সাদা, হলুদ, গোলাপি— রঙিন চন্দ্রমল্লিকায় গাছ ভরে থাকলে বাগানের রূপ পাল্টে যায়। শীতে ফুল পেতে হলে চারা বসাতে হয়ে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর থেকেই।এমনিতে এই গাছের বিশেষ পরিচর্যা লাগে না। রোদ এবং শীতের হাওয়ায় দিব্যি বেড়ে ওঠে। তবে কখনও কখনও সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় ছত্রাকের আক্রমণ, পু্ষ্টির অভাব। আর তখনই গাছ তা জানান দেয়।
বাড়ির চন্দ্রমল্লিকা চারা বেড়ে ওঠার সময় হলুদ হতে শুরু করলে বা বৃদ্ধি থমকে গেলে বুঝতে হবে, গোড়ায় গলদ রয়েছে। প্রথমে সেই ভুল খুঁজতে হবে, সেইমতো পরিচর্যা করতে হবে। ঠিক সেই কারণে জেনে নেওয়া প্রয়োজন কেন, গাছের পাতা হলুদ হতে পারে।
অতিরিক্ত জল: টবের গোড়ায় জল জমে থাকলে শিকড় পচে যায়, ফলে পাতা হলুদ হয়ে যায়।
নাইট্রোজেনের অভাব: মাটিতে পুষ্টির অভাব থাকলে, বিশেষ করে নাইট্রোজেন কম হলে নিচের দিকের পাতা প্রথমে হলুদ হতে শুরু করে।
পর্যাপ্ত সূর্যালোক: চন্দ্রমল্লিকা রোদ পছন্দ করে। পর্যাপ্ত রোদ না পেলে গাছ ফ্যাকাসে ও হলুদ হয়ে যায়।
ছত্রাকের আক্রমণ: মাটি ভিজে থাকলে, স্যাঁতসেতে আবহের জন্য ছত্রাক হানা দিতে পারে। ছত্রাকজনিত রোগের কারণে পাতার রং পরিবর্তিত হতে পারে।
আরও পড়ুন:
পোকা: পোকামাকড়ের আক্রমণেও পাতা হলুদ হয়ে কুঁকড়ে যেতে পারে।
সেই জন্যই প্রথম যে শর্তগুলি মানতে হবে—
· গাছটিকে এমন জায়গায় রাখুন, যেখানে দিনে অন্তত ৫-৬ ঘণ্টা সরাসরি রোদ পাওয়া যায়।
· প্রতি ১০-১৫ দিন অন্তর খোল পচা জল (খুব পাতলা করে) অথবা ১ চামচ হাড়ের গুঁড়ো ও পটাশ সার মিশিয়ে দিতে পারেন। ফুল আসার সময় পটাশ জাতীয় সার বেশি প্রয়োজন।
· মাটির উপরের স্তর শুকিয়ে গেলে তবেই জল দিন। গাছের পাতায় জল না দিয়ে সরাসরি গোড়ায় জল দেওয়া ভাল। গাছকে ঝাঁকড়া করতে ডগা ছেঁটে দিন।
· নিম তেল বা সাবান জল স্প্রে করুন পোকা এড়াতে। ছত্রাকের আক্রমণ রোধে মাসে দু’বার ভাল ছত্রাক নিরোধক ওষুধ জলে গুলে স্প্রে করতে পারেন।
· গাছের হলুদ পাতা বা শুকিয়ে যাওয়া ফুল নিয়মিত কাঁচি দিয়ে কেটে ফেলুন। এতে পুষ্টির অপচয় রোধ হয়।
সমাধান কী?
চারাগাছের ডগার অংশের পাতা হলুদ হতে থাকলে প্রথমেই মাটি বদলে ফেলার পরামর্শ দিচ্ছেন উদ্যানপালক। হতে পারে মাটির ভেজা ভাবের জন্য ছত্রাকের আক্রমণ হচ্ছে বা মাটিটি গাছের বেড়ে ওঠার উপযুক্ত নয়।
সাধারণ বাগানের মাটির সঙ্গে কিছুটা ভার্মি কম্পোস্ট, সামান্য শিং গুঁড়ো মিশিয়ে নিন। চন্দ্রমল্লিকা গাছটি টব থেকে আসতে করে বার করে টবের পুরনো মাটি সরিয়ে নতুন মাটি ভরে। অল্প করে জল দিয়ে হালকা রোদ আসে এমন স্থান ৩-৪দিন রেখে পরিবর্তন লক্ষ করুন। গাছের শিকড় চাড়িয়ে গেলে সরাসরি সূর্যালোকে রাখা যাবে।
ছত্রাক নিরোধক: সমস্যা ছত্রাক থেকেও হতে পারে। সে ক্ষেত্রে বাজারচলতি ছত্রাকনাশক ওষুধ বা ফাঙ্গিসাইড কিনে এক লিটার জলে দেড় বা ২ গ্রামের মতো মিশিয়ে নিন। সেই জল মাটিতে দিয়ে দিলে, গাছ সুস্থ হয়ে উঠবে। ১০ দিন অন্তর এক বার করে দিলেই চলবে।
তবে যদি সমস্যা অন্য কারণে হয়, মাটি নাইট্রোজেনের অভাব বা অন্য কিছু, সেই মতো সমাধান খুঁজতে হবে।