বলিউডের গ্ল্যামার কন্যা বললে প্রথম যে ক’টি মুখ চোখের সামনে ভাসে তার মধ্যে এক জন অবশ্যই করিনা কপূর খান। বয়স ৪৪। দুই সন্তানের জননী। তবু করিনা যখন ক্যামেরার সামনে আসেন, তা সে ডিজ়াইনার পোশাকে সেজেগুজে হোক বা বিনা রূপটানে সাধারণ জিন্স-টি শার্ট পরে, তাঁকে দেখে কয়েক মুহূর্ত থমকান অনুরাগীরা। সেই করিনাকে রাজস্থানে বলিউ়ডের এক পুরস্কার বিতরণীর মঞ্চে দেখেও বলিউডপ্রেমীদের দৃষ্টি থমকালো।

তরুণ তেহলানির পুরনো শাড়ির সংগ্রহ থেকে বেছে নেওয়া শাড়িতে করিনা কপূর। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
গাউন, ড্রেস, স্যুট এবং নানা পশ্চিমী পোশাকের ভিড়ে অভিনেত্রী পরেছিলেন একটি একরঙা সরু পাড়ের শাড়ি! দেশের এক নামী পোশাক শিল্পীর ১৭ বছরের পুরনো সংগ্রহে রাখা ছিল শাড়িটি। করিনা নতুন সংগ্রহ ছেড়ে সেটিই বেছে নিয়েছেন। কিন্তু কেন? কী এমন আছে সেই শাড়িতে!

সোনালি করসেটের ব্লাউজ় এবং শাড়িতে বাংলার সূচিকর্মের কাজ রয়েছে। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
করিনার শাড়ি নিয়ে বিশদে জানিয়েছেন, ওই শাড়ির স্রষ্টা তরুণ তেহলানিই। তরুণ বলিউডের প্রিয় পোশাক শিল্পীদের এক জন। তবে সেই জায়গায় তিনি এক দিনে পৌঁছননি। ২০০৮ সালে তরুণ প্রথম ‘হাই এন্ড কুচুয় ফ্যাশন শো’ করেন। যা সম্ভ্রান্ত এবং উচ্চমানের ফ্যাশন বলে ফ্যাশন দুনিয়ায় বন্দিত। করিনার শাড়িটি তরুণের সেই সংগ্রহেরই একটি।

বাঁ দিকে, ২০০৮ সালে তরুণ তেহলানির ফ্যাশন শোয়ে অপ্সরা স্টাইলে পরানো শাড়ি। মাঝে, পরবর্তী কালে সেই শাড়ির নকশা বদল। সেই নতুন নকশার স্কেচ। ডান দিকে, নতুন নকশার শাড়িতে করিনা। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
সেই সময়ে তরুণ তাঁর তৈরি শাড়িটি ফ্যাশন শোয়ের মডেলদের পরিয়েছিলেন একটু অন্য ভাবে। ভারতীয় শিল্পে ‘স্বর্গের অপ্সরা’দের যেমন পোশাকে কল্পনা করা হয়, খানিকটা সেই ভাবে। ১৭ বছর পরে করিনার শাড়িটিও সেই ভাবেই তৈরি করেছেন পোশাক শিল্পী। রাজস্থানের বেলে পাথরের রাজ মহলকে পিছনে রেখে সামনে ওই শাড়ি পরে দাঁড়িয়ে থাকা করিনাকে অপ্সরার মতোই দেখাচ্ছে বলে জানিয়েছেন অনুরাগীরা।

ব্লাউজ়ে রয়েছে রাজস্থানের ডাবকা জরির কাজ এবং বাংলার নকশি কাঁথার কাজ। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
আগে থেকে সেলাই করা শাড়িটির গাঢ় ওয়াইন রঙের। তার পাড়ে অনুজ্জ্বল সোনালি চুমকি আর সুতোর কাজ। তরুণ জানিয়েছেন, যে নকশা করানো হয়েছে শাড়িতে সেটি কর্নাটকের বিখ্যাত বিদরির নকশা অনুপ্রাণিত। বিদরি কালচে রঙের পেতলে রুপোর জালি নকশার কাজকে বলা হয় বিদরি। যা পারস্য, তুরস্ক এবং আরবের শিল্প অনুপ্রাণীত ভারতীয় নকশা। এ ছাড়া ওই শাড়ি এবং করসেট ব্লাউজ়ে রয়েছে রাজস্থানের ডাবকা জরির কাজ এবং বাংলার নকশি কাঁথার কাজও।

‘অপ্সরা’ করিনা কপূর খান। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
তবে ফ্যাশনপ্রেমীরা বলছেন, শাড়িখানা তার নকশার জন্য যত না চোখে প়ড়ছে, তার চেয়ে অনেক বেশি নজর কাড়ছে জড়ানোর ভঙ্গিমায়। যেটির পূর্ণ কৃতিত্ব তরুণেরই। কারণ তিনিই প্রিস্টিচড শাড়িটিকে এমন ভাবে সাজিয়েছেন, যা বিদেশি গাউনকেও টেক্কা দিতে পারে।