Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
Eye Care

চোখের সমস্যায় দেরি নয়

নানা কারণে বাচ্চাদের চোখে আসতে পারে সিলিন্ড্রিকাল পাওয়ার। সে ক্ষেত্রে কী সমস্যা হয়, চিকিৎসা হবে কী ভাবে, জেনে নিন বিশদে।

—প্রতীকী চিত্র।

নবনীতা দত্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০২৪ ০৯:০৫
Share: Save:

স্কুলে বোর্ড দেখতে সমস্যা হয় অদ্রিজার। বারবার সে উঠে একটা কোণ থেকে বোর্ড দেখে। ক্লাসে মাঝেমধ্যেই উঠে দাঁড়িয়ে পড়ায়, বেঞ্চ থেকে বেরিয়ে গিয়ে বোর্ড দেখায় বকুনিও জোটে তার। পরে ডাক্তার দেখাতে, তার চোখে সিলিন্ড্রিকাল পাওয়ার ধরা পড়ে।

অনেক বাচ্চাই এমন সমস্যার সম্মুখীন হয়। চক্ষুবিশেষজ্ঞ দেখালে হয়তো ধরা পড়ে চোখের পাওয়ার। তবে চোখের পাওয়ারের ভাগ আছে। অনেক বাচ্চাদের মধ্যে সিলিন্ড্রিকাল পাওয়ার আসতে দেখা যাচ্ছে। কিন্তু কেন আসে এই পাওয়ার? সমস্যাই বা কতটা গভীর?

কী সমস্যা হয় এই পাওয়ারে?

অপথ্যালমোলজিস্ট ডা. মৃণ্ময় দাস বললেন, “সিলিন্ড্রিকাল পাওয়ার মানে যে কোনও একটা অ্যাক্সিসে পাওয়ার। কর্নিয়ার শেপের উপরে এই পাওয়ারটা নির্ভর করে। সিলিন্ড্রিকাল পাওয়ার থাকলে চোখে দেখতে পাবে না, এমন নয়। আসলে অক্ষরগুলো ডিসটর্টেড হয়ে যায়। চোখ ভাল থাকলে আমরা যেটা পি পড়ছি, সিলিন্ড্রিকাল পাওয়ার থাকলে হয়তো তারা সেটা ডি বা ও পড়বে। রাউন্ড শেপটা হয়তো বদলে যাবে। সিলিন্ড্রিকাল পাওয়ারে শেপগুলো বদলে যেতে থাকে। ফলে পড়তে অসুবিধে হয়।” সিলিন্ড্রিকাল পাওয়ার ছাড়া আর একটা হল স্ফেরিক্যাল পাওয়ার। এটা নির্ভর করে চোখের দৈর্ঘ্যের উপরে। “চোখটা যদি স্বাভাবিকের চেয়ে বড় হয়, তা হলে মাইনাস পাওয়ার আসে। আর স্বাভাবিকের চেয়ে ছোট হলে প্লাস পাওয়ার আসে,” বলে জানালেন ডা. দাস।

— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

কোন উপসর্গে নজর রাখতে হবে?

অনেক বাচ্চাই বারে বারে চোখ রগড়ায়। অনেক শিশুর চোখে অ্যালার্জির সমস্যা থাকে। চোখ লাল হয়ে যায়, জল গড়ায়। এদের ক্ষেত্রেই সিলিন্ড্রিকাল পাওয়ার আসার প্রবণতা বেশি দেখা যায় বলে জানালেন ডা. দাস। ‘‘সাধারণত গরমে এই ধরনের অ্যালার্জি হয়। তখন ধুলো-ধোঁয়ায়, শুকনো আবহাওয়ায় এই ধরনের অ্যালার্জির প্রবণতা বাড়ে। তবে অ্যালার্জি না থাকলেও এই পাওয়ার আসতে পারে চোখে।” তাই বাচ্চা যদি ঠিকমতো বোর্ড দেখতে পাচ্ছে না বলে, বারবার চোখ রগড়ায়, চোখ থেকে জল গড়ানোর মতো সমস্যা থাকে, তখনই চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে।

এর চিকিৎসা কী?

ডাক্তার চোখের পাওয়ার অনুযায়ী চশমা দেবে। তবে সিলিন্ড্রিক্যাল পাওয়ারের ক্ষেত্রে চশমার একটা অ্যাক্সিসে পাওয়ার থাকে। আবার যদি চোখে স্ফেরিক্যাল ও সিলিন্ড্রিক্যাল পাওয়ার দুটোই থাকে, তা হলে পুরো চশমায় স্ফেরিক্যাল পাওয়ার ও একটা অ্যাক্সিসে সিলিন্ড্রিক্যাল পাওয়ার থাকবে। এই দুটো পাওয়ারই বাড়তে বা কমতে পারে। “তবে অনেক সময়ে কিছু কিছু রোগের জন্যও সিলিন্ড্রিকাল পাওয়ার আসে, তার মধ্যে উল্লেখ্য হল কেরাটোকোনাস। এ ক্ষেত্রে কর্নিয়াটা ক্রমাগত পাতলা হতে থাকে। তাই যাদের সিলিন্ড্রিকাল পাওয়ার বেশি, তাদের জন্য মাঝেমধ্যেই আমাদের পরীক্ষা করে দেখতে হয় যে, সেটা কোনও রোগের জন্য হচ্ছে কি না,” বলে জানালেন ডা. দাস।

— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

কী কী সাবধানতা জরুরি

  • সব সময়ে চশমা পরতে হবে।
  • চোখ রগড়ানো চলবে না।
  • স্ক্রিনটাইম কমাতে হবে, বিশেষ করে মোবাইল।
  • চিকিৎসকের পরামর্শ মতো চোখের পরীক্ষা করানো জরুরি।
  • সিলিন্ড্রিকাল পাওয়ারের ক্ষেত্রে পাওয়ার যেমন পাল্টে যেতে পারে, তেমনই অ্যাক্সিসটাও বদলে যেতে পারে। অর্থাৎ ছোট বয়সে যে অ্যাক্সিসে দেখতে সমস্যা হত, পরে হয়তো অন্য অ্যাক্সিসে সেই সমস্যা দেখা দিতে পারে।

আর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনে করালেন চিকিৎসক মৃণ্ময় দাস। আট বছর বয়স অবধি ভিশন তৈরি হয়। তাই আট বছর বয়স পর্যন্ত বাচ্চাকে পরিষ্কার দেখতে হবে। তবেই তার ভিশন বা দৃষ্টিশক্তি সম্পূর্ণ তৈরি হবে। না হলে কিন্তু দৃষ্টিশক্তি কমজোরি থেকে যাবে। তাই চোখে পাওয়ার থাকলে সব সময়ে চশমা পরার পরামর্শ দিচ্ছেন ডা. দাস।সন্তানের চোখের যত্ন নিতে হবে সতর্ক ভাবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Eye Care Eye Care Tips Eye Problems Children
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE