E-Paper

সর্দি-কাশির মধ্যে লুকিয়ে করোনাও, মারাত্মক নয় বলে আশ্বাস ডাক্তারদের

চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, বহু ক্ষেত্রেই অন্য রোগ নিয়ে ভর্তি হওয়া রোগীর রুটিন করোনা পরীক্ষায়, পজ়িটিভ রিপোর্ট আসছে। মাস কয়েক আগে করোনা ভাইরাসের নতুন উপপ্রজাতি ‘কেপি.২’-র খোঁজ মিলেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ মে ২০২৪ ০৭:০৫

— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

তীব্র গরমে জ্বর-সর্দি-কাশির সমস্যা লেগেই রয়েছে। তার মধ্যেই করোনাও ইতিউতি নিজের অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে। গত এক সপ্তাহে শহরের এক বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসা পাঁচ জন রোগীর দেহে করোনা ভাইরাস ধরা পড়েছে। তার মধ্যে তিন জন অবশ্য ছাড়া পেয়ে বাড়ি ফিরেছেন। দু’জন এখনও চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে খবর। তবে, করোনা নিয়ে অযথা আতঙ্কিত না হওয়ার কথাই বলছেন চিকিৎসকেরা। তাঁদের কথায়, ‘‘ওই ভাইরাস সংক্রমণ নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে, তেমনটা তো নয়। তবে সেটি এখন আগের মতো মারাত্মকও নয়।’’

শুধু শহরের ওই বেসরকারি হাসপাতালই নয়। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, বহু ক্ষেত্রেই
অন্য রোগ নিয়ে ভর্তি হওয়া রোগীর রুটিন করোনা পরীক্ষায়, পজ়িটিভ রিপোর্ট আসছে। মাস কয়েক আগে করোনা ভাইরাসের নতুন উপপ্রজাতি ‘কেপি.২’-র খোঁজ মিলেছে। করোনার ওমিক্রন প্রজাতির ওই সাব-ভেরিয়েন্ট (কেপি.২)-এর প্রকোপে আমেরিকায় অনেকে আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে। সম্প্রতি দেশেও নতুন ওই উপপ্রজাতির সন্ধান মিলেছে। মহারাষ্ট্রে ‘কেপি.২’ সাব-ভেরিয়েন্টের কারণে অনেকে সংক্রমিত হয়েছেন। সেই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে এ রাজ্যেও করোনা আক্রান্তের খোঁজ মেলায় কি নতুন করে উদ্বেগের পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে?

স্বাস্থ্য অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত এখানে নতুন ওই সাব-ভেরিয়েন্টের কোনও খোঁজ মেলেনি। আর রাজ্যে করোনা নিয়ে উদ্বেগের কোনও পরিস্থিতিও তৈরি হয়নি। বিষয়টি এখন ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো হয়ে গিয়েছে। তাই দুশ্চিন্তার কারণ নেই।’’
চলতি বছরের শুরুতে ‘জেএন.১’ উপপ্রজাতির প্রকোপ কিছু ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছিল। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, রাজ্যে আট জনের শরীরে ওই উপপ্রজাতির অস্তিত্ব মিলেছিল। কিন্তু তার পরে আরও তেমন ভাবে কোনও খোঁজ মেলেনি। সংক্রামক রোগের চিকিৎসক যোগীরাজ রায়ের কথায়, ‘‘করোনা এখন স্থায়ী ভাবে রেসপিরেটরি ইলনেস ভাইরাসে পরিণত হয়েছে। ফলে অন্যান্য ভাইরাসের মত সেটিরও প্রকোপ থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। আর, যাঁরা আক্রান্ত হচ্ছেন তাঁদের সকলেরই মৃদু-করোনা হচ্ছে বলা যায়।’’

চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, করোনা সংক্রমণের হওয়ার কারণে রোগীরা মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়ছেন, তেমনটা নয়। তবে অন্যান্য রোগে সঙ্কটজনক অবস্থায় ভর্তি হওয়া কিছু রোগীর রুটিন পরীক্ষায় করোনা পজ়িটিভ আসছে। যেমন, শহরের বেসরকারি হাসপাতালে যে
পাঁচ জনের করোনা ধরা পড়েছিল, তাঁরা সকলেই কোনও না কোনও অস্ত্রোপচারের জন্য ভর্তি হয়েছিলেন। জনস্বাস্থ্য বিষয়ক চিকিৎসক অনির্বাণ দলুই জানাচ্ছেন, করোনা এমন একটি ভাইরাস যা মাঝেমধ্যেই নিজের চরিত্র বদল করে ফিরে আসবে। আর সেটাই প্রত্যাশিত। এই চরিত্র বদলের মধ্যে দিয়েই ওই ভাইরাসের জিনগত পরিবর্তনও হবে। জিনের সেই গঠনগত পরিবর্তনের মধ্যে দিয়েই বোঝা যায়, ভাইরাসটির মারণ ক্ষমতা কেমন হবে।

তাঁর কথায়, ‘‘তবে সমস্ত গঠনগত পরিবর্তনই খারাপ বা মারাত্মক ভাবে প্রভাব ফেলবে, তা কিন্তু নয়। যদিও যত বারই মিউটেশন হবে তত বারই সংক্রমিতের সংখ্যা একটু বাড়বে। কিন্তু সেটা বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে পড়বে কি না, বেশি মানুষের মৃত্যু হবে কি না, তা এখনই নিশ্চিত ভাবে বলা যাবে না। এর জন্য সমস্ত পরিবর্তনের উপরে নজর রাখতে হবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

cough and cold Cough Corona virus

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy