Advertisement
E-Paper

পুজোর বেড়ানো জমে উঠুক, সঙ্গে থাকুক ফার্স্ট এড বক্স

মাথা ব্যথা কিংবা ট্র্যাভেলারস ডায়রিয়া থেকে শুরু করে পা মচকে যাওয়া অথবা তেড়ে জ্বর— যে কোনও সমস্যার মোকাবিলায় তৈরি থাকতে হবে।

সুমা বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৮ ১৯:৩১
এখন বাড়িতে বসেই কোঁকড়ানো চুল পান।

এখন বাড়িতে বসেই কোঁকড়ানো চুল পান।

বেড়ানোর প্ল্যানিং তো অনেক আগে থেকেই সারা। ট্রেন কিংবা বিমানের টিকিট থেকে শুরু করে হোটেল অথবা হোমস্টে-র খোঁজ খবর, এমনকি গাড়ির ড্রাইভারের সঙ্গেও কথাবার্তা সারা। কিন্তু ব্যাগের সঙ্গে ফার্স্ট এড বক্স গুছিয়েছেন তো? সঙ্গে রাখুন কিছু দরকারি ওষুধ। পরামর্শ দিলেন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দীপঙ্কর সরকার।

বেড়াতে তো যাচ্ছেন, কিন্তু সঙ্গে ওষুধ নিয়েছেন তো? মাথা ব্যথা কিংবা ট্র্যাভেলারস ডায়রিয়া থেকে শুরু করে পা মচকে যাওয়া অথবা তেড়ে জ্বর— যে কোনও সমস্যার মোকাবিলায় তৈরি থাকতে হবে তো!এই সাবধানতাটুকু না নিলে আচমকা অসুবিধায় পড়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই বেড়াতে যাওয়ার ব্যাগ গুছনোর সঙ্গে সঙ্গে ওষুধের কিট সঙ্গে নিতে ভুললে চলবে না। ট্রাভেল মেডিসিন কিটে কী কী ওষুধ নিতে হবে তা নির্ভর করে কোথায় বেড়াতে যাচ্ছেন তার ওপর। পাহাড়ে গেলে জ্বর, সর্দি, পা মচকে যাওয়ার ঝুঁকি থাকতে পারে। সেই মতো ব্যাগে ওষুধ রাখতে হবে। আবার সমুদ্রে গেলে ত্বকের সমস্যা ও ডায়রিয়া হওয়ার ঝুঁকি থাকে। সেক্ষেত্রে অ্যান্টি ইচিং ক্রিম, অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল জেল, প্রোবায়োটিক আর অ্যান্টি ডায়রিয়াল মেডিসিন নিয়ে যেতে হবে। ইদানীং অল্পস্বল্প পেটের সমস্যায় প্রোবায়োটিক দেওয়া হয়।

কী কী থাকবে ফার্স্টএড বক্সে

বড়রা না জানলেও বাড়ির ক্ষুদে সদস্যরা ভাল মতোই জানে, ব্যান্ডেড, তুলো, বিটাডিনের মতো অ্যান্টিসেপ্টিক লোশন ও ক্রিম তো নিতেই হবে। কেটে ছড়ে গেলে নিওস্পিরিন জাতীয় পাউডার লাগালে ঝটপট রক্ত বন্ধ হয়, সংক্রমণে ঝুঁকিও থাকে না। চোট লাগলে অ্যানালজেসিক স্প্রে ঝটপট আরাম দিলেও বরফ লাগানো দরকার। তবে বরফ তো আর বাড়ি থেকে নিয়ে যেতে পারবেন না। হোটেলেই পেয়ে যাবেন। বক্সে ছোট্ট একটা কাঁচি রাখলে ভাল হয়। সঙ্গে থাকুক এক পাতা প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধে। চোট লাগুক বা আচমকা জ্বর, কাজে লাগবে। সহযাত্রী কিংবা প্রত্যন্ত পাহাড়ি গ্রামে কারও দরকার হলে কাজে লাগবে। একটু তুলো আর ক্রেপ ব্যান্ডেজও রেখে দিতে পারেন ফার্স্ট এড বক্সে।

আরও পড়ুন: পুজোর বেড়ানো জমে উঠুক, সঙ্গে থাকুক ফার্স্ট এড বক্স​

আরও পড়ুন: শরতের এই-মেঘ এই-বৃষ্টির মতো প্যান্ডেলের পারিজাতকে ভাল লাগার শুরু​

অ্যান্টি অ্যালার্জিক ভুলবেন না

শহর ছেড়ে দূরে পাড়ি দিলে ও দূষণ কিন্তু অনেক সময়ই পিছু ছাড়েনা। অনেক সময় দূষণ না থাকলে ও ফুলে ফুলে ভরা পাহাড়ি গ্রাম চোখ আর মনকে আরাম দিলেও শ্বাসনালী বা ফুসফুসের সঙ্গে বৈরিতা তৈরি করতে পারে।হ্যাঁ, ফুলের রেণু থেকে হাঁচি, কাশি বা শ্বাস কষ্টের ঝুঁকি থাকে।বিশেষ করে যাদের অ্যালার্জিক রাইনাইটিস বা হাঁপানি আছে, তাঁদের আচমকা অ্যালার্জিক অ্যাটাক হতে পারে। এমনকি অনেক সময় সমুদ্রের পাড়ে গেলে ও নারকেল গাছের ফুলের রেণু থেকে অ্যালার্জির অ্যাটাক হতে পারে। প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টি অ্যালার্জিক মেলা মুশকিল। তাই হাউস ফিজিশিয়ানের সঙ্গে কথা বলে কিছু অ্যালার্জির ওষুধ সঙ্গে রাখুন।

আরও পড়ুন: অসুখের ভ্রূকুটিতে পুজোর আনন্দে কাটছাঁট? রইল দরকারি সমাধান​

সঙ্গে রাখুন ওআরএস

বেড়াতে গিয়ে ডায়রিয়া বিশ্বের সমস্ত ভ্রমণার্থীদেরই সাধারণ সমস্যা। এই ধরনের ডায়রিয়ার আর এক নাম ট্র্যাভেলার্স ডায়রিয়া। তাই বেড়াতে গেলে খাওয়া দাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জলের ব্যাপারেও খেয়াল রাখতে হবে।খুব বেশি ভাজা বা একেবারে অচেনা খাবার খেয়ে বিপদে পড়বেন না।বিশেষত সঙ্গে যদি বাচ্চা ও বয়স্ক মানুষ থাকেন, পরিচ্ছন্ন রেস্তোরাঁতে খাওয়ার চেষ্টা করুন।তবুও সমস্যা হতে পারে।ওষুধের বাক্সে জিঙ্কট্যাবলেটের সঙ্গে ওআরএস নিতে ভুলবেন না।পেটে ব্যথার থেকে রেহাই পেতে ডিকলিক জাতীয় ওষুধদেওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া ডম পেরিডন জাতীয় বমির ওষুধ ও অ্যাসিডিটি প্রতিরোধে প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর গ্রুপের ওষুধ সঙ্গেরাখা দরকার।লেহ, লাদাকের মত সুউচ্চ পাহাড়ে গেলে সঙ্গে অবশ্যই নিতে হবে অল্টিচিউড সিকনেস ট্যাবলেট। যাদের হাঁপানি বা সিওপিডি আছে,তাঁদের আচমকা শ্বাসকষ্ট শুরু হতে পারে। সেক্ষেত্রে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে প্রয়োজনীয় ওষুধ সঙ্গে রাখা একান্ত প্রয়োজন। আর ইনহেলার, রোটাহেলার তো নিতেই হবে। তাৎক্ষনিক কষ্ট কমানোর জন্যে যে ইনহেলহার ব্যবহার করা হয়, তা তো নিতেই হবে, সঙ্গে রাখতে হবে প্রিভেন্টিভ ইনহেলারও।

প্রেশার, সুগার ও ইস্কিমিয়া থাকলে

ভয় পেয়ে ঘরের কোণে বসে থাকার কোনও মানে হয় না। অবশ্যই বেড়াতে যাবেন। তবে একবার চেক আপ করিয়ে নিয়ে তবেই ব্যাগ গোছান। সঙ্গে নিন প্রয়োজনীয় ওষুধ। আচমকা বুকে ব্যথা করলে সরবিট্রেট জাতীয় ওষুধ নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্যানিক না করে কাছাকাছি কোনও হাসপাতালে যেতে হবে। আর যাদের সুগার ওঠানামা করে এবং ইনসুলিন ব্যবহার করেন তাঁরা অবশ্যই সঙ্গে রাখুন চকোলেট। আচমকা সুগার ফল করে গেলে চকোলেট খেয়ে নিন। ইদানীং বাড়িতে প্রেশার ও সুগার মাপার ইলেকট্রনিক যে মেশিনগুলো পাওয়া যায়, তা সঙ্গে রাখলে ভাল হয়। নিশ্চিন্তে মনের আনন্দে বেড়ান, ভয় পেয়ে মন খারাপ করে ঘরে বসে থাকবেন না। পুজোর দিনগুলো আনন্দে কাটুক, ভাল থাকুন।

Durga Puja Celebration 2018 Durga Puja Special Durga Puja Nostalgia Kolkata Durga Puja Durga Puja Preparations
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy