Advertisement
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
Friendship in Marriage

পরস্পরের মধ্যে বন্ধুকে খুঁজে পেয়েছেন অদিতি আর সিদ্ধার্থ! বিয়েতে বন্ধুত্ব কতটা জরুরি?

বিয়ের পরে এক সাক্ষাৎকারে তাঁর এবং সিদ্ধার্থের সম্পর্কের রসায়ন নিয়ে কথা বলেছেন অদিতি। সেখানেই তিনি জানিয়েছেন, তাঁদের দু’জনের সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী জাতীয় ভারী বিষয় নেই। অদিতি বলছেন, ‘‘আমি ওঁর সঙ্গে অনেক রকম বিষয়ে কথা বলতে পারি।’’

বিয়ের পরে এক সাক্ষাৎকারে তাঁর এবং সিদ্ধার্থের সম্পর্কের রসায়ন নিয়ে কথা বলেছেন অদিতি রাও হায়দরি।

বিয়ের পরে এক সাক্ষাৎকারে তাঁর এবং সিদ্ধার্থের সম্পর্কের রসায়ন নিয়ে কথা বলেছেন অদিতি রাও হায়দরি। ছবি : ইনস্টাগ্রাম।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৬:১১
Share: Save:

বিয়ের সম্পর্কে প্রেম বেশি জরুরি না কি বন্ধুত্ব— এ প্রশ্ন চিরকালীন। তার উত্তর নিয়েও রয়েছে মতভেদ। কেউ বলেন, বিয়ের সম্পর্ক কিছুটা ভাবগম্ভীর, ‘সিরিয়াস’ গোছের! প্রেম সেই ভাবগাম্ভীর্যকে মাধুর্য দেয়। কিন্তু বন্ধুত্ব সেই গাম্ভীর্যকে খানিকটা হলেও হালকা করে। আবার একাংশ মনে করেন, বজ্র আঁটুনিতেই গেরো ফস্কায়। বিয়ের গুরুভারের দিকটিকে বন্ধুত্ব হালকা করতে পারে বলেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তেমন সম্পর্ক থাকাটা বেশি জরুরি। সদ্য বিয়ে করেছেন বলিউড অভিনেত্রী অদিতি রাও হায়দরি এবং অভিনেতা সিদ্ধার্থ সূর্যনারায়ণ। তাঁরা তাঁদের বিবাহিত সম্পর্ককে কী ভাবে দেখেন? অদিতি বলছেন, তিনি তাঁর স্বামীর কাছে নিজেকে সহজে মেলে ধরতে পারেন। তাঁদের মধ্যে সেই জায়গাটা রয়েছে।

বিয়ের পরে এক সাক্ষাৎকারে তাঁর এবং সিদ্ধার্থের সম্পর্কের রসায়ন নিয়ে কথা বলেছেন অদিতি। সেখানেই তিনি জানিয়েছেন, তাঁদের দু’জনের সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী জাতীয় ভারী বিষয় নেই। অদিতি বলছেন, ‘‘আমি ওর সঙ্গে অনেক রকম বিষয়ে কথা বলতে পারি।’’ অদিতি জানাচ্ছেন, তাঁরা যে হেতু দু’জনেই একই পেশার জগতের সঙ্গে যুক্ত, তাই তাঁদের মধ্যে পেশাগত বিষয়েও আলোচনা হয়। কিন্তু সেই আলোচনাও হয় বন্ধুর মতো। অদিতির কথায়, ‘‘আমার মাথার তারগুলো একটু অন্য সুরে বাঁধা। নানা রকম ভাবনা চলে। হয়তো আমি একটা গল্প পড়লাম। তার পরে সেই গল্পের চরিত্র হিসাবে নিজেকে কল্পনা করে সেই গল্পে অভিনয় করার কথাও ভেবে ফেললাম। ওর সঙ্গে আমি নির্দ্বিধায় সেই সব অলীক কল্পনা ভাগ করে নিতে পারি। ও কিন্তু মন দিয়ে শোনে। তার পরে ও নিজের দৃষ্টিভঙ্গি জানায় আমাকে। আমি হয়তো বিষয়টাকে অভিনেতা হিসাবে দেখছি। ও সেটাকে এক জন পরিচালকের নজরে দেখে। অনেক সময় দেখি, ও আমাকে এমন কিছু প্রশ্ন করল, সেটা হয়তো আমারই করা উচিত ছিল নিজেকে। কিন্তু আমি করিনি। আমার যেটা ভাল লাগে তা হল, ও কখনও বলে দেয় না প্রশ্নগুলোর উত্তর কী হবে। আমার কাছে সেটা খুব দামি।’’

সেপ্টেম্বরেই তেলঙ্গানার ৪০০ বছরের পুরনো এক মন্দিরে বিয়ে করেছেন অদিতি এবং সিদ্ধার্থ।

সেপ্টেম্বরেই তেলঙ্গানার ৪০০ বছরের পুরনো এক মন্দিরে বিয়ে করেছেন অদিতি এবং সিদ্ধার্থ। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।

সিদ্ধার্থও জানিয়েছেন, অদিতিকে তিনি সব রকম ভাবে সমর্থন করতে চান। এমনকি, অদিতিকে কাজের জন্য বাইরে পাঠিয়ে বাড়িতে বসে থাকতেও তাঁর আপত্তি নেই। সিদ্ধার্থ বলছেন, ‘‘আমি তো মুম্বইয়ে আমাদের ফ্ল্যাটে আসা ওর বন্ধুদের জন্য রান্নাও করি। আমি ওকে এ-ও বলেছি যে, আমি স্বচ্ছন্দে বাড়িতে থেকে সংসার সামলাতে পারব, ও যদি উপার্জনের দায়িত্ব নেয়। কিন্তু ও-ই সেটা চায় না।’’ অদিতিকে দেখে হাসতে হাসতে সিদ্ধার্থ বলেন, ‘‘একজন নারীবাদী হিসাবে এর পরে আমার আর কিছু করার থাকে না। আমি বলেছি ঠিক আছে, তা-ই হোক!’’

গত বছর সেপ্টেম্বরেই তেলঙ্গানার ৪০০ বছরের পুরনো এক মন্দিরে বিয়ে করেছেন অদিতি এবং সিদ্ধার্থ। তার পর থেকে একসঙ্গে প্রায় পাঁচ মাস কাটিয়ে ফেললেন তাঁরা। বিয়ে নিয়ে কথা বলতে বসে দু’জনের খুনসুটিও করলেন। সিদ্ধার্থ ‘হীরামন্ডী’ ছবিতে অদিতির গজগামিনী চলনের প্রশংসা করে বললেন, ‘‘ও শুধু ক্যামেরার দিকে পিছন ফিরে দূরে চলে যাচ্ছিল, তা নিয়েই আন্তর্জাল মাতোয়ারা। আমি এটা করতে পারতাম না। অবশ্য আমি সেই চেষ্টাও করব না...।’’ সিদ্ধার্থকে এ কথার মাঝপথেই থামিয়ে অদিতি বলে ওঠেন ‘‘আচ্ছা, এ বার আমি তোমাকে দিয়ে এটাই করাব।’’

অদিতি জানাচ্ছেন, তাঁরা যে হেতু দু’জনেই একই পেশার জগতের সঙ্গে যুক্ত, তাই তাঁদের মধ্যে পেশাগত বিষয়েও আলোচনা হয়। কিন্তু সেই আলোচনাও হয় বন্ধুর মতো।

অদিতি জানাচ্ছেন, তাঁরা যে হেতু দু’জনেই একই পেশার জগতের সঙ্গে যুক্ত, তাই তাঁদের মধ্যে পেশাগত বিষয়েও আলোচনা হয়। কিন্তু সেই আলোচনাও হয় বন্ধুর মতো। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।

বোঝা যায়, অদিতি এবং সিদ্ধার্থের সম্পর্কে বন্ধুত্বই বেশি। বিষয়টি নিশ্চিত হয় অদিতির কথাতেও। তিনি বলেন, ‘‘ও মাঝেমধ্যে এত বেশি ভাবে আর এত বেশি জেনে ফেলে যে, খুব সিরিয়াস হয়ে যায়। আমি তখন ওকে বলি, চাপ নিয়ো না। সব ঠিক হবে। বরং একটু জোরে জোরে শ্বাস নাও। দেখো, সব কিছু ঠিক লাগবে।’’

দাম্পত্যে এই সহজ বন্ধুত্ব, একে অপরকে উৎসাহ দেওয়া কতটা জরুরি? মনোরোগ চিকিৎসক সন্তোষ বঙ্গার বলছেন, ‘‘দাম্পত্যে প্রতি মুহূর্তে একে অপরের পাশে থাকার উৎসাহ দেওয়ার এই সহজ আবহ আদতে সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী বানায়। একসঙ্গে বা দলবদ্ধ ভাবে কোনও কাজ করলে যেমন মনে জোর আসে, তেমনই পরস্পরের প্রতি আস্থাও বৃদ্ধি পায়। পারস্পরিক বিশ্বাস বৃদ্ধি পেলে বহু কঠিন কাজই সহজ লাগে।’’

তবে কর্মরত দম্পতিদের আরও একটি বিষয়ে খেয়াল রাখতে বলেছেন চিকিৎসক। তিনি বলছেন, এঁদের ক্ষেত্রে কাজ এবং সম্পর্ক— দুই ক্ষেত্রের জন্য সময়সীমা নির্দিষ্ট রাখতে হবে। কাজের প্রতি অতিরিক্ত মনোযোগ দিতে গিয়ে সম্পর্ক কম সময় পেলে তা সম্পর্কের ক্ষতি করতে পারে বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসক।

অন্য বিষয়গুলি:

Aditi Rao Hydari Friendship in marriage Siddharth
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy