মাত্রাতিরিক্ত প্যারাসিটামল না খাইয়ে, সতর্ক থেকে বাড়িতেই ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। প্রতীকী ছবি।
অ্যাডিনোভাইরাস সংক্রমণের প্রথম দিন থেকেই তীব্র জ্বর থাকছে শিশুদের। যা চলছে অন্তত তিন থেকে পাঁচ দিন। তাতে ঘাবড়ে গিয়ে মাত্রাতিরিক্ত প্যারাসিটামল না খাইয়ে, সতর্ক থেকে বাড়িতেই ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। তাই, অন্য কোনও বিপজ্জনক লক্ষণ না থাকলে বাড়িতে রেখে কী ভাবে শুশ্রূষা করতে হবে, তারও নির্দেশিকা জারি করেছে স্বাস্থ্য দফতর।
শহরের এক চিকিৎসকের কথায়, “বেশির ভাগ ক্ষেত্রে জ্বরের তীব্রতা কমানোর জন্য বাবা-মা এত বেশি চিন্তিত থাকছেন যে, তাঁরা অন্য দিকগুলির সে ভাবে খেয়াল রাখছেন না। ফলে, বিপদের লক্ষণ চোখে পড়ছে না। তাতেই বাচ্চারা সঙ্কটজনক হয়ে পড়ছে।” ‘ইনস্টিটিউট অব চাইল্ড হেলথ’-এর পেডিয়াট্রিক ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিটের (পিকু) প্রধান চিকিৎসক প্রভাসপ্রসূন গিরি জানাচ্ছেন, অন্যান্য ভাইরাসের থেকে অ্যাডিনোভাইরাসের চরিত্র আলাদা। অন্য ভাইরাসে আক্রান্ত হলে মৃদুজ্বর, সর্দি-কাশি দেখা দিলেও তা দু’-তিন দিনে কমে যায়। কিন্তু অ্যাডিনোভাইরাসে আক্রান্তদের প্রথম থেকেই ১০২ ডিগ্রি বা তার থেকেও বেশি মাত্রায় জ্বর থাকছে। চোখ লাল হয়ে যাচ্ছে। ওষুধ দিয়েও জ্বরের মাত্রা নামছে না। তাঁর কথায়, “জ্বর কবে নামবে, তা নিয়ে চিন্তা করলে হবে না। এখানে মনে রাখতে হবে, জ্বরের তীব্রতাকমলেও রোগটা সারছে না। অনেকেই বেশি মাত্রায় এক থেকে দু’ঘণ্টা অন্তর প্যারাসিটামল দিচ্ছেন। তাতেশরীরে ‘প্যারাসিটামল টক্সিসিটি’ (বিষ) তৈরি হচ্ছে।”
এই জায়গাতেই সতর্ক করেছে স্বাস্থ্য দফতরও। জানানো হয়েছে, খুব বেশি হলে চার ঘণ্টা অন্তর দিনে পাঁচ বার প্যারাসিটামল দেওয়া যাবে। শিশুকে বেশি পরিমাণ জল ও তরল খাওয়াতে হবে, যাতে শরীরে জলশূন্যতা তৈরি না হয়। ওষুধে জ্বর না কমলে, সাধারণ তাপমাত্রারজলে গা মুছিয়ে এবং মাথা ধুইয়ে দিতে হবে। নির্দিষ্ট সময় অন্তর জ্বরের মাত্রা পরীক্ষা করতে হবে। শ্বাসের গতি, অর্থাৎ, বুকের ওঠানামা, প্রস্রাবের পরিমাণ এবং খাওয়াদাওয়ায় নজর রাখতে হবে। সর্দিতে নাক বন্ধ হয়ে গেলে স্যালাইন জলের ফোঁটা দিয়ে পরিষ্কার করা যেতে পারে। বমির ভাব থাকলে তার ওষুধ দিতে হবে।
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, প্রথম থেকে রোগীকে বাড়িতে রেখেঠিক মতো নজরদারি চালালে হাসপাতালে ভর্তি এড়ানো সম্ভব। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পিকু-র প্রধান চিকিৎসক মিহির সরকারের কথায়, ‘‘দু’বছরের কম বয়সি যে সব শিশুর হৃৎপিণ্ডে জন্মগত ফুটো বা ফুসফুসের সমস্যা রয়েছে এবং জন্মের সময়ে ওজন দু’কেজির কম ছিল, তাদেরই ঝুঁকি বেশি। যারা ভর্তি হচ্ছে, তাদের মধ্যে বেশির ভাগেরই এমন সমস্যা দেখা গিয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy