এটা স্মার্টনেসের যুগ। তাই স্কুলেও তৈরি হচ্ছে স্মার্ট ক্লাসরুম, যাতে আগামী দিনে ডিজিটাল ও বাস্তবমুখী প্রযুক্তি ব্যবহারের সুফল পায় নতুন প্রজন্ম। ঠিক তেমন ভাবেই সন্তানের ঘরও হয়ে উঠতে পারে স্মার্ট। সঠিক আসবাব, দেওয়ালসজ্জা, প্রযুক্তির ছোঁয়ায় কী করে ভোলবদল সম্ভব?
সঠিক রঙের ব্যবহার
ছোটদের ঘর মানেই উজ্জল গোলাপি, সবুজ— এমন সব রং বেছে নেন অনেকেই। তবে বদলে গিয়েছে অন্দরসজ্জার ধরন। ঘরের রং বাছাই করা দরকার, সেই ঘরে কতটা প্রাকৃতিক আলো প্রবেশ করে তার উপর ভিত্তি করেই। যদি ঘর এমন অবস্থানে হয়, যেখানে ঠিকমতো রোদ আসে না, তা হলে গোলাপি, সবুজ বা গাঢ় রং ঘরকে অন্ধকার করে তুলবে। বরং বেইজ়, অফ হোয়াইট, মিউটেড ল্যাভেন্ডার, ডাস্টি পিঙ্কের মতো কোনও হালকা শেড ব্যবহার করা যেতে পারে। যদি দেওয়ালের রং গাঢ় করতেই হয়, তা হলে কৃত্রিম আলোর সঠিক ব্যবহার জরুরি।
দেওয়ালে আর্ট
ছোটদের ঘরের দেওয়াল সাজানো যায় এই ভাবেও। ছবি: সংগৃহীত।
দেওয়ালের রং চট করে বদলানো যায় না। বদলে ছোটদের উপযোগী কোনও ‘ওয়াল আর্ট’-এর ব্যবস্থা করতে পারেন। নানা রকম কার্টুনের স্টিকার, থ্রিডি মডেল দিয়ে ঘর সাজানো যায়। জঙ্গলের বিভিন্ন চরিত্রও স্টিকারের সাহায্যে আটকে, বন্যপ্রাণী চেনানো যায় সন্তানকে। বড় হওয়ার জন্য যে যে গুণের প্রয়োজন যেমন সাহসিকতা, ধৈর্য, জ্ঞান— সেই সংক্রান্ত উদ্ধৃতি কাঠের ফ্রেমবন্দি করে ঘর সাজানো যায়। এমন অনেক জিনিসই কিন্তু অনলাইনে মেলে। না হলে পছন্দের কোনও উক্তি লিখে, সেটি কম্পিউটারে নকশা করে কাঠের ফ্রেমে আটকে দিতে পারেন। সন্তানের বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সেগুলি বদলানোও যাবে।
স্মার্ট আসবাব
চেয়ার টেবিলই হতে পারে শিশুর খেলার সাথী। ছবি: সংগৃহীত।
ঘরে থাক এমন আসবাব, যা শিশুর খেলার সঙ্গী হতে পারে। খেলতে খেলতেই শিখবে সেখানে। এমন টেবিল-চেয়ার আছে যেটি শুধু টেবিল চেয়ার হিসাবে ব্যবহার করা যায়। আবার টেবিল হয়ে যায় আঁকার বোর্ড। টেবিল সংলগ্ন দেরাজে থাকে খেলার সরঞ্জাম, ব্লক, যা দিয়ে নানা রকম আকার তৈরি করতে পারে খুদেরা। আবার গাড়ির আকৃতির, বা নানা রকম জিনিস রাখা যায় এমন আধুনিক খাট খুদের জন্য বেছে নিতে পারেন। এতে অল্প জায়গায় অনেক কিছু রাখাও যায়।
স্মার্ট খেলনা
শরীরচর্চার জন্য এ ভাবেও সন্তানকে উৎসাহিত করা যায়। ছবি : সংগৃহীত।
ঘরে থেকেই যাতে শরীরচর্চা হয়, এমন খেলার ব্যবস্থাও করা যায়। যেখানে দড়ি বেয়ে বা ছোট ছোট ধাপ বেয়ে উঠতে হবে। যেমন ‘ওয়াল মাউন্ডেড জঙ্গল জিম’। আবার কাঠ বা ফাইবারের স্লিপও পাওয়া যায়, যেখানে ধাপ বেয়ে উঠতে হয়। শিশুকে শরীরচর্চায় উৎসাহ দেওয়ার জন্য এগুলি ঘরে রাখতে পারেন। তবে নজর রাখতে হবে, যাতে খুদে একা কিছু করতে গিয়ে বিপদ না ঘটিয়ে ফেলে।
স্মার্ট গ্যাজেট
স্মার্ট গ্যাজেট রাখতে পারেন সন্তানের ঘরে। বয়স অনুযায়ী তা বাছাই করতে হবে। ছোটদেরও ল্যাপটপ হয়, যেখানে খেলার ছলেই আকার চেনা, সংখ্যা গোনা শিখতে পারে তারা। স্মার্ট টয় বা খেলনা, যেমন বা খুদের সঙ্গে কথা বলবে এমন রোবট, ম্যাগনেটিক ব্লক— এগুলি সন্তানের বুদ্ধিমত্তার বিকাশে সাহায্য করবে। সন্তান বড় হলে তার পড়াশোনার ট্যাবও রাখতে পারেন।
সঙ্গে থাক সবুজের ছোঁয়া। গাছে জল দেওয়া, গাছের ব়ড় হওয়া চাক্ষুষ করবে সে। শিখবে গাছের যত্ন নেওয়াও। অন্দরের শোভাও বাড়াবে গাছ।