Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
দেউলপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র

উদ্বোধনের পরেও চালু হয়নি অন্তর্বিভাগ, সমস্যায় রোগীরা

ঘটা করে মন্ত্রীদের দিয়ে উদ্বোধন করা হয়েছিল পাঁচলার দেউলপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অন্তর্বিভাগের। কিন্তু উদ্বোধনের পর প্রায় দু’মাস কাটতে চললেও অন্তর্বিভাগে রোগী ভর্তিই শুরু হয়নি এখনও।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পাঁচলা শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০০:৫৬
Share: Save:

ঘটা করে মন্ত্রীদের দিয়ে উদ্বোধন করা হয়েছিল পাঁচলার দেউলপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অন্তর্বিভাগের। কিন্তু উদ্বোধনের পর প্রায় দু’মাস কাটতে চললেও অন্তর্বিভাগে রোগী ভর্তিই শুরু হয়নি এখনও। ফলে হাতের সামনে ভাল স্বাস্থ্য পরিষেবা পাওয়ার যে আশা দেখেছিলেন এলাকার মানুষ তা কার্যত এখনও অধরাই থেকে গিয়েছে। আর তা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই ক্ষোভ জন্মেছে তাঁদের মধ্যে। অন্তর্বিভাগ চালু না হওয়া নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের যুক্তি, চিকিৎসকের ঘাটতির কারণেই এটা চালু করা যাচ্ছে না।

স্থানীয় মানুষকে স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার লক্ষ্যে দীর্ঘদিন আগে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি তৈরি হয়। প্রথম অবস্থা থেকেই চালু ছিল অন্তর্বিভাগ ও বহির্বিভাগ। কিন্তু চিকিৎসকের অভাবে বছর তিরিশ আগে অন্তর্বিভাগটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। কোনওরকমে বহির্বিভাগটি খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলতে থাকে। এর পর তৈরি হয় পাঁচলা ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও গাববেড়িয়া স্টেট জেনারেল হাসপাতাল। কিন্তু দু’টিই এখান থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে। তাই স্থানীয় মানুষের কথা ভেবে রাজ্য সরকার দেউলপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিকে উন্নততর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র (আপগ্রেডেড প্রাইমারি হেল্থ সেন্টার) করার সিদ্ধান্ত নেয়। পরিকল্পনা হয় সেখানে ১০টি শয্যা থাকবে। চালু করা হবে ছোটখাটো অস্ত্রোপচার সেই সঙ্গে প্রসূতি বিভাগ-সহ অন্য চিকিৎসা পরিষেবার উন্নতি। সেই অনুযায়ী ১০ শয্যার ব্যবস্থা হয়। অস্ত্রোপচারের জন্য আনা হয় প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি। কিন্তু প্রয়োজনীয় চিকিৎসকের অভাবে সে সব পড়েই ছিল। স্থানীয় মানুষের চাপে স্বাস্থ্য দফতর ফের এখানে অন্তর্বিভাগ চালু করার সিদ্ধান্ত নেয়। গত ১৫ জুলাই বিশাল অনুষ্ঠান করে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ও জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের উপস্থিতিতে রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায়, সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, হাওড়া সদরের সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় এর উদ্বোধন করেন। কিন্তু উদ্বোধনই সার। অন্তর্বিভাগে এখনও একজন রোগীও ভর্তি করা যায়নি। পাঁচলার ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক গৌতম পাইক বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য দফতরকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তারা চিকিৎসক নিয়োগের আশ্বাস দিয়েছেন।’’ যদিও জেলা ও ব্লক স্বাস্থ্য দফতরের উদ্যোগে ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন এক জন করে চিকিৎসক পাঠানো হয় বহির্বিভাগের জন্য।

চিকিৎসকের ব্যবস্থা না করেই কেন অন্তর্বিভাগের উদ্বোধন হল?

এ বিষয়ে গৌতমবাবুর বক্তব্য, ‘‘দু’জন চিকিৎসককে স্বাস্থ্য দফতর পাঠিয়েছিল। কিন্তু তাঁরা কেউ কাজে যোগ দেননি। তাই সমস্যা বেড়েছে। বর্তমানে ৪ জন নার্স, একজন ফার্মাসিস্ট ও ১ জন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মী রয়েছেন মাত্র।’’

স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে দিনে গড়ে শ’খানেক রোগী হয়। দেউলপুর, বলরামপুর, রুদ্রপুর, জুজারসাহা-সহ খান দশেক গ্রামের লোক এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রের উপর নির্ভর করতেন। কিন্তু স্বাস্থ্যকেন্দ্রেরর এমন অবস্থায় বাধ্য হয়ে এলাকার লোকেদের ১০ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে ব্লক হাসপাতাল বা গাববেড়িয়া স্টেট জেনারেল হাসপাতাল যেতে হচ্ছে। দেউলপুর বাসিন্দা অশোক দাস, দেবাশিস ঘোষ খেদের সঙ্গে জানান, যোগাযোগের ব্যবস্থা খারাপ থাকায় রোগীদের কম দুর্ভোগ পোহাতে হয়না। কিন্তু উপায় কী। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অন্তর্বিভাগটি চালু হলে এই ঝামেলা পোহাতে হত না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

panchla deulpur primary health center
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE