করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় তরঙ্গের রেশ কাটতে না কাটতেই থার্ড ওয়েভের অশনি সঙ্কেত দেখা যাচ্ছে ডেল্টা প্লাস স্ট্রেনের সংক্রমণে। ইতিমধ্যেই দেশের বেশ কয়েকটি রাজ্যে সংক্রমণ হয়েছে এই নতুন স্ট্রেনের মাধ্যমে। কী এই ডেল্টা প্লাস স্ট্রেন? প্রতিষেধকের দু’টি ডোজ় নেওয়া থাকলে কি তা প্রতিহত করতে পারবে এই স্ট্রেনকে? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা? জেনে নেব একে একে...
ডেল্টা প্লাস স্ট্রেনে চিন্তা কেন?
মেডিসিনের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার বললেন, ‘‘করোনা ভাইরাস টিকে থাকার জন্য বারবার জেনেটিক মিউটেশন করছে, যাতে নতুন ভাবে আক্রমণ করে মানুষের শরীরে বংশবিস্তার করতে পারে। এতে ভাইরাসের মধ্যে কিছু গঠনগত পরিবর্তন হয়েছে। আর এই ভাইরাস প্রত্যেক বার নিজেদের পাল্টে ফেলায় এদের নতুন স্ট্রেনের নামকরণ করা হচ্ছে। আলফা, বিটা, গামার মতোই এই ডেল্টা স্ট্রেন। এই স্ট্রেনও আবার নিজেদের মধ্যে জেনেটিক কিছু পরিবর্তন ইতিমধ্যেই করে ফেলেছে। সেটাই হল ডেল্টা প্লাস। এ ছাড়াও অনেক ভ্যারিয়েন্ট আছে।’’ দ্বিতীয় তরঙ্গ যখন এ দেশে আছড়ে পড়ে, তখন করোনার এই ডেল্টা স্ট্রেন বেশি সক্রিয় ছিল, তার সঙ্গে প্রথম বারের স্ট্রেনেরও পার্থক্য পাওয়া গিয়েছিল। মিউটেশনের ফলে ভাইরাস যখন নিজের পরিবর্তন ঘটাচ্ছে, তাতে সে দুর্বলও হয়ে পড়তে পারে, আবার আগের তুলনায় বেশি শক্তিশালীও হয়ে উঠতে পারে। জেনারেল ফিজ়িশিয়ান সুবীর কুমার মণ্ডলের কথায়, ‘‘বহুকোষী জীবের তুলনায় এককোষী জীব বা ভাইরাসের মতো কণার মিউটেশন অনেক সহজে হয়। মিউটেটেড স্ট্রেন যদি আগের তুলনায় দুর্বল হয়ে পড়ে, তাকে নিয়ে তো আর চিন্তাভাবনার দরকার নেই। কিন্তু এ ক্ষেত্রে এত আলোচনা হচ্ছে কেন, সেটা বুঝতে হবে। কারণ এই নতুন ডেল্টা প্লাস স্ট্রেনে কয়েকটি বিষয় চিন্তার। প্রথমত, এর ফুসফুসের প্রতি অত্যধিক অ্যাফিনিটি। অর্থাৎ রোগীর শরীরে ঢুকেই ফুসফুসে আক্রমণ করার প্রবণতা বাড়ছে। ফলে শ্বাসকষ্ট ও ফুসফুসজনিত নানা সমস্যা বেশি মাত্রায় দেখা দিতে পারে। দ্বিতীয়ত, কিছু দিন হল মোনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি দিয়ে রোগীদের চিকিৎসা শুরু হয়েছিল। এতে কৃত্রিম ভাবে ল্যাবে তৈরি অ্যান্টিবডি রোগীকে দেওয়া হত। ফলে শরীরে ভাইরাস প্রবেশ করলে এই অ্যান্টিবডি যুঝে নিত। কিন্তু নতুন ডেল্টা প্লাস স্ট্রেনের ক্ষেত্রে এই চিকিৎসা কার্যকর হচ্ছে না।’’