পড়াশোনার মন বসানোর উপায় বলে দিলেন মনোবিদ। ছবি: সংগৃহীত।
মনের নিয়ন্ত্রণ সব সময় নিজের হাতে থাকে না। পড়াশোনা হোক কিংবা রান্না— মন না দিলে কোনও কিছুই ভাল হয় না। মনের অস্থিরতার নেপথ্যে নানা কারণ থাকতে পারে। ইদানীং অবশ্য ফোনের প্রতি আসক্তি তার একটা কারণ। কিন্তু সেটাই একমাত্র নয়। মন বসানোর এই সমস্যাটি সবচেয়ে বেশি প্রকট হয় পড়াশোনার ক্ষেত্রে। বিশেষত সামনে যদি বড় পরীক্ষা থাকে। তা হলে তো এই মন বসাতে না পারা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে। কিন্তু কোন উপায়ে মন বসতে পারে পড়াশোনায়? মন স্থির হবে কোন পথে? সে সব নিয়েই আনন্দবাজার অনলাইনের ফেসবুক এবং ইউটিউব পেজে আলোচনায় মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ সপ্তাহের বিষয় ‘মন বসাতে পারি না! কী করে বলব?’
প্রতি বারের মতো এ সপ্তাহেও বহু চিঠি পেয়েছেন মনোবিদ। বেশির ভাগই পড়াশোনায় মন বসাতে না পারার সমস্যা নিয়ে। মনোবিদ পর্ব শুরু করলেন নিকিতার চিঠি পড়ে। নিকিতা লিখেছেন, ‘‘পড়াশোনার ক্ষেত্রে মন বসানোর সমস্যা আমার ছোটবেলা থেকে। কখনও পূর্ণমাত্রায় ভাল ছাত্রী হিসাবে নিজেকে দেখতেও পারিনি। আর মন বসাতেও পারিনি। যখনই বইয়ের কোনও অধ্যায় মনের মতো হয় না, ঠিক সেই সময় নানা ভাবনা এসে জুড়ে বসে মনে। অবান্তর, অপ্রয়োজনীয় কথা মাথায় আসে। আমি একটু আত্মপ্রশ্রয়ীও বটে। কলেজে যখন অধ্যাপকেরা পড়াচ্ছেন, মন দিয়ে সব শুনি না। ফলে চ্যাপ্টারটাও মাথায় ঢোকে না। সহপাঠীদের দেখেছি তাঁরা দক্ষ ভাবে মনস্থির করে পড়তে পারছে। শুধু আমিই পারছি না।’’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অন্য এক তরুণী লিখেছেন, ‘‘আমার বয়স ২৬। সরকারি চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছি। কিন্তু আর্থিক অনটন রয়েছে। বাবার একটি ব্যবসা ছিল। সেটিও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। পরিবারে যে দুর্যোগ নেমে এসেছে তার কারণে আমাকে অনেক অপমান সহ্য করতে হচ্ছে। বাড়ির সকলে মনে করেন পড়াশোনা করা মানে বিলাসিতা। তাঁদের কাছে চাকরি করাটা জরুরি। আমার কাছেও সেটা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সেটার যে প্রস্তুতি নিতে তার জন্য যে মন আর পরিবেশ দরকার, দুটোর কোনওটাই পাচ্ছি না।’’
প্রত্যেকেই জানাচ্ছেন যে, পথ মনকে আয়ত্ত আনার চেষ্টা করেছি, সেই পথটা বড্ড কঠিন হয়ে পড়ছে। মন কিছুতেই কথা শুনছে না। মন মাঝেমাঝেই পাড়ি দিচ্ছে অন্যত্র। এই অবস্থায় মনকে ফিরিয়ে আনার উপায় কী? মনোবিদের উত্তর, ‘‘মনকে ফিরিয়ে আনার আগে এক বার জানা জরুরি যে, মন কোথায় কোথায় চলে যাচ্ছে। কাজ করার সময় যে কারণে মন বিক্ষিপ্ত হচ্ছে, এবং যে জায়গাগুলিতে মনের অবাধ বিচরণ, সেখান থেকে কিছু তো নিশ্চয়ই প্রাপ্তি আছে। যে ভাবনাগুলি আসলে মনের মধ্যে জাঁকিয়ে বসছে তার প্রত্যেকটির সঙ্গে আমাদের সংযোগ আছে। অতএব, মন যখন বসে না, কিন্তু মন যে দিকে গিয়ে বসে আগে একটু সে দিকে নজর দেওয়া জরুরি। কিংবা আরও একটা কাজ করা যায়। কাজের সময় মনের মধ্যে যে ভাবনাগুলি বাসা বাঁধছে সেগুলি একটা খাতায় লিখে রাখুন। এবং ভাবনাকে বলুন যে, তাদের কাছে কিছু ক্ষণ পরে ফিরবেন আপনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy