সকাল ৯টায় বাড়ি থেকে বেরোনোর কথা। হয়তো কাউকে সেই সময় দেওয়াও আছে! জোর দিয়ে বলেছেন, ওই সময়েই বেরোবেন। কিন্তু পারলেন না। একটার পর একটা কাজে জরিয়ে কী ভাবে যেন সময় পেরিয়ে গেল বুঝতেই পারলেন না!
বা হয়তো অফিসের কাজ নির্দিষ্ট সময়ে শেষ করার কথা। কিন্তু কিছুতেই ওই সময়ের মধ্যে হাতের কাজ শেষ করে উঠতে পারেন না। দিনের পর দিন ছুটির সময় পেরিয়ে যায়। কিন্তু শেষ হয় না কাজ। ফলে রোজ দেরি, রোজ ক্লান্তি, রোজ শরীরের উপর অত্যাচার। হয়তো রোজ রোজ দেরির জন্য আশপাশের মানুষজনের থেক অপ্রিয় কথা শোনাও।
কোনওটিই মানসিক বা শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্য ভাল নয়। কিন্তু এই দীর্ঘসূত্রিতা থেকে মুক্তি পাবেন কী করে? মনোবিদেরা বলছেন, দীর্ঘসূত্রিতার সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে হলে প্রথমে ওই সমস্যার মূলে পৌঁছোতে হবে। তবে তা ছাড়াও পাঁচ কৌশলে দীর্ঘসূত্রিতার সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
১। নিজের কাজকে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে নিন। ধরুন আপনাকে কোনও একটি বিষয়ে বিস্তারিত লিখতে হবে। তা হলে লেখাটাকে ভূমিকা, ছোট ছোট বিষয় যা আপনি বলতে চান, তাদের মধ্যে সম্পর্ক এবং শেষে কোন উপসংহারে পৌঁছোতে চান, তা আগে লিখে নিন। কিংবা যদি কোথাও বেরনোর থাকে তবে তার আগে আপনাকে কী কী করতে হবে, তা আগে থেকে হিসাব করে গুছিয়ে নিন। একে একে কাজ শেষ করুন। তাতে সময়ে কাজ শেষ করতে সুবিধা হবে।
২। ৫ মিনিটের নীতি মেনে চলুন। এই নীতির মূল বিষয় হল, নিজেকে বলতে হবে, ‘‘আমি ঠিক পাঁচ মিনিট মন দিয়ে কাজ করব।’’ কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই ৫ মিনিট মন দিয়ে কাজ শুরু হলে তা আর ৫ মিনিটে থেমে থাকে না। তা দীর্ঘায়িত হয় এবং ৫ মিনিট মন দিলেই কাজের প্রতি বাড়তি আগ্রহ জন্মায়।
৩। অন্যমনস্কতার কারণগুলিকে সরিয়ে রাখুন। এমন কিছু, যাতে আপনার মনঃসংযোগ বেপথু হতে পারে, তা হাতের কাছে রাখবেন না। মোবাইল ফোন, অপ্রয়োজনীয় কথা বলেন এমন মানুষের থেকে দূরে থাকুন। দরকার হলে নিজের ঘরে ‘ডু নট ডিস্টার্ব’ বোর্ড লাগিয়ে রাখুন। কিংবা কম্পিউটারের নোটিফিকেশন থেকে বাঁচতে ‘ডু নট ডিস্টার্ব’ মোড অন করে কাজ করুন।
৪। দীর্ঘ ক্ষণ মন দিয়ে ভাল কাজ করলে নিজেকে পুরস্কৃত করুন। ধরুন টানা ২ ঘণ্টা মন দিয়ে কাজ করেছেন। বা সময়ে কাজ শেষ করেছেন। তা হলে নিজেকে উৎসাহ দেওয়ার জন্য ৩০-৪০ মিনিটের বিরতি নিন। বা পছন্দের খাবার খেয়েও মন ভাল করতে পারেন।
৫। নিজেকে প্রশ্ন করুন, কেন এই কাজটি সময়ে শেষ করা আপনার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। যদি ‘কেন জরুরি’— এই প্রশ্নের উত্তর আপনার কাছে পরিষ্কার হয়, তবে তা শেষ করার আগ্রহও বেশি থাকবে।