঠিন বুনন পদ্ধতি। বেনারসির নাম ‘কড়ওয়া’ সেজন্যই। কারণ হিন্দিতে কড়ওয়া শব্দের অর্থাৎ কড়া বা কঠিন। বুনন পদ্ধতিটি কঠিন কারণ, এর প্রতিটি বুটি আলাদা আলাদা ভাবে বোনা হয় হাতে। তাই ওই ধরনের বেনারসি বুনতে সময় এবং পরিশ্রম লাগে অনেক বেশি। কাজও হয় অনেক সূক্ষ্ম।কানে ঐশ্বর্যার শাড়ির ছবি দিয়ে মণীশ লিখেছেন শাড়িটিতে রুপো এবং রোজ় গোল্ডের জড়ি ব্যবহার করে বোনা হয়েছে এক একটি বুটি। তার উপরে সোনা রুপোর জরি দিয়ে বুনে করা হয়েছে সূক্ষ্ম জারদৌসি কাজ। শাড়িতে নাটকীয়তা আনার জন্য ওর সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে একটি দুধ সাদা স্বচ্ছ টিস্যুর ওড়না। যার পাড় বোনা হয়েছে সোনা-রুপোর জরির নকশা দিয়ে।
আরও পড়ুন:
সাদা বেনারসি র সঙ্গে ৫০০ ক্যারেটের মোজাম্বিকে চুনির মালা এবং একটি বড় না-কাটা হিরের গয়না পরেছিলেন ঐশ্বর্যা। তবে এতকিছুর মধ্যেই সবটুকু নজর কেড়ে নিয়েছে ঐশ্বর্যের সিঁদুর! সাজের অঙ্গ হলেও ভারতীয় সংস্কৃতিতে সিঁদুর বিবাহিত নারীরাই পরেন। যে ঐশ্বর্যার বিবাহিত জীবনে অশান্তি নিয়ে আলোচনা এই সেদিনও হয়েছে, সেখানে আন্তর্জাতিক মঞ্চে তাঁর সিঁদুর পরে আগমনকে বিশেষ বার্তা হিসাবেও দেখছেন ভক্তেরা।
আবার অনেকে এ কথাও বলছেন যে, আন্তর্জাতিক মঞ্চে সিঁদুর পরে ঐশ্বর্যার আগমনের নেপথ্যে রয়েছে দেশভক্তি। ভারতে হওয়া পহেলগামের জঙ্গি হামলা এবং তার জবাবে ‘অপারেশন সিঁদুর’ - এর সমর্থনেই সিঁথিতে সিঁদুর পরেছেন ঐশ্বর্যা। যেমন কানে সিঁদুর পরতে দেখা গিয়েছে বলিউডের আরেক নায়িকা অদিতি রাও হায়দরিকেও।