Advertisement
E-Paper

প্রতি বছর দেশে আক্রান্ত ১ কোটি, করোনা আবহে চোখের এই সংক্রমণে সতর্ক থাকুন

দেরিতে আসা বর্ষার আর্দ্র আবহাওয়ায় কনজাংটিভাইটিসের মতো কিছু চোখের সমস্যার ঝুঁকি বাড়ছে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০২০ ১৭:৩৩
চোখের সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে। ফাইল ছবি।

চোখের সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে। ফাইল ছবি।

জ্বর-সর্দি তো ছিলই, অতিমারির উপসর্গ হিসেবে একে একে যোগ হয়েছে আরও অনেক কিছুই। আর এই কারণেই পেট ব্যথা থেকে খাবারে অরুচি, স্কিন র‍্যাশ, মায় সামান্য চোখ লাল হলেও সেই কোভিড-১৯-কেই দায়ী করা হচ্ছে। এদিকে দেরিতে আসা বর্ষার আর্দ্র আবহাওয়ায় কনজাংটিভাইটিসের মতো কিছু চোখের সমস্যার ঝুঁকি বাড়ছে।

উষ্ণ ও আর্দ্র আবহাওয়ায় প্রতি বছরই এই সময়টা জীবাণুদের অতি সক্রিয়তার কারণে চোখের সংক্রমণের প্রবণতা বাড়ে, বললেন চক্ষু রোগ চিকিৎসক বিবেক দত্ত। বৃষ্টি আর গরমের যুগলবন্দিতে কনজাংটিভাইটিসের ঝুঁকি বাড়ে।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী আমাদের দেশে প্রতি বছর প্রায় ১০ মিলিয়ন মানুষ চোখের সংক্রমণ কনজাংটিভাইটিসে আক্রান্ত হন। তবে কোভিডের মতো না হলেও পিংক আই বা ‘জয়বাংলা’র মহামারি হয়েছিল ১৯৬৯ সালে ঘানায়। এবারের কোভিডের বিশ্ব মহামারিতে চোখ লাল হওয়া নিয়ে অনেকে উদ্বিগ্ন হলেও খুব বেশি যে ছড়িয়ে পড়েছে তা কিন্তু নয়, বললেন বিবেক দত্ত। বরং করোনা আবহে স্কুল কলেজ ছুটি থাকার কারণে কনজাংটিভাইটিস অন্য বারের তুলনায় কিছুটা কম। তবে বাচ্চাদের মধ্যে এই সমস্যার ঝুঁকি তুলনামূলক ভাবে বেশি।

আরও পড়ুন: প্রতিবেশী বা আবাসনে কেউ করোনা আক্রান্ত? যা যা খেয়াল রাখতেই হবে

কেন এই সংক্রমণ

মূলত সর্দি-কাশি, ভাইরাল ফিভারের মতো কিছু জীবাণু বাতাসে ভেসে চোখের পাতার নিচে সংক্রমণ ঘটায়। চোখের তারাকে যে ঝিল্লি ঢেকে রাখে, তার ডাক্তারি নাম ‘কনজাংটিভা’। ভাইরাস বাতাসে ভেসে এসে কনজাংটিভাতে আসে। তার পর দ্রুত হারে বংশ বিস্তার করে। তখনই কনজাংটিভার ‘আইটিস’ অর্থাৎ প্রদাহ হয়। এর ফলে একদিকে চোখ ফুলে লাল হয়ে যায়, বললেন বিবেকবাবু। চোখ লাল হওয়ার পাশাপাশি অনেক সময় চোখে ব্যথা করে। মনে হয় যেন চোখে ধুলোবালি জাতীয় কিছু পড়েছে, চোখ কড়কড় করে। মূলত চোখ টকটকে লাল হয়ে ফুলে যায়, কড়কড় করে ও চোখ থেকে পিছুটি পড়ে।

আরও পড়ুন: ফল বা সব্জি ধোওয়ার ক্ষেত্রে এখন কী কী বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে

কী হতে পারে

চক্ষু বিশেষজ্ঞ শুভাশিস দাস জানালেন যে চোখের এই সংক্রমণ খুব ছোঁয়াচে। চোখের জল বা নিঃসরণ থেকে বাড়ির অন্যদের তো, বটেই কাছাকাছি যাঁরা আসেন তাঁদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি থাকে। চোখ লাল হলে অনেকেই চশমা পরেন। বেশির ভাগ মানুষই রোদ চশমা পরেন রোদ্দুরের হাত থেকে চোখকে বাঁচাতে। রোদ বৃষ্টি বা জোরালো আলোয় চোখের কষ্ট বাড়ে, তাই রোদ চশমা পরার পরামর্শ দেওয়া হয়। কারও কনজাংটিভাইটিস হলে আলাদা গামছা বা তোয়ালে ব্যবহার করতে হবে। চোখে হাত দিলে জামা কাপড়ে না মুছে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিতে হবে। তা হলেই কিন্তু অনেকটাই ছোঁয়াচ বাঁচানো যায়। আর এই কোভিড আবহে যদি চোখ লাল হওয়ার পাশাপাশি জ্বর, কাশি বা গলা ব্যথা থাকে তবে অবশ্যই কোভিড-১৯ টেস্ট করাতেই হবে, বললেন শুভাশিসবাবু।

আরও পড়ুন: ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণা কোথায় কত দূর? এ নিয়ে যা যা মাথায় রাখতেই হবে​

কনজাংটিভাইটিস হোক বা চোখের অন্য কোনও সংক্রমণ, নিজে থেকে ওষুধ কিনে লাগাতে বারণ করলেন দুই চিকিৎসকই।

পরিষ্কার ঠান্ডা জলে দিনে তিন থেকে চার বার চোখ ধুতে হবে। ফাইল ছবি

এছাড়া আরও কয়েকটা নিয়ম মেনে চলতে হবে।

পরিষ্কার ঠান্ডা জলে দিনে তিন থেকে চার বার চোখ ধুতে হবে।

জোরে চোখ কচলানো একেবারেই মানা।

এই সময়টা কন্ট্যাক্ট লেন্স পরা চলবে না।

চোখের এই সংক্রমণ পুরোপুরি সারতে দিন সাতেক সময় লাগতে পারে। তবে অনেককে বেশি দিনও ভোগায়।

কনজাংটিভাইটিস ছাড়া এই সময় কর্নিয়ায় আলসার এবং অ্যালার্জির ঝুঁকিও বাড়ে, বললেন বিবেক দত্ত।

লক্ষ্য রাখতে হবে বৃষ্টির জল যেন সরাসরি চোখে না যায়।

ছাতা, চশমা ব্যবহার করার সঙ্গে সঙ্গে বেশি বৃষ্টিতে বাইরে যাওয়া বন্ধ রাখার চেষ্টা করতে হবে।

চোখের কোন অংশে সংক্রমণ

চোখের পাতা ও কনজাংটিভা ছাড়াও অনেক সময় কর্নিয়াতেও সংক্রমণ হতে পারে। সঠিক চিকিৎসায় সংক্রমণ না আটকালে কর্নিয়াল আলসার হয়ে দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হয়ে যেতে পারে, বললেন বিবেক দত্ত। তাই চোখের যে কোনও অসুবিধা হলে অবশ্যই ডাক্তার দেখানো উচিত। কোভিড-১৯ এর ভয়ে অনেকে ক্লিনিকে যেতে ভয় পাচ্ছেন। চিকিৎসকদেরও সংক্রমণের ভয় থাকে। তাই হাসপাতাল ও ক্লিনিকে যথাযথ নিয়ম মেনে বারে বারে স্যানিটাইজ করতে হয়।

ফেস মাস্ক, শিল্ড, গ্লাভস সহ যথাযথ দূরত্ববিধি মেনেই রোগী দেখা হয়। চোখ বাঁচাতে যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে ভুলবেন না। পরিচ্ছন্নতা বজায় রেখে ও পুষ্টিকর খাবার খেয়ে চোখ ভাল রাখুন।

(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।

• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)

Corona COVID-19 Coronavirus করোনা Eye Eye Care Conjunctivits Eye Infection Rain Care
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy