Advertisement
E-Paper

সন্তান ঘনঘন বিরক্ত হচ্ছে, রাতে আতঙ্কে ভুগছে‌! বিশেষ কোনও মানসিক সমস্যার ইঙ্গিত নয় তো?

আপনার সন্তান কি মানসিক সমস্যায় ভুগছে? ছোট ছোট পরিবর্তনেই রয়েছে ইঙ্গিত। বাবা-মা বেশিরভাগ সময়েই সেই সূক্ষ্ম ইঙ্গিতগুলি চোখ এড়িয়ে যান। কী ধরনের সমস্যায় ভুগছে তারা?

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০২৫ ১৯:২৫
সন্তানের কোন আচরণে সতর্ক হবেন?

সন্তানের কোন আচরণে সতর্ক হবেন? ছবি: এআই সহায়তায় প্রণীত।

প্রাপ্তবয়স্করা যে ভাবে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার সমস্যার সঙ্গে যুঝতে পারে, ছোটরা স্বাভাবিক ভাবেই সেই অনুভূতিগুলি প্রকাশ করতে পারে না। সে হয়তো হাসছে, খেলছে, কিন্তু ভিতরে জমে রয়েছে ভয়, চাপ আর অস্বস্তি। বাবা-মা বেশিরভাগ সময়েই সেই সূক্ষ্ম ইঙ্গিতগুলি চোখ এড়িয়ে যান। অথচ উদ্বেগের প্রথম দিকের লক্ষণগুলি শনাক্ত করতে পারলে সময় মতো চিকিৎসা সম্ভব। শিশুর মানসিক সুস্থতা রক্ষা করা অনেক সহজ হয়ে যাবে সে ক্ষেত্রে। নয়তো পরবর্তী কালে চাপা উদ্বেগ নানা রকমের রূপ ধারণ করতে পারে।

বড়রা জানেন, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় ভুগলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হয়। তাঁরা জানেন, কাছের মানুষের সঙ্গে কথা বলতে হয়। প্রয়োজনে ওষুধও খেতে হয়। কিন্তু খুদেরা কি সে সব বোঝে? তাদের নানাবিধ আচরণের মধ্যেই লুকিয়ে থাকে ‘অ্যাংজ়াইটি’র প্রাথমিক লক্ষণগুলি। সেগুলি চিনে নিতে হবে অভিভাবকদেরই।

১. চেনা পরিসর থেকে হঠাৎ দূরত্ব: আপনার সন্তান আগে যে বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে যেত, হঠাৎ করে সেইসব সঙ্গ এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে কি? কোনও অনুষ্ঠানে যেতে না চাইলে বা বন্ধুদের সঙ্গে কম সময় কাটাতে চাইলে, তা নিছক অভ্যাসের পরিবর্তন না-ও হতে পারে। নেপথ্যে থাকতে পারে কোনও ভয় বা অস্বস্তি।

সন্তান কি অ্য়াংজ়াইটিতে ভুগছে?

সন্তান কি অ্য়াংজ়াইটিতে ভুগছে? ছবি: সংগৃহীত।

২. আচরণে ঘনঘন বিরক্তি: উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার বহিঃপ্রকাশ যে কেবলই ভয়ের মাধ্যমে হয়, তা নয়। অনেক ক্ষেত্রে শিশুরা রাগ, কান্না বা বিরক্তির মাধ্যমে তাদের মানসিক অবস্থাকে প্রকাশ করে। ছোট কোনও ঘটনা নিয়েও হঠাৎ করে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়তে পারে। আচমকা প্রচণ্ড রেগেও যেতে পারে। এ সব ক্ষেত্রে বাবা-মায়েদের উচিত, রেগে না গিয়ে শিশুর মনের ভিতরটা বোঝার চেষ্টা করা।

৩. অনিদ্রা বা রাতে ভয় পাওয়া: রাতের দিকে শিশুদের উদ্বেগের সমস্যা তীব্র আকার নিতে পারে। ঘুম না আসা, ঘন ঘন ঘুম ভেঙে যাওয়া, অন্ধকারে ভয় পাওয়া বা দুঃস্বপ্ন দেখা— এ সব আচরণ তাদের উদ্বেগেরই প্রকাশ। অনেক সময় শিশুটি নিজের মতো করে এ সব বোঝাতে পারে না, ফলে ভয়ের উৎসটি অধরাই থেকে যায়।

৪. ঘনঘন পেট ও মাথায় ব্যথা: মনের ভিতরটা যখন অস্থির হয়ে থাকে, শরীরেও নানাবিধ পরিবর্তন দেখা দেয়। বারবার পেটব্যথা, বা মাথা ধরার অভিযোগ করার নেপথ্যে এ সব মানসিক চাপও থাকতে পারে। স্কুলে যেতে অনীহা দেখাতে পারে বা নতুন কোনও পরিস্থিতি নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা করতে পারে। এমন সমস্ত ইঙ্গিত দেখা দিলে অভিভাবকদের সতর্ক হয়ে যাওয়া উচিত। অজুহাত ভেবে অবহেলা করা উচিত নয়।

৫. একা থাকতে ভয় পাওয়া: অনেক শিশুই মা-বাবার কাছাকাছি, সঙ্গে সঙ্গে থাকতে পছন্দ করে। কিন্তু যদি দেখা যায়, হঠাৎ করে এই প্রবণতা বেড়ে গিয়েছে, তা হলে বুঝতে হবে, তারা একা থাকতে ভয় পাচ্ছে। যদি দেখা যায়, পরিবারের কেউ দূরে গেলেই অস্থির হয়ে পড়ছে বা বার বার একসঙ্গে থাকার আশ্বাস চাইছে, তা হলে সে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এই আচরণটিও উদ্বেগের সূক্ষ্ম ইঙ্গিত।

৬. ভুল করে ফেলার ভয় পাওয়া: অ্যাংজ়াইটিতে ভোগা শিশুরা অনেক সময়ে নিজেদের উপর বেশি চাপ দিয়ে ফেলে। সব সময়ে নিখুঁত হওয়ার তাড়না থাকে তাদের। আর তাই ভুল করে ফেলার ভয় কাজ করে তাদের। কোনও কাজ শুরু করার আগেই বার বার জানতে চায় ঠিক হচ্ছে কি না। স্কুলের কাজ হোক বা বাড়ির, ভুল হওয়ার বা করে ফেলার চিন্তা তাদের ক্রমাগত তাড়া করে।

শিশুর মধ্যে এই ধরনের আচরণ দেখলে বকাঝকা করা ঠিক নয়। বাবা-মায়ের ধৈর্য ও মনোযোগের প্রয়োজন সেই সময়ে। নিজের সন্তানের মধ্যে এমন পরিবর্তন দেখা দিলে তাদের সঙ্গে কথা বলুন। দেখুন, তারা যেন নির্ভয়ে সমস্যার কথা বলতে পারে। তাদের অনুভূতিগুলিকে গুরুত্ব দিন। উপেক্ষা করলে অস্থিরতা আরও বাড়তে পারে। আর যদি এই আচরণ দীর্ঘস্থায়ী হয়, তা হলে চিকিৎসকের সাহায্য নেওয়া উচিত।

Anxiety Disorder in Children Child Mental Health anxiety
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy