ছবি: সংগৃহীত।
এডিস মশা মানুষের মধ্যে ডেঙ্গি ছড়ায় দু’ভাবে।প্রথমত, ডেঙ্গি রোগীর রক্ত খাওয়ার পর মশার শরীরে ভাইরাসের বংশবৃদ্ধি হয়। এর আট থেকে দশ দিন পর ওই মশা যদি কোনও সুস্থ ব্যক্তিকে কামড়ায় তা হলে তার ডেঙ্গি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
দ্বিতীয়ত, ডেঙ্গি রোগীর রক্ত খাওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গেই ওই মশা যদি সুস্থ ব্যক্তিকে কামড়ায় তা হলে পাঁচ থেকে ছ’দিনের মধ্যে সেই ব্যক্তি ডেঙ্গি জ্বরে আক্রান্ত হতে পারে।
আক্রান্ত ব্যক্তির পেটে ব্যথা, বার বার বমি হওয়া, অস্থিরতা ভাব, লিভার বড় হয়ে যাওয়া, রক্ত পরীক্ষায় প্লেটলেট কমে যাওয়া ইত্যাদি যে কোনও উপসর্গ দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন বা নিকটবর্তী কোন হাসপাতালে রোগীকে নিয়ে যেতে হবে। কারণ এগুলি ডেঙ্গির সতর্কীকরণ লক্ষণ।
আরও পড়ুন: এ বার হাজির ডেঙ্গি এনসেফালাইটিস
ডেঙ্গি হয়েছে কিনা নিশ্চিত হতে মূলত তিনটি পরীক্ষা করা হয়।
ডেঙ্গি নির্দিষ্ট এন এস ওয়ান অ্যান্টিজেন, আই জি এম(IgM) অ্যান্টিবডি এবং আই জি জি (IgG) অ্যান্টিবডি নির্ণয়ের জন্য। জ্বর হওয়ার পাঁচ দিনের মধ্যে এন এস ওয়ান অ্যান্টিজেন পজিটিভ পাওয়া যায়। পাঁচ দিন পর রক্তে আসে আই জি এম অ্যান্টিবডি। আই জি জি অ্যান্টিবডি আসে ডেঙ্গি সংক্রমণের অন্তত একমাস পর। এলাইজা (ELISA) পদ্ধতিতে এই পরীক্ষাগুলি করা হয়, এবং এই সব কটি পরীক্ষাই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) দ্বারা স্বীকৃত।
আরও পড়ুন: চরিত্র বদল করছে ডেঙ্গির ভাইরাস
এন এস ওয়ান অ্যান্টিজেন এবং আই জি এম অ্যান্টিবডি কিছুদিন পর রক্ত থেকে মিলিয়ে যায়। কিন্তু আই জি জি অ্যান্টিবডি রক্তে থেকে যায় সারাজীবন। কেউ যদি ডেন-১ সেরোটাইপে ভুগে থাকেন তা হলে পরবর্তীতে ওই ডেঙ্গি ভাইরাস তার শরীরে প্রবেশ করলেও কিছু হবে না। কারণ, ততদিনে আই জি জি অ্যান্টিবডি সেই প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করেছে। কিন্তু যদি ডেন ২, ৩ বা ৪ সেরোটাইপে আক্রান্ত হন, তখন আই জি জি অ্যান্টিবডি তা চিনতে পারে না। ফলে প্রতিরোধও করতে পারে না। একে বলে সেকেন্ডারি ডেঙ্গি ইনফেকশন। এই ডেঙ্গি কিন্তু মারাত্মক আকার নেয়।
সতর্কীকরণ
ডেঙ্গি সন্দেহ হলে যত শীঘ্র সম্ভব রোগ নির্ণয় করে চিকিৎসা শুরু করতে হবে।
মশারির ব্যবহার আবশ্যিক।
প্রচুর জল খেতে হবে। বারে বারে অল্প করে খাবার খান। স্বাভাবিক খাওয়া দাওয়া বজায় রাখুন।
পরিপূর্ণ বিশ্রাম নিন।
বাড়ির আশপাশ এবং ভিতরে জল জমতে দেবেন না।
অযথা আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকুন। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলুন। প্রয়োজনে হাসপাতালে স্থানান্তরিত করুন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy