Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
Recipes

অসমের পাকশালায় স্বাগত

আমাদের বাঙালি রান্নার সঙ্গে অসমিয়া রান্নার বেশ মিল আছে। আবার ছোট-ছোট উপকরণের ব্যবহারে একই রান্নার স্বাদে বিস্তর ফারাক। কিছু সুস্বাদু অসমিয়া পদের রন্ধনপ্রণালী দিলেন রূপালী রায় চৌধুরী।

হাহ্ জোহা কুমুরা ভূতজলোকিয়া। ছবি: সর্বজিৎ সেন।

হাহ্ জোহা কুমুরা ভূতজলোকিয়া। ছবি: সর্বজিৎ সেন।

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২২ ০৮:৪৩
Share: Save:

হাহ্ জোহা কুমুরা ভূতজলোকিয়া

উপকরণ: হাঁসের মাংস ১ কিলোগ্রাম (স্কিনসমেত টুকরো করা), চালকুমড়ো ২৫০ গ্রাম, আলু ৪টি, পেঁয়াজ কুচি ২টি, আদা ২ ইঞ্চি, রসুন ১০-১২ কোয়া ও ভূতজলোকিয়া ৪টি (লঙ্কা-নুন দিয়ে থেঁতো করে নেওয়া), জিরে গুঁড়ো ১ টেবিল চামচ, হলুদ গুঁড়ো ১ চা চামচ, সরষের তেল ৬ টেবিল চামচ, নুন স্বাদ মতো, পাঁচফোড়ন ১/২ চা চামচ, শুকনো লঙ্কা ও তেজপাতা ২টি। গরম মশলা গুঁড়ো সামান্য।

প্রণালী: প্রথমে নুন, হলুদ, তেল দিয়ে মাংস মেখে নিন। এ বার আদা-রসুন বাটা, পেঁয়াজ বাটা ও লঙ্কা দিয়ে ভাল করে মেখে ২-৩ ঘণ্টা রেখে দিতে হবে। কড়াইয়ে বাকি তেল গরম করে পাঁচফোড়ন, শুকনো লঙ্কা, তেজপাতা ফোড়ন দিয়ে পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভাল করে ভাজতে হবে। পেঁয়াজ লাল হয়ে এলে মশলামাখানো মাংস দিয়ে দিতে হবে। একটু নেড়েচেড়ে জিরে গুঁড়ো দিয়ে ঢাকা দিয়ে ভাল করে কষাতে হবে। মাংস থেকে তেল ছেড়ে এলে

টুকরো করে রাখা চালকুমড়ো ও আলুগুলো দিয়ে জল দিয়ে দিন। ঢাকা দিয়ে মাঝারি আঁচে ৩০-৪০মিনিট মতো রান্না করতে হবে। মাংস ও আনাজ সিদ্ধ হয়ে গেলে গরমমশলা গুঁড়ো ছড়িয়ে গরম গরম জোহা রাইসের সঙ্গে পরিবেশন করুন।

কলা চাউলের পায়স

উপকরণ: কালো চাল ১ কাপ, দুধ ১ লিটার, চিনি ১ কাপ, কাঠবাদাম ২৫ গ্রাম, শুকনো নারকেল কুচি ১/৩ কাপ, ছোট এলাচ ৬-৭টি থেঁতো করা, তেজপাতা দু’টি, ঘি ১ টেবিল চামচ।

প্রণালি: প্রথমে চাল ২ ঘণ্টা ভিজিয়ে ভাল করে ধুয়ে নিতে হবে। এ বার একটা কুকারে ঘি গরম করে কিছুটা এলাচ ও তেজপাতা ফোড়ন দিয়ে ভেজানো চালটা দিয়ে দিতে হবে। ওর মধ্যে দেড় কাপ জল দিয়ে কুকারের ঢাকনা আটকে মাঝারি আঁচে চারটি সিটি দিতে হবে। অন্য দিকে একটি পাত্রে দুধ জ্বাল দিয়ে, বাকি এলাচ দিয়ে দিন। দুধ ঘন হতে দিতে হবে। কাঠবাদাম গরম জলে ব্লাঞ্চ করে কুচি করে নিতে হবে। দুধ ঘন হলে ওর মধ্যে সিদ্ধ করা চাল, চিনি, বাদাম, নারকেল সব দিয়ে আরও ১০মিনিট ফুটিয়ে নিলেই তৈরি।

মাছব টেঙা

উপকরণ: রুই মাছ ৬ টুকরো, আলু ২টি (সিদ্ধ), চালতা ১টা টুকরো করা (নুন ও হলুদ দিয়ে সিদ্ধ) বা থেকেরা ১০-১২টি জলে ভেজানো, আদা বাটা ১ চা চামচ, হলুদ গুঁড়ো ১ চা চামচ, কাঁচা লঙ্কা ৪-৫টি, ফোড়নের জন্য সামান্য মেথি ও সাদা সরষে ১/২ চা চামচ, রান্নার জন্য সরষের তেল ও নুন স্বাদ মতো।

প্রণালী: প্রথমে মাছে নুন হলুদ মাখিয়ে তেলে ভেজে নিতে হবে। এ বার কড়াইয়ে তেল গরম করে মেথি, গোটা সরষে‌ ও কাঁচা লঙ্কা ফোড়ন দিয়ে আদা বাটা, হলুদ গুঁড়ো দিয়ে ২মিনিট নেড়ে আলুটা চটকে দিতে হবে। ভাল করে মিশিয়ে আরও মিনিট দুয়েক নেড়ে জল দিয়ে চালতা দিয়ে দিন। ঝোল ফুটে উঠলে মাছ ও নুন দিয়ে ৫-৬ মিনিট ঢাকা দিয়ে রাখুন। ঝোল ঘন হয়ে গেলেই তৈরি। গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন মাছব টেঙা।

বাহ্ গাজ্ পর্ক খরিকা

উপকরণ: পর্ক ৫০০ গ্রাম (চর্বি ও স্কিন সমেত),‌ বাম্বুশুট ৫০০ গ্রাম (১/২ ইঞ্চি করে টুকরো করা), আদা-রসুন বাটা দেড় টেবিল চামচ, ভূতজলোকিয়া বা নাগা চিলি ১ টেবিল চামচ, পাতিলেবুর রস ১ চা চামচ, নুন স্বাদ মতো, সরষের তেল ১ টেবিল চামচ।

প্রণালী: প্রথমে পর্ক ও বাম্বুশুট আদা-রসুন বাটা, লঙ্কা বাটা, লেবুর রস, সরষের তেল ও নুন দিয়ে ভাল করে মেখে ১ ঘণ্টা ম্যারিনেট করে নিতে হবে। এ বার বাম্বুস্কিউয়ারে (জলে ২ ঘণ্টা ডুবিয়ে রাখতে হবে যাতে পুড়ে না যায়) একে-একে গেঁথে আগুনে ঝলসে নিতে হবে। চাইলে গ্রিল প্যানে অল্প সরষের তেল মাখিয়ে মাঝারি আঁচে ঢাকা দিয়ে ২০-২৫ মিনিট ধরে রান্না করতে হবে। তৈরি হয়ে গেলে ভূতজলোকিয়া চাটনি দিয়ে পরিবেশন করুন। চাটনি তৈরি করতে আদা-রসুন ও ভূতজলোকিয়া বাটা ১ টেবিল চামচ, পেঁয়াজ কুচি, স্বাদ মতো নুন ও লেবুর রস মিশিয়ে নিন।

টেকেলি পিঠা দি লাল সা

উপকরণ: জোহা চাল ৪ কাপ (বা যে কোনও আতপ চাল), নারকেল ১টা কুরোনো, গুড় প্রয়োজন মতো, কালো তিল ১/২কাপ (শুকনো খোলায় ভেজে গুঁড়ো করা), সামান্য সাদা তেল, নুন ১/২ চা চামচ, চিনি ২ চা চামচ।

প্রণালী: প্রথমে চাল ভাল করে ধুয়ে ২ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে। এ বার জল ঝরিয়ে শুকোতে দিতে হবে। একদম শুকনো হয়ে গেলে গ্রাইন্ডারে গুঁড়ো করে চেলে নিন। এই চালের গুঁড়োয় ১/২ চা চামচ নুন, ২ টেবিল চামচ চিনি মিশিয়ে নিতে হবে। ওর মধ্যে ১/২ কাপ জল অল্প অল্প করে দিয়ে ভাল করে মেখে আবারও চেলে নিতে হবে। একটা চায়ের কেটলিতে জল দিয়ে গ্যাসে বসাতে হবে। অন্য দিকে কেটলির ঢাকনায় অল্প তেল মাখিয়ে প্রথমে কিছুটা চালের গুঁড়ো দিয়ে ওর উপরে অল্প অল্প করে গুড়, নারকেল কোরা, তিল ছড়িয়ে দিতে হবে। তারপর আবার ওর উপরে চালের গুঁড়ো দিয়ে ভাল করে ঢেকে দিতে হবে। এ বার একটা কাপড় দিয়ে ঢাকনাটা ভাল করে বেঁধে গরম কেটলির মুখে ঢাকনাটা আটকে দিয়ে ১০-১২ মিনিট স্টিম করতে হবে। হয়ে গেলে ঢাকনার মুখ থেকে সাবধানে পিঠেটা বার করে নিতে হবে। এ ভাবে সব পিঠে তৈরি করে লাল চায়ের সঙ্গে পরিবেশন করুন।

আলু বিলাহি পিতিকা

উপকরণ: বড় আলু ৪টি (সিদ্ধ), টম্যাটো ২টি, ১টি পেঁয়াজ কুচি, ২-৩টি কাঁচা লঙ্কা কুচি, কালো তিল ১ টেবিলচামচ, সরষের তেল ২ চা চামচ, নুন স্বাদ মতো।

প্রণালী: প্রথমে টম্যাটোগুলো আগুনে পুড়িয়ে নিতে হবে (ওভেনে রোস্টও করে নিতে পারেন)। অন্য দিকে শুকনো খোলায় তিল ভেজে অর্ধেক গুঁড়ো করে নিতে হবে। এ বার একটা পাত্রে আলুগুলো ও টম্যাটোর খোসা ছাড়িয়ে ম্যাশ করে ওর মধ্যে বাকি উপকরণ দিয়ে ভাল করে মেখে গরম ভাত ও ডালের সঙ্গে পরিবেশন করুন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Recipes Assamese
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE