শিশুকে ক্রিম মাখাবেন না তেল, কী ধরনের ময়েশ্চারাইজ়ার মাখালে ত্বক ভাল থাকবে, এই সব নিয়েই চিন্তা করেন মায়েরা। ছোটদের ত্বক বেশি কোমল, নমনীয়। অনেকেই বড়দের ব্যবহার করার ক্রিম, পাউডার, সাবান শিশুর জন্যও ব্যবহার করেন। কিন্তু তা একেবারেই ঠিক নয়। শিশুদের ত্বক সংবেদনশীল হওয়ায় খুব তাড়াতাড়ি র্যাশ বেরিয়ে যেতে পারে। তাই শিশুর ক্ষেত্রে ত্বক পরিচর্যার পদ্ধতি আলাদা হওয়াই বাঞ্ছনীয়। তাপমাত্রা, আর্দ্রতার হেরফেরের মতো পরিবেশগত কারণে শিশুদের ত্বক সহজেই প্রভাবিত হয়ে পড়ে। তাই শিশুর কোমল ত্বককে অবশ্যই সুরক্ষিত রাখা প্রয়োজন।
শিশুর ত্বকের পরিচর্যা কেমন হবে?
ক্রিম ও লোশন
এখানকার আবহাওয়ায় ঘন ক্রিমের দরকার কমই পড়ে। সে ক্ষেত্রে ভাল কাজ করে বডি লোশন। হালকা অথচ ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। তবে বড়দের ময়েশ্চারাইজ়ার মোটেও মাখাবেন না। শিশুদের জন্য যে ক্রিম পাওয়া যায়, তা ব্যবহার করতে পারেন। আর গরমে আর্দ্রতা বেশি বলে ওয়াটার বেসড লোশন ব্যবহার করতে হবে। রাতে যদি বাতানুকূল যন্ত্র চলে, তা হলে শোয়ানোর আগে শিশুর সারা গায়ে ভাল করে ক্রম বা লোশন মালিশ করে দেবেন।
সাবান-শ্যাম্পু দেখে কিনুন
শিশুর ত্বকের জন্য বড়দের সাবান কখনওই নয়। কম ক্ষারযুক্ত, পিএইচ ব্যালান্স (৫.৫) রয়েছে, এমন সাবানই ব্যবহার করা উচিত। সাবানের পরিবর্তে লিকুইড সোপ (জেল বা ক্রিম) ব্যবহার করা আরও ভাল। সাবানের মতোই ছোটদের জন্য তৈরি আলাদা শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে।
আরও পড়ুন:
হালকা ক্লিনজ়ার ব্যবহার করুন
স্কুল থেকে ফিরলে বা বাইরে থেকে খেলে এলে মুখ ও হাত ধোয়ার প্রয়োজন হয়। সে জন্য এমন ক্লিনজ়ার ব্যবহার করুন, যা শিশুর কোমল ত্বক পরিষ্কার রাখার পাশাপাশি আর্দ্রতাও ধরে রাখবে। বাইরে কোথাও গেলে শিশুর জন্য আলাদা ক্লিনজ়ার সব সময়ে ব্যাগে রেখে দেবেন।
সানস্ক্রিন জরুরি
ছোটদেরও সানস্ক্রিন মাখানো জরুরি। ছোটরা বাইরে বেশি ক্ষণ খেলাধুলো করলে সান ট্যান, সান বার্ন, অ্যালার্জির মতো সমস্যা দেখা যায়। বাইরে বেরোলে সানস্ক্রিন তাই আবশ্যিক। ছোটদের ক্ষেত্রে এসপিএফ ২০ বা ৩০ হলেই যথেষ্ট। মেঘলা দিনেও লাগাতে হবে সানস্ক্রিন।
শিশুর ফেসপ্যাক
সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন শিশুকে ফেসপ্যাক মাখানো জরুরি। দিনভরের ঘাম, ধুলোময়লা বসে ত্বকে মৃত কোষ জমতে থাকে। তা ঠিকমতো পরিষ্কার না করলে ত্বকে অ্যালার্জি হতে পারে, আবার এগ্জ়িমার সমস্যাও দেখা দিতে পারে। ছোটদের জন্য ফেসপ্যাক বাড়িতে বানিয়ে নিন। রইল কিছু পদ্ধতি।
ওট্সের মাস্ক: ওট্সের প্রোটিন ত্বকের কোলাজেন তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা নেয়। মৃত কোষ জমে ত্বক শুষ্ক ও খসখসে হয়ে গেলে ওট্সের প্যাক ত্বককে আর্দ্র রাখবে। দুধের সঙ্গে দু’কাপ ওট্সের গুঁড়ো মিশিয়ে তাতে ১ চা চামচ মধু দিয়ে প্যাক তৈরি করুন। স্নানের আগে মুখে ও সারা গায়ে এই প্যাক লাগিয়ে মিনিট পনেরো অপেক্ষা করে স্নান করিয়ে দিন।
নারকেল তেলের প্যাক: শিশুর ত্বকে র্যাশ বা ফুস্কুড়ি হলে নারকেল তেল মাখালে উপকার হবে। দুই চামচ নারকেল তেলের সঙ্গে এক চামচ হলুদ মিশিয়ে মাখাতে হবে।
হলুদ-বেসনের প্যাক: এক চা চামচ বেসনের সঙ্গে কিছুটা হলুদগুঁড়ো এবং এক চামচ টম্যাটোর রস মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে নিন। খুদের মুখে, দুই হাতে ভাল করে মালিশ করে ১৫-২০ মিনিট রেখে ধুয়ে দিন। বেশি ক্ষণ রাখলে ত্বক কুঁচকে যাবে।