Advertisement
E-Paper

মাধ্যমিকে পড়ার চাপ, সুস্থ থাকতেও হবে, সন্তানকে রোজ কী কী খাওয়াবেন? কেমন রান্না হবে বাড়িতে?

মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের হালকা ও সহজপাচ্য খাবার খাওয়াই ভাল। কেমন খাবার খেলে শরীর ঠিক থাকবে, গ্যাস-অম্বল হবে না আবার পড়াও ঠিকঠাক ভাবে মনে রাখা যাবে, সে নিয়ে পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদেরা।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১০:০২
What type of foods students should eat during Madhyamik examination to stay healthy

সন্তানের শরীর সুস্থ রাখতে এখন কেমন খাবার দেবেন? ফাইল চিত্র।

পরীক্ষার সময়ে শরীর সুস্থ রাখা খুবই জরুরি। একটা পরীক্ষা দিয়ে এসেই পরেরটার জন্য প্রস্তুতি শুরু হচ্ছে। উদ্বেগ, দুশ্চিন্তা তো আছেই। তাই এই সময়টাতে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের হালকা ও সহজপাচ্য খাবার খাওয়াই ভাল। কেমন খাবার খেলে শরীর ঠিক থাকবে, গ্যাস-অম্বল হবে না আবার পড়াও ঠিকঠাক ভাবে মনে রাখা যাবে, সে নিয়ে পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদেরা। সন্তানের জন্য এখন বাড়িতে কেমন রান্না করবেন, পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময়ে টিফিন বাক্সে কেমন খাবার গুছিয়ে দেবেন, তা অভিভাবকদেরও জেনে রাখা ভাল।

খাওয়াদাওয়া শরীর বুঝেই করা উচিত। তাই সন্তানের শরীর-স্বাস্থ্য বুঝেই খাবার দিতে বললেন ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চের (আইসিএমআর) প্রাক্তন বিজ্ঞানী এবং ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেসের সদস্য দীপিকা সুর। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বললেন, “পরীক্ষার সময়ে ফল খাওয়া খুবই স্বাস্থ্যকর। ফলের ভিটামিন ও ফাইবার স্মৃতিশক্তি বাড়াবে, শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়াবে। তবে ফল সকলের সহ্য হয় না। যেমন আমার মেয়ের ফল খেলে অম্বলের সমস্যা হয়, তাই সে ক্ষেত্রে বিকল্প খাবারই দিই। বিভিন্ন রকম বাদাম, বীজ খেলেও কাজ হবে।”

কী কী নিয়ম মানবে ছাত্রছাত্রীরা?

১) বাইরের খাবার একেবারেই নয়। গবেষক জানাচ্ছেন, মরসুম বদলের সময়ে নানা সংক্রামক রোগের প্রার্দুভাব ঘটে। তাই সব সময়েই বাড়িতে তৈরি খাবার খাওয়া ভাল।

২) হালকা খাবার খেতে হবে। কম তেলে রান্না হলে বেশি ভাল। এই সময়ে সেদ্ধ খাবার খাওয়া সবচেয়ে বেশি উপকারী।

৩) খুব বেশি গরম খাবার খাবে না। শরীর ঠান্ডা থাকে এমন খাবারই খেতে হবে। সকালে উঠে মৌরি-মেথি ভেজানো জল খাওয়া খুবই ভাল। এতে পেট ঠান্ডা থাকবে।

৪) পরীক্ষা দিয়ে বেরিয়ে রাস্তার কাটা ফল, লস্যি, শরবত বা আইসক্রিম একেবারেই খাওয়া ঠিক হবে না। এই সময়ে ডায়েরিয়া হয়ে গেলে মুশকিলে পড়বে ছোটরা।

বাড়িতে ঠিক কেমন খাবার খাবে পরীক্ষার্থীরা?

‘ব্যালান্সড ডায়েট’ বা সুষম খাবার খাওয়াই ভাল। পরীক্ষা মানেই সব খাওয়া বন্ধ করে দিতে হবে তা নয়। ঠিক কোন কোন খাবার এই সময়ে খাওয়া ভাল এবং কী পরিমাণে, সেই বিষয়ে অভিভাবকদের টিপ্‌স দিলেন পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তী।

১) ভাত বা রুটি, যেটা ভাল লাগে সন্তানকে দেবেন। যদি রুটি খেলে অম্বল হয়, তা হলে দু’বেলাই অল্প করে ভাত দেবেন। পরীক্ষা দিতে যাওয়ার আগে অল্প করে ভাত খেয়ে যেতে পারলেই পেট ঠান্ডা থাকবে।

২) ভাতের সঙ্গে শুক্তো, ডাল, হালকা করে রান্না করা মাছের ঝোল খেলে ভাল। যদি মাছ দেন, তা হলে সে দিন ডিম বা মাংস দেবেন না। খুব বেশি প্রোটিন এক দিনে না খাওয়াই ভাল।

২) শাকপাতা খাওয়া খুব ভাল এই সময়ে। তবে শাক ভাল করে নুন-জলে ধুয়ে তবে রান্না করবেন। যে কোনও রান্নাই কম তেল ও মশলা দিয়ে করবেন। মাংস রাঁধলে সব্জি দিয়ে স্ট্যু করে দেবেন।

৩) প্রতি দিন ২০০-২৫০ গ্রাম ফল খেলে ভাল হয়। যে কোনও মরসুমি ফল দিতে পারেন। তবে যদি কোনও ফলে অ্যালার্জি থাকে, তা হলে দেবেন না।

৪) ৩০০-৪০০ মিলিলিটার দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার খেলে ভাল। দুধে অ্যালার্জি থাকলে, দই দিন। প্রোবায়োটিক হিসাবে দইয়ের তুলনা নেই। দইয়ের ফোঁটার বদলে বরং সন্তানের পাতে রোজ টক দই দিতে পারলে ভাল। এর থেকে প্রয়োজনীয় প্রোটিন, ক্যালশিয়াম ঢুকবে শরীরে। দইয়ের অ্যামাইনো অ্যাসিড মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতাও বাড়াবে। হজম ভাল হবে। ঘরে তৈরি দই দিতে পারলে সবচেয়ে বেশি ভাল হয়।

৫) সন্ধ্যার স্ন্যাকসে ভাজাভুজি না দিয়ে বাদাম, বীজ দিতে পারেন। এতে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড বেশি করে পাবে। ওমেগা-৩ স্মৃতিশক্তি বাড়ায়।

৬)পরীক্ষা দিতে যাওয়ার আগে হোক বা সারা দিনে— পর্যাপ্ত জল খেতেই হবে। সঙ্গে জলের বোতল রাখতে হবে। বাবা-মায়েরা সঙ্গে করে ওআরএস নিয়ে যেতে পারেন। বিরতিতে একটু খাইয়ে দিলেন। এতে শরীর আর্দ্র থাকবে। মনের চাপ বাড়লে শরীরে যে অস্বস্তি হয়, তা কমবে। ডাবের জল, দইয়ের ঘোলও বাড়ি থেকে নিয়ে যেতে পারেন। পরীক্ষায় বসার আগে কিছুটা জল খাইয়ে দেবেন, এতে দেখবেন উদ্বেগ বা উৎকণ্ঠা অনেক কমে যাবে।

মাধ্যমিক চলাকালীন শরীর সুস্থ রাখার টিপ্‌স দিয়েছেন মেডিসিনের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদারও। তিনি বলেন, ‘‘পরীক্ষার ক’টা দিন বাইরের খাবার ও বাইরের জল এড়িয়ে চলতে হবে। ভরপেট খাওয়া একেবারেই নয়। রোদ এড়িয়ে না চললে সর্দিগর্মির আশঙ্কাও থাকে।’’ তাঁর মতে, সব থেকে বেশি প্রয়োজন রাতে দুশ্চিন্তামুক্ত ভাল ঘুম। পরীক্ষার আগের রাতে টানা ৭ ঘণ্টা ঘুমোতেই হবে। তা হলেই পরীক্ষা ভাল করে দিতে পারবে।

Madhyamik 2025 Health Tips
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy