বিয়ের পরে সম্পর্কে বাঁধা পড়া দু’টি মানুষ নানা রকম চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন। কারণ এক ছাদের নীচে থাকতে আসা দু’টি আলাদা মানুষের চরিত্রগত বৈশিষ্ট্যগুলি বড্ড বেশি স্পষ্ট হয়ে চোখে পড়তে শুরু করে। যা আগে বোঝা যায়নি। সেই বদলের সঙ্গে মানিয়ে নিতে সময় লাগে। সম্পর্কের শুরুর দিকের ওই পর্বে তাই দম্পতিদের মধ্যে ঝগড়া হওয়াও অস্বাভাবিক নয়। যাঁরা নতুন বিয়ে করেছেন এবং এমন সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন, তাঁরা বলিউড অভিনেতা নীল নিতিন মুকেশের অভিজ্ঞতা থেকে শিখতে পারেন। সম্প্রতি তিনি নিজের অভিজ্ঞতা এবং দাম্পত্য থেকে পাওয়া শিক্ষা ভাগ করে নিয়েছেন অনুগামীদের সঙ্গে।
সিনেমার পর্দায় যতই প্রেম-বিয়ে এবং তার পরে আজীবন সুখে থাকার বিষয়টিকে উজ্জ্বল ভাবে দেখানো হোক, বাস্তবে তারকারাও বিয়ের পরে মনোমালিন্য, ঝগড়াঝাঁটি, মান-অভিমানের সমস্যার মুখে পড়েন। এক পডকাস্টে নীল তাঁর বিয়ের শুরুর দিকের সমস্যা নিয়ে খোলাখুলি কথা বলেছেন। নীল বলেছেন, ‘‘আমার স্ত্রীর সঙ্গে আমার বয়সের তফাত কিছুটা বেশি। ও আমার থেকে অনেকটাই ছোট। আমার মনে আছে বিয়ের পরে যখন আমরা পরস্পরকে জানছি, তখন আমাদের মধ্যেও ঝগড়া হত। সেই ঝগড়া অবশ্য চিৎকার-চেঁচামেচি নয়। কিন্তু ঝগড়া হলেই ফোন যেত আমার শাশুড়িমায়ের কাছে।’’

এক পডকাস্টে নীল তাঁর বিয়ের শুরুর দিকের সমস্যা নিয়ে খোলাখুলি কথা বলেছেন। ছবি: সংগৃহীত।
বিয়ের পরে দু’টি মানুষ তাঁদের মধ্যে বয়সজনিত, ব্যক্তিত্বজনিত চারিত্রের তফাতের সঙ্গে মানিয়ে নিতে সময় নেন। তফাত থাকে দু’জনের পরিণতবোধেও। দাম্পত্য নিয়ে কথা বলতে গিয়ে নীল সেই সমস্যাকেই চিহ্নিত করেছেন। তিনি বলছেন, ‘‘আমার স্ত্রী এমনিতে পরিণতমনস্ক হলেও তার মধ্যে কিছু ছেলেমানুষি স্বভাব রয়েছে। দাম্পত্যের শুরুর দিকে সেই স্বভাব সম্পর্কে আমি অবগত ছিলাম না। ধীরে ধীরে বুঝেছি এবং তার সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছি। আমারও অনেক স্বভাব এবং আচরণের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছে ও।’’
নীলের ওই অভিজ্ঞতা এবং সদ্যবিবাহিত দম্পতিদের মধ্যে বোঝাপড়ার অসুবিধা প্রসঙ্গে মুম্বইয়ের এক মনোবিদ অঞ্জলি গুরসাহানে বলছেন, ‘‘সম্পর্ক মানেই দু’টি মানুষের মধ্যে থাকা চারিত্রিক পার্থক্যের মধ্যে বোঝাপড়া। ওই সমস্ত পার্থক্য যেমন চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসে, তেমনই সম্পর্কের বাঁধন আরও শক্ত করার সুযোগও দেয়। বিয়ের প্রথম দিকে দম্পতিরা বোঝাপড়ার সমস্যায় ভুগলে তাঁরা কয়েকটি বিষয় মেনে চলতে পারেন। যাতে সম্পর্কের বাঁধন আরও জোরালো হয়।”
১। সঙ্গীর মনোভাব ভাল না কি মন্দ সেই বিচার করতে না বসে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি বোঝার চেষ্টা করুন। তাতে দু’জনের মধ্যে বিশ্বাস বাড়বে। বাড়বে ধৈর্যও।
২। দু’জনের মধ্যে চারিত্রিক তফাতকে সমস্যা বলে না ভেবে মনে করুন ওই তফাতগুলিই আপনাদের সম্পর্কে রোমাঞ্চ আনবে। তা না হলে সম্পর্ক একঘেয়ে হয়ে যেত।
৩। পরস্পরের সঙ্গে কথা বলে কিছু লক্ষ্য আর কিছু সীমারেখা স্থির করুন, যা ব্যক্তিগত এবং চরিত্রগত পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও মেনে চলবেন। তাতে পরস্পরকে সম্মান দেওয়ার চেষ্টা বাড়বে।