দুর্গাপুজো নিয়ে বছরভরের অপেক্ষা। দীর্ঘ প্রস্তুতির পর সেজে ওঠে শহর থেকে শহরতলি। চেনা ছবিটা পাল্টে যায় কয়েকটি দিনের জন্য। দুগ্গা ঠাকুর সেজে ওঠেন নানা রূপে, শিল্পীর ভাবনায়।
পুজোয় রেশ থাকে অন্দরমহলেও। ঠাকুর দেখা, জমিয়ে ভূরিভোজের পাশাপাশি বাড়ি ঘরদোর নতুন করে সাজানো হয় পুজো উপলক্ষে। তবে সেই সাজেও যদি থিমের ছোঁয়া থাকে, কেমন হয়?
কলকাতা থেকে শহরতলি—রেস্তরাঁ, হোটেলে গেলে পুজোর থিমে সাজসজ্জার অনেক ধারণা পাওয়া যায়। বিদেশেও বাঙালিদের অনেকে, শারদোৎসবে ঘরে সেই আবহ তৈরি করেন। তেমনটা করা যায় খুব সহজেই।
আরও পড়ুন:
কী কী দরকার হবে?
দুর্গামূর্তি: পোড়ামাটি, পাথর, থার্মোকল, কুলোর উপর দুর্গা, পটচিত্র— এমন অনেক কিছুই খুব সহজে পাওয়া যায়। আকারেও তা বেশ ছোটও হয়। ঘরের সঙ্গে মানানসই এমনটাই কিছু জোগাড় করে নিন।
কুলো: কুলোতে দিয়ে কিন্তু খুব সুন্দর সাবেকি সাজ হয়। কুলো সাজানো যায় নানা ভাবে। এমন রং করে ইচ্ছামতো লেখাও যায়।
চাঁদমালা: ঘর সাজাতে তৈরি করে ফেলতে পারেন চাঁদমালা। সাদা কাগজে বেশ বড় বড় ফুল তৈরি করে, মোটা দড়ির সঙ্গে নির্দিষ্ট দূরত্বে জুড়ে দিন। চাঁদমালায় যেমন শারদ শুভেচ্ছার মতো বাক্য লেখা যায় তেমনই পুজোর থিমে কাশফুল, প্রকৃতির ছবি আঁকাও যায়।
পিতলের বাসন: পিতলের পিলসুজ, পাত্র, ঘণ্টার মতো পুজোর উপকরণেও কিন্তু সাজিয়ে তোলা যায় বাড়ির একটি অংশ। ব্যবহার করা যায় মোটিফ হিসাবে। প্রজ্জ্বলিত প্রদীপ, কর্পূরের গন্ধ— পুজো আবহ তৈরি করবে।
মাটির থালা: মাটির থালায় আলপনা দিতে পারেন। এখন আবার আলপনা দেওয়া মাটির থালাও পাওয়া যায়। রাখতে পারেন মাটির বাটিও। এতে একমুঠো শিউলি, না হলে টাটকা যে কোনও ফুল ছড়িয়ে দেন।
কাশফুল
কাশফুল দিয়েসাজান ঘর। ছবি: ফ্রিপিক।
শরতের দিনে এখনও রাস্তার আশপাশে কাশের দেখা মেলে। তবে আসল ফুল সংগ্রহ করতে না পারলেও অনলাইনে নকল কাশও পাওয়া যায়।
সাজিয়ে ফেলুন
টেবিল বা দেওয়ালের একাংশ সাজিয়ে ফেুলন। উঁচু পিঁড়ে থাকলে ভাল, না হলে ছোট কোনও টুল থাকলে রংচঙে কাপড় দিয়ে মুড়িয়ে নিন। এই সব কিছু না পেলে ছোট কোনও বাক্সের ভিতরে ভাল করে কাগজ ভরে দিন। বাক্সটি রঙিন কাপড়ে মুড়ে দিন।
বাক্সের উপরে দুর্গার যেমন মূর্তি রয়েছে, সেটি বসিয়ে দিন। থার্মোকল, মাটি— যে কোনও মূর্তি ভাল লাগবে।
ব্যাকড্রপে রাখতে পারেন চাঁদমালা।‘শারদ শুভেচ্ছা’, ‘আইল উমা বাড়িতে’ এই রকম কিছু পছন্দের বাক্য কুলোয় লিখে দেওয়ালে আটকে দিন।
ফুলদানিতে রাখুন আসল বা নকল কাশফুল। দুর্গার আশপাশে টেবিলে রাখতে পারেন নকশা করা মাটির থালা, বাটি না হলে একধারে সাজিয়ে দিন পিলসুজ, কর্পূরদানি, ঘণ্টা। একটি পিতলের থালায় সব জিনিস সাজিয়ে রাখুন।
মাটির থালা ব্যবহার করলে তার উপর একমুঠো টাটকা ফুল জুড়ে দিন। শিউলি হলে ভাল। তার উপর রাখুন মাটির অথবা পিতলের প্রদীপ।
মাটির বা পিতলের বাটিতে জল দিয়ে প্রদীপ এবং ফুল ভাসিয়ে দিলেও দেখতে বেশ লাগবে।
সাজসজ্জা করতে হবে নিজস্ব রুচিতে, চোখের আন্দাজে। তা হলেই পুজোর থিমে সেজে উঠবে গৃহকোণ।