অনলাইনে কেনাকাটার যুগে বাড়িতে জিনিসপত্রের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এ দিকে ঘরের আয়তন একই রয়ে গিয়েছে। ফলে জিনিসের স্তূপ বেড়ে চলেছে বাড়িতে। এমন অবস্থায় ঘর গুছিয়ে রাখার কাজ অনেক বেশি কষ্টসাধ্য হয়ে গিয়েছে। সেই সমস্যা থেকে রেহাই পেতেই তৈরি হচ্ছে নানাবিধ পন্থা। এই যুগে ঘর গোছানোর জন্যেও হিসেবনিকেশের প্রয়োজন পড়ছে। তার মধ্যেই নাকি ‘৯০/৯০ নিয়ম’টি বেশ কার্যকর। নিখুঁত ছকে বাঁধা এই পন্থায় প্রত্যেকটি জিনিসের প্রতি বিশেষ নজর দিতে হবে। তবেই সফল হবেন আপনি। জেনে নিন, কী ভাবে এই কৌশল প্রয়োগ করে ঘর গোছানো শুরু করবেন। এর উপকারিতাই বা কী?
নিয়মটি কী?
‘৯০/৯০ নিয়ম’-এ যে কোনও জিনিসকে হাতে নিয়ে দু’টি প্রশ্ন করতে হয় নিজেকে। ১. ‘‘এই জিনিসটি কি আমি গত ৯০ দিনে এক বারও ব্যবহার করেছি বা প্রয়োজনে এসেছে?’’ ২. ‘‘আগামী ৯০ দিনে কি এক বারও ব্যবহার করব?’’ দু’টি ক্ষেত্রেই যদি উত্তর হয়, ‘না’, তা হলে সেই জিনিসটি বাড়িতে রেখে দেওয়ার কোনও অর্থ নেই। আর কিছু না ভেবে সেটি ফেলে দিতে পারেন।
অগোছাল ঘরকে সাজিয়ে ফেলুন চটজলদি ছবি: সংগৃহীত।
উপকারী কেন?
১. ঘরে থাকা বাড়তি জিনিসকে বিদায় জানানোর কাজ অত সহজ নয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, অনেকে সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না, আদৌ জিনিস়টি কাজে লাগবে না কি লাগবে না। তা ছাড়া অনেক সময়ে জিনিসের সঙ্গে আবেগ জড়িয়ে থাকে, তাই চট করে কোনও পদক্ষেপ করা যায় না। কিন্তু এই নিয়ম পালন করলে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কাজটি খানিক দ্রুত হয়ে যাবে।
২. ঘরদোর পরিষ্কার করার সময়ে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয় কম। সুনির্দিষ্ট নিয়ম মেনে ধাপে ধাপে জিনিসপত্রের পরিমাণ কমাতে পারেন। ফলে একটি পরিপাটি এবং প্রশস্ত স্থান তৈরি করতে খুব বেগ পেতে হয় না।
৩. অপ্রয়োজনীয় জিনিস দেখে, বুঝে বাদ দিতে হয় বলে গভীর মনোযোগের প্রয়োজন সেই সময়ে। এর ফলে পরোক্ষ ভাবে মনোযোগের ক্ষমতা বৃদ্ধি পারে। আর এখান থেকেই ‘মাইন্ডফুল লিভিং’য়ের যাত্রা শুরু হয়।
৪. এই নিয়মে বাড়ি গোছানো শুরু করলে অযথা কেনাকাটা করার প্রবণতাও কমবে। প্রয়োজন অনুসারে জিনিস বাদ দিতে থাকলে প্রয়োজন অনুযায়ী কেনার অভ্যাসও তৈরি হবে।
আরও পড়ুন:
‘৯০/৯০ নিয়ম’ প্রয়োগ করার টিপ্স
ছোট জায়গা দিয়ে শুরু করুন: গোটা ঘরের কাজ এক বারে কাঁধে নেবেন না। ছোট জায়গা দিয়ে শুরু করুন, যেমন একটি ড্রয়ার বা আলমারি, যাতে অতিরিক্ত চাপ না পড়ে। না হলে কাজের চাপ বেশি হলে ক্লান্তি তৈরি হবে, তখন ঘর গোছাতেই ইচ্ছে করবে না।
নিজের প্রতি সৎ থাকুন: দু’টি প্রশ্নের উত্তর যদি সৎ না হয়, তা হলে গোটা কাজই বৃথা। যদি আপনি নিশ্চিত না হন, তবে কিছু সময়ের জন্য জিনিসটি আলাদা করে রাখতে পারেন এবং কিছু দিন পরে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। তাই একটি আলাদা বাক্স তৈরি করতে পারেন, যেগুলির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ নয়।
সময়সীমা নির্ধারণ করুন: ব্যবহারের সময়কাল আপনিই স্থির করতে পারেন। প্রয়োজনে সেটি বেড়ে যেতে পারে, কমেও যেতে পারে। কিন্তু সেই সময়ের মধ্যে ব্যবহার করছেন কি না, তা দেখতে হবে।