Advertisement
E-Paper

নিরীহ টম্যাটোয় লঙ্কার ঝাল! এ বার তা-ও সম্ভব, বলছেন বিজ্ঞানীরা

টম্যাটো বদলে যাবে চিলি ফ্লেক্সের শুকনো লঙ্কায়! জানেন কী ভাবে?

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০১৯ ১৪:৩২
টম্যাটোর মধ্যেই চিলি ফ্লেক্সের গুণ প্রবেশ করানো সম্ভব বলে দাবি বিজ্ঞানীদের। ছবি: আইস্টক।

টম্যাটোর মধ্যেই চিলি ফ্লেক্সের গুণ প্রবেশ করানো সম্ভব বলে দাবি বিজ্ঞানীদের। ছবি: আইস্টক।

সম্পর্কে তারা তুতো আত্মীয়। কিন্তু এত দিন এ সম্পর্কের কথা জানা ছিল না কারওরই। সম্প্রতি ব্রাজিল ও আয়ারল্যান্ডের কিছু গবেষক এই সম্পর্ক আবিষ্কার করতে পেরে একেবারে তাজ্জব বনে গিয়েছেন!

এদের মধ্যে একটির জিনে সামান্য হেরফের ঘটালেই নাকি হুবহু আর একজনের বৈশিষ্ট্য এনে দেওয়া যাবে। কথা হচ্ছে টম্যাটো আর চিলি ফ্লেক্স উৎপাদনকারী শুকনো লঙ্কার জিন নিয়ে। এদের জিনগত বৈশিষ্ট্য ও রাসায়নিক উপাদানে মিল প্রচুর। শুকনো লঙ্কায় থাকা ‘ক্যাপসাইসিনোয়ে়ডস’ তাই তৈরি করা সম্ভব টম্যাটো থেকেও।

এই ক্যাপসাইসিনোয়ে়ডসের উপস্থিতির জন্যই কোনও খাবারে ঝাল লাগে আমাদের। এ বার নিরীহ টম্যাটোর মধ্যেও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দ্বারা এই ঝালের গুণকে ঢুকিয়ে দিতে চাইছেন বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি ‘ট্রেন্ডস ইন প্ল্যান্ট সায়েন্স’-এ প্রকাশিত একটি গবেষণা পত্রে ব্রাজিল ও আয়ারল্যান্ডের এক দল গবেষকরা দাবি করেছেন, জিন-এডিটিং পদ্ধতির দ্বারা টম্যাটোকেই করে তোলা যাবে ঝাল-ঝাল, মশলাদার।

আরও পড়ুন: ভুঁড়ি বাড়ছে? প্রতি দিন নিয়ম করে খান এই স্মুদি, দ্রুত ঝরবে অতিরিক্ত মেদ

এই গবেষণা-দলের প্রধান সদস্য ব্রাজিলের ভিকোসার ফেডেরাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক অগাস্টিন সোগোনের মতে, ‘‘কৃষিবিজ্ঞানের এই গবেষণা অনেকটাই সহজ করে দেবে ক্যাপসাইসিনোয়েডসের জোগান। সারা বিশ্বের নিরিখে ক্যাপসাইসিনোয়েডস অত্যন্ত মূল্যবান একটি যৌগ। কেবল রান্নার স্বাদ বাড়াতেই নয়, পিপার স্প্রে, চিকিৎসাবিজ্ঞানের কাজে অ্যানাস্থেশিয়ার অন্যতম উপাদান হিসাবেও এটি ব্যবহৃত হয়। এমনকি, কোনও কোনও গবেষণায় প্রমাণিত, চর্বি ঝরাতেও এই ক্যাপসাইসিনোয়েডস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’’

টম্যাটোর তুলনায় শুকনো লঙ্কা চাষ করা বেশি শ্রমসাধ্য, শ্রমিক-সংখ্যাও বেশি প্রয়োজন। এ ছাড়া চিলি ফ্লেক্স উৎপাদনকারী শুকনো লঙ্কার ক্যাপসাইসিনোয়েডসকে দীর্ঘ দিন সতেজ রাখাও কঠিন। তুলনায় টম্যাটো চাষ সহজ ও ফলন প্রচুর। তাই টম্যাটোর জিন বদলের মাধ্যমে এই ক্যাপসাইনোয়েডসকে টম্যাটোর শরীরে এনে ফেলতে পারলে চিলি ফ্লেক্সের দাম কমিয়ে ফেলা যাবে। জোগানও বাড়বে অনেকটাই।

টম্যাটোর শরীরে ক্যাপসাইসিনোয়েড উৎপন্নকারী জিন উপস্থিত থাকলেও তারা সক্রিয় নয়। এ বার জিনের কারিকুরি করে সেই সব জিনকে সক্রিয় করে টম্যাটোর মাধ্যমেই চিলি ফ্লেক্স তৈরি করতে চাইছেন বিজ্ঞানীরা।

আরও পড়ুন: ঘন ঘন গ্যাস-অম্বল? ওষুধ ছাড়াই হজমের সমস্যা থেকে মুক্তি পান এ সব উপায়ে

যদিও এই জিনগত গঠন বদলে দেওয়া শাক-সব্জি নিয়ে কম আন্দোলন চলছে না বিশ্বে। ভারত, এমনকি এ রাজ্যেও এ নিয়ে কম বিরোধিতা হয়নি। কৃষি বৈজ্ঞানিক ড. সুদীপ্ত ঘোষের মতে, ‘‘এই ধরনের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং দিয়ে তৈরি শাক-সব্জি শরীরের পক্ষে খুব একটা উপকারী নয়। প্রাকৃতিক নিয়মে তৈরি বৈশিষ্ট্যের উপর বিজ্ঞানের প্রয়োগ অনেকটাই খোদার উপর খোদকারির মতো। ‘খেতে ভাল’ আর ‘খেলে ভাল’-র মধ্যে তফাত কতটা তা বুঝতেই হবে মানুষকে। তবে টম্যাটো থেকে লঙ্কার স্বাদ পাওয়ার জন্য যে পরীক্ষা তাতে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের যতটা কারিকুরি দরকার, তা খুব একটা ক্ষতি না করলেও এটাও কিন্তু প্রকৃতির বিরোধিতা করাই। তাই সখ করে এক-আধ দিন এ সব খাওয়ার এই উপাদান দিয়েই শুকনো লঙ্কার অভাব মেটানো এক নয়।’’

যদিও ফেডেরাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপকদের দাবি, এমন কোনও বড়সড় পরিবর্তন এতে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে ঘটানো হবে না, যা কিনা ক্ষতি করে শরীরের। অতএব পিৎজা, বার্গার ও স্যান্ডউইচে এ বার ঝাল টম্যাটো পেলে আর অবাক হবেন না যেন!

(ইতিহাসের পাতায় আজকের তারিখ, দেখতে ক্লিক করুন — ফিরে দেখা এই দিন।)

Gene Tomato Genetic Engineering Brazil Airland
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy