অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপনে অসংযমের কারণে যে সব অসুখ নিঃশব্দে থাবা বসাচ্ছে, তার মধ্যে অন্যতম ক্রনিক কিডনি ডিজওর্ডার বা ‘সিকেডি’। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)-এর সমীক্ষা জানাচ্ছে, ২০১১ সাল থেকে ২০২৩ সাল অবধি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, দেশে কিডনির রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ১১.১২ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৬.৩৮ শতাংশ হয়েছে। আক্রান্তদের তালিকায় শিশুরাও রয়েছে।
‘নেফ্রোলজি’ মেডিক্যাল জার্নালে এই গবেষণার খবর প্রকাশিত হয়েছে। সমীক্ষার রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, প্রতি বছর এ দেশে লক্ষাধিক মানুষ আক্রান্ত হন কিডনির রোগে। রোজের জীবনে কিছু অনিয়ম ও অসতর্কতার বশবর্তী হয়ে বেশ কিছু ভুল পদক্ষেপ এই অসুখের দিকে ঠেলে দেয়। আর এর আক্রমণ এতই নিঃশব্দে ও ধীরে ধীরে হয় যে ধরা পড়ার আগেই শরীরের অনেকটাই ক্ষতি হয়ে যায়।
এমনকিও এ-ও দেখা গিয়েছে, কমবয়সিদের মধ্যে কিডনিতে পাথর জমার প্রবণতাও বেশি। এর কারণ হল অত্যধিক জাঙ্ক খাবার খাওয়া। ফাস্ট ফুড, প্যাকেজড ফুডে বেশি পরিমাণে সোডিয়াম থাকে। ক্যালশিয়াম, সোডিয়াম, ফসফেট এগুলি শরীরে জমতে জমতে তা ক্রাস্টালাইজ় হয়ে যায়। ফলে কিডনিতে পাথর জমতে শুরু করে।
আরও পড়ুন:
সিকেডি-র অন্যতম উপসর্গ বার বার মূত্রনালিতে সংক্রমণ হওয়া। এতে হালকা জ্বরও আসে। হঠাৎই প্রস্রাবের জায়গায় জ্বালা ও তার সঙ্গে রক্তাল্পতা ধরা পড়লে সচেতন হতে হবে। হাইপারটেনশন, ডায়াবিটিস থেকেও ক্রনিক কিডনির অসুখ মাথাচাড়া দিতে পারে।
প্রতিরোধের উপায় কী?
এই অসুখ ঠেকাতে প্রাথমিক ভাবে খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে নুন। বেশি নুন দেওয়া খাবার কিডনির উপর চাপ ফেলে।
অনেকে ভাবেন, প্রচুর জল খেলেই শরীর ভাল থাকে। তা একেবারেই ভুল ধারণা। বরং চিকিৎসকদের পরামর্শ নিয়ে জানুন ঠিক কতটুকু জল আপনার শরীরের প্রয়োজন। ততটুকুই খাওয়া ভাল।
শিশুদের পর্যাপ্ত জল খাওয়াতে হবে। জলের অভাব হলে কিডনিতে সংক্রমণের ঝুঁকিও বাড়ে। শিশু যাতে প্রস্রাব চেপে না রাখে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে অভিভাবকদের।
ডায়াবিটিস বা রক্তচাপজনিত সমস্যা থাকলে সে সব নিয়ন্ত্রণে রাখুন। নইলে কিডনির কার্যক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে এই সব অসুখ।
বাইরের খাবার, ভাজাভুজি বন্ধ করতে হবে। ঘরে তৈরি হালকা খাবারই খেতে হবে। পাশাপাশি নিয়ম করে শরীরচর্চা করাতে হবে।