Advertisement
E-Paper

চেনা আদরেই অচেনা বিকার

অতি-চেনা আত্মীয় থেকে পাড়ার গা ঘেঁষা পড়শি— অপার বিশ্বাসে যার গা ছুঁয়ে দাঁড়ায় শিশুটি, তার হাতেই যৌন নির্যাতনের অনায়াস শিকার হতে পারে সে।

দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৮ ০২:৩২
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

রোগের নামটা তেমন চেনা নয়, আদপে তা যে আস্ত একটা রোগ, চেনা নয় তাও। তবে, মুখগুলো বড় চেনা। চেনা, তাদের হাবভাব, তাদের আদরের আদবকায়দাও জানা জরুরি। সে রোগের নাম, পিডোফিলিয়া।

অতি-চেনা আত্মীয় থেকে পাড়ার গা ঘেঁষা পড়শি— অপার বিশ্বাসে যার গা ছুঁয়ে দাঁড়ায় শিশুটি, তার হাতেই যৌন নির্যাতনের অনায়াস শিকার হতে পারে সে। এ ঘটনা আকছার। মঙ্গলবার নবদ্বীপে মানসিক প্রতিবন্ধী কল্যাণ কেন্দ্র ‘মনন’ আয়োজিত ‘যৌন নির্যাতন এবং শিশু সুরক্ষা’ শীর্ষক আলোচনায় উঠে এল সে কথাই।

চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, এটা এক ধরনের মানসিক অসুখ। শিশুদের যৌন নির্যাতন করে এরা এক ধরনের আনন্দ অনুভব করে। তার মধ্যে শারীরিক সুখানুভূতি তেমন থাকে না, পুরোটাই মানসিক বিকার। শিশু ধর্ষণের অধিকাংশ ঘটনার জন্য এঁরাই দায়ী। সাধারণ মানুষ অনেকেই এই বিকার সম্পর্কে অবহিত নন। তাঁদের সচেতনতার অভাবে অনেক সময় বিকারগ্রস্ত মানুষদের থেকে শিশুকে তাঁরা হয়তো রক্ষা করতে পারেন না। অসুরক্ষিত হয়ে পড়ে শিশু। সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শিশু ধর্ষণের একাধিক ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছে মানুষকে। তার সূত্র ধরেই আয়োজিত হয়েছে এই সভা। সভায় একাধিক বক্তার কথায় উঠে এসেছিল ‘পিডোফিলিয়া’ প্রসঙ্গ। বিশেষজ্ঞ বক্তা কৃষ্ণমূর্তি বিশ্বনাথন, শ্যামল ঘোষকে উপস্থিত দর্শকদের অনেকে প্রশ্ন করেন, কী ভাবে চিহ্নিত করা যায় এই বিকারগ্রস্তদের? কোনও বিশেষ অভ্যাস কি দেখা যায় এদের মধ্যে, যা দেখে সতর্ক হওয়া যাবে?

তিনটি লক্ষণ চিহ্নিত করেছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রথমত, এরা শিশুকে আদর করবে। দ্বিতীয়ত, শিশুকে উপহার দেবে। তৃতীয়ত, নানা ছুতোয় আড়ালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবে বা আদরের বাহানায় শিশুর বিভিন্ন অঙ্গ স্পর্শ করবে। মহিলাদের মধ্যেও এ প্রবণতা দেখা যেতে পারে।

মনোবিদেরা জানান, শিশু যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে কি না তা বুঝতে শিশুর ব্যবহারে নজর রাখতে হবে, তার সঙ্গে একটা সময় ধৈর্য ধরে কথা বলে তার বিশ্বাস ও বন্ধুত্ব অর্জন করতে হবে, যাতে সে নিজের মনের কথা ভাগ করে নিতে পারে। কোনও শিশু যদি চুপ করে যায়, ভয়ে থাকে, কাউকে দেখলে কুঁকড়ে যায়, তা হলে পরিবারের সদস্যদের সচেতন হতে হবে। শিশুর দেহে, বিশেষ করে যৌনাঙ্গে আঘাতের চিহ্ন আছে কি না সেটা অভিভাবকদের খেয়াল রাখতে হবে। কারণ অনেক শিশু তাদের সঙ্গে কী হচ্ছে সেটা বুঝতেও পারে না বা অভিভাবকদের বোঝাতেও পারে না। সেই সুযোগটাই নেয় কিছু মানুষ।

যেমন, দ্বিতীয় শ্রেণির মেয়েকে চকোলেট কিনে দেবে বলে হাত ধরে হাঁটতে শুরু করেছিল নাকাশিপাড়ার হরনগরের বছর পঞ্চাশের আনিসুর শেখ। বাঁশঝাড়ে নিয়ে গিয়ে শিশুটির উপর অত্যাচার চালিয়ে পালায় সে। রাজ্য শিশু কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী জানান, বহু শিশু যৌন নির্যাতনের শিকার। বাড়ি হোক বা বাইরে—তার নিরাপত্তা সঙ্কটে।

Pedophilia Mental diesease
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy