Advertisement
E-Paper

রাতে শোয়ামাত্র ঘুমিয়ে পড়বে শিশু, একটুও দুষ্টুমি করবে না, বাবা-মায়েদের করতে হবে সহজ কয়েকটি কাজ

শিশুকে ঘুম পাড়ানো নিয়ে ঝক্কি? দিনভর খাটাখাটনির পরেও রাতে সন্তানকে ঘুম পাড়াতে গিয়ে নাকাচোবানি খেতে হয়? তা হলে জেনে নিন সহজ কয়েকটি উপায়।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০২৪ ১২:১০
Bedtime routine for kids who have a hard time asleep at night, here are the tips

সন্তানকে ঘুম পাড়ানোর সহজ উপায় জেনে নিন বাবা-মায়েরা। ছবি: ফ্রিপিক।

সন্তানকে রাতে ঘুম পাড়াতে গিয়ে রীতিমতো যুদ্ধ করতে হয়? বেশির ভাগ মা-বাবার একই অবস্থা। রাতে কিছুতেই ঘুমোতে চায় না শিশু। ঘুম পাড়াতে গেলেই কান্নাকাটি করে। রাতে বার বার জেগেও ওঠে। এতে সন্তানের স্বাস্থ্যের ক্ষতি তো হয়ই, বাবা-মায়ের হয়রানিও বাড়ে। অনেকেই বলেন, রাতে কম ঘুমোলে সকালে আর স্কুলে যেতে চায় না শিশু। আবার অসময়ে ঘুমিয়েও পড়ে। কাজেই সন্তানকে ঘুম পাড়ানো নিয়ে ঝক্কির শেষ নেই অভিভাবকদের।

চিকিৎসকেরা বলেন, ১ থেকে ৩ বছরের শিশুর ১২ থেকে ১৩ ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন। ৩ থেকে ৬ বছরের শিশুর অন্তত ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা ঘুম দরকার। ৬ থেকে ১২ বছর পর্যন্ত রাতে ৯ থেকে ১০ ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন। আপনার সন্তানের কত ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন এবং রাতে তাকে ঠিক কখন ঘুম পাড়াবেন ও সকালে কখন ঘুম থেকে তুলবেন, তা হিসাব করে দেখে নিন। এ বার সন্তানকে ঘুম পাড়ানোর জন্য নির্দিষ্ট রুটিন তৈরি করুন।

১) ঠিক সময়ে ঘুমোনোর অভ্যাস তৈরি করতেই হবে। যতই ব্যস্ততা থাকুক, সন্তানের ঘুমোনোর সময়ের যেন কোনও হেরফের না ঘটে, সেটা খেয়াল রাখুন। ছুটির দিনগুলিতেও এই রুটিন মেনে চলতে হবে। খুদেকে নিয়ে যদি বাইরে ঘুরতে যান, সেখানেও একই নিয়ম মানার চেষ্টা করুন। নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমোনোর অভ্যাস এক বার তৈরি হয়ে গেলে দেখবেন, ওই সময়েই সে ঘুমিয়ে পড়তে চাইছে।

২) এখনকার খুদেরা মোবাইল ঘাঁটাঘাঁটিতে সিদ্ধহস্ত। বিছানায় শোয়ানোর পরেও দেখবেন মোবাইল চাইছে। চেষ্টা করবেন, ঘুমোনোর অন্তত ঘণ্টা দুয়েক আগে টিভি, মোবাইল, ল্যাপটপ, ট্যাবলেট থেকে সন্তানকে দূরে রাখতে। মোবাইল বা ল্যাপটেপর আলো দীর্ঘ সময়ে চোখে পড়লে খুদের চোখের বারোটা তো বাজবেই, ঘুমেরও দফারফা হবে।

৩) ঘুমের পরিবেশ তৈরি করাও কিন্তু জরুরি। শিশুকে ঘুম পাড়ানোর সময়ে খেয়াল রাখবেন ঘরে যেন টিভি বা ল্যাপটপ না চলে। খুব জোরে গান, চড়া শব্দ যেন না থাকে। ফলে শিশুদের ঘুমে ব্যাঘাত ঘটে। শিশুকে যে বিছানায় শোয়াবেন, তা যেন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে। মাঝেমধ্যেই বিছানার চাদর বদলে দেবেন। ওর যে রং পছন্দ, সেই রঙের চাদর পাতার চেষ্টা করুন। ঘুম পাড়ানোর সময়ে মোবাইলে কার্টুন দেখাবেন না। বরং নিজেরা গল্প বলুন। এতে ওর কল্পনাশক্তির বিকাশ ঘটবে।

৪) ঘুমের সময়ে শিশু যেন কোনও রকম মানসিক চাপের মধ্যে না থাকে, সে দিকে খেয়াল রাখবেন। ঘুমের সময়ে আপনারা নিজেদের মধ্যে ঝগড়া করবেন না। বাবা-মা ঝগড়া করলে তার প্রভাব শিশু মনে পড়ে। কখনও ঘুমোনোর আগে শিশুকে ভয়ের কোনও গল্প বলবেন না। ভয় দেখিয়ে ঘুম পাড়ানোর চেষ্টা করবেন না। এতে ওর মনের উপর বিরূপ প্রভাব পড়বে।

৫) পরের দিন স্কুলে কোনও কঠিন ক্লাস বা পরীক্ষা আছে এমন কিছু বলেও তাকে ভয় পাইয়ে দেওয়া ঠিক নয়। শিশু যাতে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ে, তাই অনেক বাবা-মা এমন কথা বলে থাকেন। এতে শিশুমনে উদ্বেগ বাড়ে। স্কুল, ক্লাস, পরীক্ষার ভয় দেখাতে থাকলে ছোট থেকেই ওর মনে চাপ তৈরি হবে, যা পরবর্তী সময়ে গিয়ে সমস্যা তৈরি করবে।

৬) অনেক সময়ে দেখা যায়, বিশেষ কিছু শারীরিক সমস্যার জন্য শিশুদের ঘুম আসতে চায় না। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই ভাল। হাঁপানি থাকলে ঘুমের সময়ে শ্বাসকষ্ট হতে পারে। সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

৭) শিশুর খাওয়াদাওয়ায় বদল আনুন। ঘুমোনোর আগে এক গ্লাস দুধ খাওয়াতেই পারেন। যদি শিশুর দুধ সহ্য না হয়, তা হলে জোর করে দেবেন না। রাতের খাবার হালকা হতে হবে। রাতে কোনও রকম তেলমশলা দেওয়া খাবার, বাইরের খাবার শিশুকে দেবেন না। ঘুমোনোর আগে আইসক্রিম, চকোলেট ড্রিঙ্ক বা কোনও রকম নরম পানীয়ও যেন শিশু না খায়।

৮) সারা দিনে শিশুর জন্য খেলার সময় রাখবেন। যদি বাইরে গিয়ে খেলতে পারে, তো খুব ভাল। না হলে বাড়িতেই খেলার ব্যবস্থা করুন। এতে শারীরিক পরিশ্রম হবে, শরীর ক্লান্ত থাকলে ঘুমও আসে সহজে। আর খেললে সামগ্রিক ভাবে স্বাস্থ্য ভাল থাকবে।

Mindful Parenting Parenting Challenge
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy