নিজস্ব চিত্র।
হাতে তৈরি গয়নার কদরই আলাদা। দোকান থেকে কেনা মেশিন-কাট গয়না যতই বাহারি হোক না কেন, হাতে তৈরি গয়না একেবারে অন্য রকম। সেই সব গয়নায় মিলেমিশে থাকে নিজের কল্পনা, আদর আর যত্ন। ফলে জ্যামিতিগত ভাবে সে কাজ নিখুঁত না হলেও সেই সব সৃষ্টি নিজেরাই স্বয়ংসম্পূর্ণ। গলার হার, চোকার, দুল, টিকলি, আংটি, রিস্টলেট, চুড়ি... হাতে তৈরি করা যায় সব কিছুই। তার উপকরণও কম নয়। পুঁতি, উল, রেশমি সুতো, পাথর, ডোকরা, মাটি, গাছের বীজ, নানা ধরনের কাগজ, কাঠ, ধাতু... চাইলে সমস্ত কিছু দিয়েই বানিয়ে ফেলা যায় সে সব।
প্রত্যেক বছরই ট্রেন্ড বদলায়। গত কয়েকটি বছর ধরে গয়নার ট্রেন্ডে ছোঁয়া লাগছে পরিবেশ-বান্ধবতার। ফলে সুতো, গামছা, কাপড়ের পাড়, মাটির উপরেই বেস করে তৈরি হচ্ছে গয়না। সঙ্গে জুড়ে যাচ্ছে থিম। দুর্গাপুজোর সাবেক দুর্গামূর্তি, ত্রিশূল, গণেশ, সরস্বতী, লক্ষ্মী তো আছেই। সাহিত্য-সিনেমাও অনুপ্রাণিত করছে গয়নাকে। ফলে হারের চওড়া লকেটে কোথাও ‘পথের পাঁচালী’ তো কোথাও কল্লোলিনী তিলোত্তমার ছবি। এ ছাড়াও পেঁচা, মাছ, হাঁস, কচ্ছপজাতীয় মোটিফ তো থাকছেই।
মোল্টেন ক্লে, পোড়ামাটি, সেরামিক নিয়ে এ বার সুজয়প্রসাদ চট্টোপাধ্যায় তৈরি করেছেন সুজয় প্রসাদ ফ্যাশন অ্যাকসেসরিজ় (লেখার ছবিগুলি)। তাঁর গয়নার অনুষঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে মাছ, জলডুবি গাছ, একরঙা হলুদের বেড়াজাল ভেঙে রঙিন সূর্যমুখী ফুল, সমসাময়িক ডুডল, পোড়ামাটি ও সেরামিকের মিলমিশে দরজার মোটিফ, কথোপকথনের রূপক, কাঁথাশিল্প। পাটভাঙা নতুন শাড়ি বা ডাংরি... গয়না মানাবে সব পোশাকের সঙ্গেই। হাতে তৈরি গয়না ভাঙছে লিঙ্গ, বয়সের সীমারেখা। বাড়ছে এমন থিমের জনপ্রিয়তা, যা প্রবহমানতার বার্তা দেয়। ধর্ম, কুসংস্কার, নিপীড়িত হওয়ার দোর ভেঙে সেই থিম গান গাইছে মুক্ত আকাশে উড়াল দেওয়ার। নারী-পুরুষ ভেদে পুজোর গয়না তাই সত্যিই সর্বজনীন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy