অতিমারির সময়ে একের পর এক মৃত্যু সংবাদ পেতে হয়েছে একা ঘরে বসে। ছবি: সংগৃহীত
এক কালে অনেকেই বলতেন, ‘একাই বেশ ভাল আছি’! অতিমারির পরে না কি সবচেয়ে চিন্তায় আছেন তাঁদেরই একাংশ। কাজ বা লেখাপড়ার জন্য যাঁরা পরিবারের থেকে দূরে থাকেন, তাঁদের অনেকেই বাড়ির কাছে ফিরে যাওয়ার কথাও ভাবতে শুরু করেছেন।
অতিমারির সময়টা সকলের জন্যই কঠিন। কারও কারও জন্য বা বিশেষ ভাবে কঠিন। তবে সবচেয়ে সমস্যায় কাটছে তাঁদেরই, যাঁরা কিনা একেবারেই একা থাকেন। তাঁদের অনেকে নিজেরাই সে কথা বলছেন।
সম্প্রতি এ বিষয়টি নিয়ে একটি ট্যুইট করেন লন্ডনের ক্লিনিক্যাল অনকোলজি কনস্টালট্যান্ট গগন ভটনগর। তার উত্তরে একই বিষয় নিয়ে ট্যুইটের বন্যা বইতে থাকে। প্রায় একই বক্তব্য সকলের। অনেকেরই মনে হয়েছে, এই সময়টায় যেন তাঁদের দিকে বিশেষ নজর দেননি পরিচিত কেউই। যাঁরাও বা বন্ধুবান্ধবের ফোন পেয়েছেন, কোনও মানুষের সংস্পর্শে আসতে না পারার অভাব খুবই প্রকট ভাবে বোধ করেছেন তাঁরা। দিনের পর দিন ঘরে থাকা খুবই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছিল তাঁদের জন্য। তাঁদের অনেকেরই বক্তব্য, পরিবারের সঙ্গে বসেও পরপর মৃত্যু সংবাদ পাওয়া সহজ বিষয় নয়। তবে অতিমারির সময়ে যে একের পর এক মৃত্যু সংবাদ পেতে হয়েছে একা ঘরে বসে, তা তাঁদের মানসিক চাপ খুবই বাড়িয়েছে।
এখন কোরোনার ভয় থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন দেশেই মানুষ একটু একটু করে বাইরে বেরোতে শুরু করেছেন। এখনকার সামাজিক মেলামেশার ধরনটি মন দিয়ে খেয়াল করলেও দেখা যাবে, যাঁরা পরিবার ছাড়া থাকেন, তাঁরাই সবচেয়ে বেশি বাইরে বেরোচ্ছেন বলে মন্তব্য করছেন বিভিন্ন দেশের মনোবিদ।
এমন একটা পরিস্থিতি যে একা একা সামলানো সবচেয়ে কঠিন, তা মানেন এ শহরের মনোবিদ নীলাঞ্জনা সান্যালও। তাঁর বক্তব্য, যোগাযোগ বিহীন জীবন কেউই কাটাতে পারেন না। প্রত্যেকেরই একটি সামাজিক নোঙর প্রয়োজন। তা না থাকলে এমন ভয়ের পরিস্থিতিতে একাকিত্ব গ্রাস করে নিতে পারে মানুষকে। ফলে মানুষের মধ্যে থেকে অসুস্থ হওয়ার চেয়ে কিছু কম কষ্টসাধ্য নয়, একা একা অন্যের অসুস্থতা বা মৃত্য সংবাদ পাওয়া।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy