গ্রীষ্মকালে ব্যাপক কদর থাকলেও বর্ষাকালে বেশ খানিকটা কদর পড়ে যায় এই প্রসাধনীর। কথা হচ্ছে সানস্ক্রিনের। চিকিৎসকদের মতে, কেবল মেয়েদেরই নয়, শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা— যে কোনও মরসুমেই বাইরে বেরোনোর আগে ছেলেদেরও সানস্ক্রিন ব্যবহার করা ভীষণ জরুরি। কেবল ট্যান পড়ার হাত থেকে রেহাই দেয় এমনটা নয়, সানস্ক্রিন কিন্তু সূর্যের অতিবেগনি রশ্মি ইউভিএ (আলট্রা ভায়োলেট রশ্মি এ) এবং ইউভিবি (আলট্রা ভায়োলেট রশ্মি বি)-র ক্ষতিকর প্রভাব থেকেও ত্বক রক্ষা করে। সানস্ক্রিন ব্যবহার করলে ত্বকের ক্যানসারের ঝুঁকি কমে, এ ছাড়া ত্বকে অকালে বয়সের ছাপও পড়ে না।
টেলিভিশন খুললেই একটার পর একটা সানস্ক্রিনের বিজ্ঞাপন, আপনাকে চিন্তায় ফেলে দেয় যে কোনটা ছেড়ে কোনটা কিনবেন। বাজারে গেলেও বিভিন্ন সংস্থার সানস্ক্রিনের ছড়াছড়ি। চড়া দাম দিয়ে যে সানস্ক্রিনটি কিনছেন সেটি আদৌ আপনার ত্বকে কাজ করছে তো? জেনে নিন, প্রসাধনীটি কেনার আগে কোন বিষয়ে নজর দিতেই হবে।
১) এসপিএফ (‘সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর’)-এর মাত্রা যেন ৩০ অথবা তার থেকে বেশি থাকে, সে দিকটায় নজর দিতে হবে।
২) ফুল কভারেজ দেবে, ঘাম প্রতিরোধ করবে আর ওয়াটার রেজ়িস্ট্যান্ট হবে, এমন সানস্ক্রিন বাছাই করুন।
৩) অতিবেগনি রশ্মি মূলত তিন ধরনের হয়— ইউভিএ, ইউভিবি ও ইউভিসি। আপনি যে সানস্ক্রিনটি কিনছেন, সেটি ইউভিএ আর ইউভিবি— এই দু’টির বিরুদ্ধেই সুরক্ষা দিতে পারবে কি না, তা যাচাই করে কিনুন। সানস্ক্রিনের বাক্সের গায়ে ইউভিএ আর ইউভিবি-এর উল্লেখ আছে কি না, তা দেখে নিতে ভুলবেন না।
৪) সানস্ক্রিনের অতিবেগনি রশ্মির বিরুদ্ধে প্রোটেকশন গ্রেড, অর্থাৎ পিএ লেভেলের দিকে নজর দিতে হবে। পিএ লেভেলের মাধ্যমে সানস্ক্রিনটি ইউভিএ-র বিরুদ্ধে কতখানি সুরক্ষা দিতে পারবে, তা নির্ধারণ করা হয়। পিএ লেভেল ৩ হলে সেই সানস্ক্রিনটি বেশ ভাল।
৫) সানস্ক্রিনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে জরুরি বিষয় হল এসপিএফ বা ‘সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর’। নির্দিষ্ট সানস্ক্রিনটি কত ক্ষণ আপনার ত্বককে সূর্যের অতিবেগনি রশ্মির হাত থেকে রক্ষা করবে, তা-ই বোঝানো হয় এসপিএফের মাধ্যমে। এসপিএফ ৩০ ব্যবহার করবেন, না কি ৫০, তা নিয়ে খুব বেশি ভাবার কারণ নেই। এসপিএফ ৫০ সূর্যের অতিবেগনি রশ্মির হাত থেকে ত্বককে ৯৪.৫ শতাংশ সুরক্ষা দেয়, অন্য দিকে এসপিএফ ৩০ সূর্যের অতিবেগনি রশ্মির হাত থেকে ত্বককে ৯২ শতাংশ সুরক্ষা দেয়। তাই দু’টির মধ্যে খুব বেশি ফারাক নেই। আমাদের দেশের আবহাওয়ায় এসপিএফ ৩০ যুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করলেই যথেষ্ট। ত্বকে কোনও রকম সমস্যা না থাকলে জেল বেস্ড সানস্ক্রিন ব্যবহার করলে সবচেয়ে ভাল। তবে ত্বকে কোনও রকম সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়েই সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে।