Advertisement
E-Paper

ডায়ালিসিস যন্ত্র খারাপ মেডিক্যালে, দুর্ভোগ

১১ মে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন মোমিনা খাতুন। মলমূত্র বন্ধ হয়ে তাঁর শরীর ফুলে উঠেছে। চিকিৎসক হিমো ডায়ালিসিসের পরামর্শ দিয়েছেন। গত ১৪ মে ডায়ালিসিস ইউনিটে নিয়ে গেলে তাকে ওয়ার্ডে ফিরে যেতে বলেছেন সেখানকার চিকিৎসক। কেন না গত দুই মাস ধরে ডায়ালিসিস ইউনিট বন্ধ রয়েছে। তাই ওয়ার্ডে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে কী করণীয় জেনে ব্যবস্থা নিতে বলে দিয়েছিলেন ডায়ালিসিস ইউনিটের চিকিৎসকেরা।

সৌমিত্র কুণ্ডু

শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০১৫ ০২:৩৮

১১ মে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন মোমিনা খাতুন। মলমূত্র বন্ধ হয়ে তাঁর শরীর ফুলে উঠেছে। চিকিৎসক হিমো ডায়ালিসিসের পরামর্শ দিয়েছেন। গত ১৪ মে ডায়ালিসিস ইউনিটে নিয়ে গেলে তাকে ওয়ার্ডে ফিরে যেতে বলেছেন সেখানকার চিকিৎসক। কেন না গত দুই মাস ধরে ডায়ালিসিস ইউনিট বন্ধ রয়েছে। তাই ওয়ার্ডে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে কী করণীয় জেনে ব্যবস্থা নিতে বলে দিয়েছিলেন ডায়ালিসিস ইউনিটের চিকিৎসকেরা।

১২ মে ডায়ালিসিস বিভাগে দেখাতে গিয়েছিলেন নিউ জলপাইগুড়ির বাসিন্দা ভবেশ রায়। দরিদ্র পরিবার। তা সত্ত্বেও কিডনির সমস্যায় হাঁটাচলা করতে পারছেন না দেখে অনেক কষ্টে অটো ভাড়া করে এসেছেন। ডায়ালিসিস করার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসক। কিন্তু মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তা হবে না জেনে হতাশ তিনি। তাঁকে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে যেতে পরামর্শ দিয়েছেন ডাক্তাররা। একই রকম ভাবে ডায়ালাইসিস বিভাগ থেকে ফিরে যেতে হয়েছে সাহুডাঙির বাসিন্দা পরাণ রায়, প্রবীর ছেত্রী, নিপু মণ্ডলদের।

শুধু ডায়ালিসিস ব্যবস্থাই নয়, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সিটি স্ক্যান যন্ত্র বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে গত কয়েক মাস ধরে। সে কারণেও অনেক রোগীকে বাইরে থেকে সিটি স্ক্যান করাতে হচ্ছে। যারা পারছেন না তাদের শিলিগুড়ি হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে।

গত দুই মাস ধরে ডায়ালিসিস ব্যবস্থার যন্ত্র এবং সিটি স্ক্যান যন্ত্র খারাপ থাকায় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা মিলছে না রোগীদের। তা সত্ত্বেও কেন কতৃর্পক্ষ সমস্যা মেটাতে তৎপর নন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষ করে গরিব পরিবারের রোগীদের পক্ষে নার্সিংহোমে মোটা টাকা খরচ করে ডায়ালিসিস, সিটি স্ক্যান করা সম্ভব নয়। হাসপাতালের সুপার সব্যসাচী দাস বলেন, ‘‘ডায়ালিসিস করার জন্য একটি ‘ডিএম পিউরিফায়ার’ যন্ত্র রয়েছে। তাতে জল পরিস্রুত হয়। সেই যন্ত্রটি অকেজো হয়ে পড়েছে। সিটি স্ক্যান যন্ত্রটি পুরনো হয়ে পড়েছে। সেটা আর বেশি দিন চালানো যাবে না। মাঝে মধ্যেই নষ্ট হয়ে পড়েছে। যন্ত্র দুটি সারানোর জন্য কোম্পানিকে বলা হয়েছে। কলকাতা থেকে লোক আসার কথা। উত্তরবঙ্গে তাদের লোক নেই। সে জন্য বিলম্ব হচ্ছে।’’ তবে সুপারের দাবি, ‘‘দিন দুয়েক আগে যন্ত্র সারানোর লোক এসে পৌঁছেছে। আশা করি দ্রুত যন্ত্র সারিয়ে সেগুলির পরিষেবা চালু করা সম্ভব হবে।’’

কিছুদিন আগে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে ডায়ালিসিস ইউনিট এবং সিটি স্ক্যান যন্ত্র চালু হওয়ায় কিছু রোগীকে সেখানে পাঠিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে হচ্ছে। কিন্তু এত দিন ধরে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের ডায়ালিসিস ব্যবস্থার যন্ত্রাংশ খারাপ হয়ে পড়ে থাকলেও কেন দ্রুততার সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি চিকিৎসক এবং স্বাস্থ কর্মীদের একটি অংশ তা নিয়ে কর্তৃপক্ষের ভূমিকায় হতাশা প্রকাশ করেছেন। রোগীদের একাংশ যাতে এখানে পরিষেবা না পেয়ে বাইরের বিভিন্ন নার্সিংহোমগুলিতেই যান সে জন্যই কৌশলে এ সব চলছে বলে অভিযোগ। এমনকী কিছু রোগী দালালদের খপ্পড়ে পড়ে বিভিন্ন নার্সিংহোমেও যাচ্ছেন বলে হাসপাতালেরই কর্মী, চিকিৎসকদের একাংশই জানিয়েছেন।

চিকিৎসা করাতে আসা ভবেশবাবু বলেন, ‘‘অটো করে নিউ জলপাইগুড়ি থেকে হাসপাতালে এসেছিলাম। অথচ চিকিৎসক বলল ডায়ালিসিস যন্ত্র খারাপ এখানে হবে না। আর কিছু বললেন না। আমাদের মতো গরিব পরিবারের পক্ষে নার্সিংহোমে গিয়ে ডায়ালিসিস করার সাধ্য নেই।’’ মেয়ে অসুস্থ হয়ে কাতরাতে থাকায় উদ্বিগ্ন রফিলা খাতুন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা লেখা পড়া জানি না। কী হয়েছে না হয়েছে তাও বুঝতে পারছি না। কিন্তু গত সোমবার মেয়ে মোমিনাকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়। মলমূত্র বন্ধ হয়ে মেয়ের শরীর ফুলে উঠেছে। যন্ত্র খারাপ থাকায় এখানে চিকিৎসা হচ্ছে না বলে জানতে পারি। কেন যন্ত্র তাড়াতাড়ি ঠিক করা হচ্ছে না বুঝতে পারছি না।’’

dialysis machine out of order citi scan machine out of order north bengal medical college
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy