সারমেয়রা মানুষের বিশ্বস্ত ‘বন্ধু’। সময়ের সঙ্গে তাদের সঙ্গে ব্যক্তির সখ্য গড়ে ওঠে। আবার তারাও একই ভাবে মনিব এবং তাঁর পরিবারের সদস্যের উপর নির্ভরশীল হয়ে ওঠে। কিন্তু জীবন তো থেমে থাকে না। পোষ্যেরও বয়স হয়।পোষ্যের মৃত্যুতে মনের উপর গভীর প্রভাব পড়তে পারে। তাই প্রিয় সারমেয়টির প্রয়াণের পর অনেকেই আবার বাড়িতে পোষ্য রাখতে পছন্দ করেন না। আবার কেউ কেউ নির্ভরতার জন্য নতুন পোষ্যের মধ্যেই পুরনোকে সঙ্গীকে খুঁজে নেন। পোষ্যদের শেষজীবনে আরও যত্নের প্রয়োজন হয়। বয়স্ক পোষ্যদের ক্ষেত্রে তাই সময় থাকতে কয়েকটি কাজ করতে ভুললে চলবে না।
আরও পড়ুন:
১) প্রিয় খাবার: পোষ্যের বয়সকালে তাকে তার প্রিয় খাবারগুলোই খাওয়ানো উচিত। অল্প বয়সে হয়তো যে খাবারের উপরে নিষেধাজ্ঞা ছিল, বয়সকালে এক-দু’বার তা খেতে দিলে তাদেরও মন ভাল হবে।
২) বিছানা: হতেই পারে, ছোট থেকে পোষ্যকে বাড়ির একটি নির্দিষ্ট স্থানে ঘুমোনোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু শেষজীবনে তাকে আরও বেশি করে নিজের কাছে রাখা উচিত। তাই শোয়ার ঘরের মাটিতেই তার থাকার ব্যবস্থা করা যায়। এর ফলে তার মনের ভয়-ভীতি সহজেই কাটবে। নিজেকে সে আরও সুরক্ষিত মনে করবে।
৩) অবসর থাকুক: বয়সের সঙ্গে পোষ্যেরা খুব বেশি চলাফেরা করতে পারে না। এই সময়ে তাকে জোর করে কিছু করানো উচিত নয়। বরং নিজের মতো সময় কাটাতে দেওয়া উচিত।
৪) ‘কথা’ বলা প্রয়োজন: বাড়িতে পোষ্যের সঙ্গে প্রত্যেকেই তাঁদের মতো করে আদানপ্রদান করে থাকেন। কখনও কথা বলে, তো কখনও আকারে-ইঙ্গিতে। বয়স্ক পোষ্যদের সঙ্গে নিজের সারা দিনের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেওয়া যায়। এই সময়ে তাদের সঙ্গে চড়া গলায় কথা বলা উচিত নয়। পশুচিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, মানুষের ভাষা না বুঝলেও কী বলতে চাওয়া হচ্ছে, তা সারমেয়রা সবচেয়ে ভাল বুঝতে পারে।
৫) নিয়ম ভাঙা: এক সময়ে বাড়িতে শিখিয়ে দেওয়া নিয়ম ভাঙলে পোষ্যের কপালে জুটত বকুনি। কিন্তু শেষজীবনে সেই ভুলগুলিকে অবজ্ঞা করা উচিত। তার ফলে তার মনেও আনন্দের পরিসর তৈরি হবে।
বয়স বাড়লে পোষ্যদের আরও ভাল ভাবে যত্ন নেওয়া উচিত। ছবি: সংগৃহীত।
৬) চিকিৎসা: অল্প বয়সে ছোটখাটো সমস্যায় পোষ্যদের অসুবিধা বিশেষ একটা চোখে পড়ে না। কিন্তু বয়সের সঙ্গে লক্ষণগুলি এবং তাদের কষ্ট আরও স্পষ্ট হয়। তাই নিয়মিত পশুচিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত।
৭) শান্তির পরিবেশ: পোষ্যদের বয়স বাড়লে, তারা আরও বেশি শান্তিপ্রিয় হয়ে ওঠে। তাই বাড়িতে তাদের বিশ্রামের সময় জোরে কথা বলা উচিত নয়। পাশাপাশি, টিভি বা মিউজ়িক সিস্টেম জোরে চললে তারা বিরক্ত হয়।
৮) ছবি এবং স্মৃতি: বহু কুকুর ছবি তুলতে পছন্দ করে। পোষ্যের বয়স বাড়লে তার সঙ্গে আরও বেশি ছবি তোলা উচিত। তার ফলে সে-ও খুশি হবে। পাশাপাশি, সে যখন থাকবে না, সেই ছবি বা ভিডিয়োগুলি তার শূন্যস্থান পূরণে সাহায্য করবে। উল্লেখ্য, অনেকেই পোষ্যের স্মৃতি হিসেবে তাদের পায়ের ছাপ বা কোনও স্মারক তৈরি করে রেখে দেন।
৯) বিদায়ের প্রস্তুতি: যাওয়ার সময় এগিয়ে এলে পোষ্যেরা তা জানান দেয়। কঠিন এই সময়ে পোষ্যের অভিভাবক হিসেবে অনেকেই মন ঠিক রাখতে পারেন না। এই সময় বাড়িতে পোষ্যদের প্রিয় মানুষদের ডেকে নেওয়া যেতে পারে। এতগুলি বছর যাদের সঙ্গে সারমেয় সময় কাটিয়েছে, তাঁদের কাছে পেয়ে তারও মন ভাল থাকবে।