মৌনী রায়। গ্রাফিক: আনন্দবাজাার অনলাইন।
পুজোর সময়ে যেখানেই থাকুন, এগরোল চাই-ই চাই মৌনী রায়ের! তার সঙ্গে মোচার চপ হলে আরও ভাল। মুম্বইয়ের নায়িকা বলে যে পুজোর সময়ে বাকি বাঙালিদের মতো খাওয়াদাওয়ায় মন নেই, তা কিন্তু একেবারেই নয়। সটান জানিয়ে দিলেন, সারা বছর এক রকম। এই সময়টা আলাদা। ‘‘পুজোর সময়ে নো ডায়েট’’, বললেন মৌনী।
বাংলার ঘরের মেয়ে অভিনেত্রী মৌনী। ছোট পর্দায় একতা কপূর পরিচালিত ‘কিউকি সাস ভি কভি বহু থি’ ধারবাহিক দিয়ে যাত্রা শুরু। পরবর্তী সময়ে অক্ষয় কুমারের ছবি ‘গোল্ড’-এর হাত ধরে হিন্দি ছবিতে অভিষেক মৌনীর। দুর্গাপুজোর মরসুমে মধ্য কলকাতার রেস্তরাঁ ‘দ্য ফ্ল্যামবয়েন্ট’-এর আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে কলকাতায় এসেছেন। সেখানে নতুন ‘লাউঞ্জ’ আর ‘ডাইনিং স্পেস’ উদ্বোধন করলেন। আর তার পরেই আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে আড্ডায় ভাগ করে নিলেন পুজোর স্মৃতি, খাওয়াদাওয়া নিয়ে নানা কথা।
মৌনীর জন্ম কোচবিহারে। পড়াশোনার জন্য কোচবিহার ছেড়ে দিল্লিতে পাড়ি, তার পরে কর্মসূত্রে পাকাপাকি ভাবে মুম্বইতে থাকতে শুরু করেন নায়িকা। কাজের ব্যস্ততার কারণে এখন আর কলকাতায় পুজো কাটাতে আসতে পারেন না মৌনী। সেই আক্ষেপের সুর অভিনেত্রীর কথায় স্পষ্ট। মৌনী বলেন, ‘‘অনেক বছর হল পুজোর সময়ে আর কলকাতা কিংবা কোচবিহারে আসতে পারি না। পুরনো দিনের কথা খুব মনে পড়ে এই সময়টায়। এ বার পুজোর প্রাক্কালে কলকাতায় এলেও পুজোটা শহরে কাটাতে পারব না ভেবেই খারাপ লাগছে। কলকাতার কাজ শেষ করেই মুম্বই পাড়ি দেব। পুজোটা মুম্বইয়েই কাটবে। দুর্গাপুজোর অন্যান্য দিন কাজ রাখলেও অষ্টমীর দিন কিন্তু আমি কোনও কাজ রাখি না। ওই দিন মণ্ডপে গিয়ে অঞ্জলি দেওয়া মাস্ট! আর তার সঙ্গে ভোগ খাওয়ার কথা ভুললে কিন্তু চলবে না।’’
বাঙালির পুজো মানেই তো পেটপুজো। পুজোর ক’দিনও মৌনী কড়া ডায়েটের মধ্যেই থাকেন? প্রশ্ন শুনে মুচকি হাসলেন মৌনী। জবাবে বললেন, ‘‘আমি কড়া ডায়েটে বিশ্বাস করি না।’’ তা হলে তন্বী চেহারার রহস্য কী? মৌনী বলেন, ‘‘আমি খেতে ভীষণ ভালবাসি। আমি রোগা কারণ বাবা-মায়ের দু’জনের পরিবারে সকলের চেহারাই এ রকম। না খেয়ে রোগা হওয়া যায় এই ধারণা ভীষণ ভুল। আমি মনে করি কোনও সাপ্লিমেন্ট নিয়ে নয়, শরীরে পুষ্টিগুণ পৌঁছনোর সবচেয়ে ভাল উৎস হল ভাল খাবার খাওয়া। কার্বহাইড্রেটের জন্য পরিমাণ মতো ভাত খেতে হবে, প্রোটিনের জন্য খেতে হবে ডাল, আয়রনের ঘাটতি মেটাতে রোজের ডায়েটে শাকও রাখতে হবে। রোজ একটা করে হলেও ফল খাই আমি। আর মাঝে খিদে পেলে খেয়ে নিই এক মুঠো ড্রাই ফ্রুট্স। মেপে খাওয়াদাওয়ার পাশাপাশি আমি সপ্তাহে চার থেকে পাঁচ দিন শরীরচর্চাও করি।’’
দুর্গাপুজো মানেই তো ভূরিভোজ। পুজোয় মৌনীর খাওয়াদাওয়াটা ঠিক কী রকম হয়? অভিনেত্রী বলেন, ‘‘অষ্টমীর দিনের ভোগের খিচুড়ি আর লাবড়া একেবারেই মিস করি না আমি। সঙ্গে বেগুনি থাকলে তো কথাই নেই। এ ছাড়া, পুজোয় আমাকে এগরোল আর ফুচকা খেতেই হবে। এগরোল আমার কাছে প্রথম প্রেম। না খেলেই মনখারাপ হয়ে যায়। আমি মাছ-মাংস খাই না। ডিমের উপরেই থাকি। পুজোর সময়ে মোচার চপ আর ডিম পোস্ত দিয়ে ভাত! আহা, ভেবেই জিভে জল এসে গেল।’’
যিনি রাঁধেন, তিনি চুলও বাঁধেন। মৌনীর সাজগোজ নিয়ে তো কোনও কথা হবে না, তিনি অনেকের কাছেই ফ্যাশন আইকন। তবে কি মৌনী রাঁধতে পারেন? উত্তরে মৌনী বললেন, ‘‘লকডাউনের সময়ে প্রায়ই রান্না করতাম। বেশ ভাল লাগে আমার রান্না করতে। তবে এখন কাজের চাপে খুব একটা রান্না করা হয়ে ওঠে না। বরের আবদারে মাঝেমধ্যে রান্না করি। আমার হাতে তৈরি ডিমের কষা আর সয়াবিন বাটা খেতে ও ভীষণ ভালবাসে।’’
কলকাতায় এসে ‘দ্য ফ্ল্যামবয়েন্ট’-এর খাবারও চেখে দেখলেন মৌনি। রেস্তরাঁর মেনুতে ছিল বিটরুট শিকামপুরি কবাব, ক্রিমি গোট চিট ক্যানপি, সিগারে বোরেগি আ লা কলকাতা, থিন ক্রাস্ট ভেজ গ্রিক আরুরুলা পেস্তো পিৎজ়া মতো পদ রকমারি পদ। আমিষভোজীদেরও এই ঠিকানায় গেলে নিরাশ হতে হবে না। আমিষপ্রেমী হলে লেমনগ্রাস মুর্গ টিক্কা, চিকেন চারকোল ডাম্পলিং, হাবিবি পিৎজ়ার মতো ভিন্ন স্বাদের খাবার চেখে দেখতে পারেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy