কল্পনা করুন, কোজাগরী পূর্ণিমার আলোয় তাজমহলের ভিতরে বা চাতালে শুয়ে আছেন। হয় চাঁদ দেখছেন, অথবা সিলিংয়ের আশ্চর্য কারুকার্য দেখছেন। বিশ্বাসযোগ্য মনে হচ্ছে না, তাই তো? কিন্তু মধ্যপ্রদেশের শিক্ষক ও তাঁর পরিবারের ভাগ্যে কিন্তু এমন সুযোগ রোজ আসে। কারণ তাঁরা থাকেনই তাজমহলে। এ তাজমহল আগ্রায় নেই। এটি শাহজাহানের বানানো নয়। এ মুমতাজ়ের প্রতি বাদশাহের ভালবাসার নিদর্শন নয়। এ তাজমহল রয়েছে মধ্যপ্রদেশের বুরহানপুরে। এটি বানিয়েছেন আনন্দ প্রকাশ চৌকসি। এখানে রয়েছে স্ত্রীর প্রতি আনন্দের ভালবাসা।
মোটা, পুরু দেওয়াল আগলে রেখেছে বাড়িটিকে। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
আসলে বুরহানপুরের এক স্কুলের ভিতরে বানানো হয়েছে ছোট তাজমহলটি। আনন্দ প্রকাশ সে স্কুলটির প্রতিষ্ঠাতা। আর স্কুলের প্রাঙ্গণটিতেই তাঁর এই বাড়ি, থুরি প্রাসাদ। চারটি ঘর রয়েছে এতে। আসল তাজমহলের মতো গোটা বাড়িটি মাকরানা মার্বেলে তৈরি।
মিটারে আসল তাজমহলের যে ডাইমেনশন, তা এখানে ফুটে রূপান্তরিত করা হয়েছে কেবল। আসল মনুমেন্টের তিন ভাগের এক ভাগ এই নকল তাজমহলটি।
বাড়ির ছাদেও শিল্পকলার ছোঁয়া। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
বাড়িটিতে ঢোকার সময়ে দেখা যাবে, সদর দরজায় সেন্সর বসানো। অর্থাৎ আপনাআপনি খুলে যাবে দরজা। বসার ঘরটি বিশালাকার। বাড়িটি বানানো হয়েছে দুই স্তর দেওয়ালে। প্রত্যেকটি ৯ ইঞ্চি পুরু। মাঝে রয়েছে ২ ইঞ্চি ফাঁকা জায়গা। ফলে গরমেও কষ্ট হয় না এখানে। শীতেও মনোরম, আবার বর্ষাকালেও জল প্রবেশ করার কোনও সম্ভাবনা নেই। ধ্যান করার ঘর এবং গ্রন্থাগারও রয়েছে এই তাজমহলে।
শিক্ষকের বাড়ির গ্রন্থাগার এবং ধ্যান করার জায়গা। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
সদর দরজা দিয়ে ভিতরে পা রেখেই সোজাসুজি দেখা যাবে সিঁড়ি উঠে গিয়েছে। আর বাঁ পাশে বসার ঘর। সিঁড়ি উঠে দোতলায় যাচ্ছে। যেখানে আরও ঘর। বাড়িটি ডুপ্লে ধাঁচের। অর্থাৎ ছাদ একটিই। ছাদের উপরে রয়েছে একাধিক গম্বুজ।
আরও পড়ুন:
সমাজমাধ্যমে পোস্ট করা একটি ভিডিয়োয় আনন্দ জানিয়েছেন, আসল তাজমহল একটি সমাধিস্থল। কিন্তু তাঁর তাজমহলটি নেহাতই ‘একটুকু বাসা’। তবে মিল এখানেই যে, শাহজাহান আর তিনি দু’জনেই পত্নীপ্রেমের স্মারক হিসাবে তা বানিয়েছেন।