Advertisement
E-Paper

মানসিক চাপ জানাবে যন্ত্র, পরিমাণ বেশি হলে সতর্ক করবে ‘ই-ট্যাটু’, ব্যবহারে কাদের সুবিধা?

স্মার্টঘড়ি বা আংটির যুগ কি অতীত হতে চলেছে? বিজ্ঞানীরা মানসিক চাপ পরিমাপক যন্ত্র আবিষ্কার করেছেন। যন্ত্রটিকে সাধারণ মানুষের ব্যবহারযোগ্য করে তোলার জন্যও তাঁরা দ্রুত চেষ্টা করছেন।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০২৫ ১১:০৮
Scientists discovered a device named E-tattoo which can track mental workload of humans

মানুষের মস্তিষ্কে জমা মানসিক চাপ পরিমাপ করতে পারে ‘ই-ট্যাটু’। ছবি: সংগৃহীত।

‘ট্যাটু’ শব্দটি শুনলেই মনের মধ্যে মানুষের ত্বকে আঁকা নানা ছবি ও নকশা ফুটে ওঠে। কিন্তু যদি বলা হয়, মস্তিষ্কের কাজের চাপ পরিমাপ করতে সাহায্য করতে পারে ট্যাটু, তা হলে অনেকেই হতবাক হতে পারেন। কল্পনা নয়, ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সাসের গবেষকেরা সম্প্রতি এই ধরনেরই একটি সূক্ষ্ম যন্ত্র আবিষ্কার করেছেন, যাঁর পোশাকি নাম দেওয়া হয়েছে ‘ই-ট্যাটু’।

‘ই-ট্যাটু’ কী?

মানব-মস্তিষ্ক কী ভাবে কাজ করে, তার অন্বেষণে আজও গবেষকদের কাছে নতুন নতুন সম্ভাবনা ধরা দেয়। ধরা যাক, কোনও ব্যক্তি ক্লান্ত, কাজের ভারে জর্জরিত। তাঁর মুখমণ্ডলের উপর বেশ কয়েকটি ট্যাটুর মতো কালো জটিল আকিবুঁকি একটি স্বচ্ছ পরিধানযোগ্য প্লাস্টিকের উপরে বসিয়ে দেওয়া হল। সেই যন্ত্রটি চোখের স্ক্যানের পাশাপাশি লাগাতার মস্তিষ্কের বিভিন্ন দিকের সঙ্কেত বিচার করে জানিয়ে দেবে, কাজের চাপ এবং জটিল পরিস্থিতিতে একাগ্রতা বজায় রাখতে মস্তিষ্ক কী ভাবে কাজ করে, তার সানুপুঙ্খ বিবরণ। পাশাপাশি, মানসিক চাপ পরিমাপ করতেও সাহায্য করবে যন্ত্রটি।

কী ভাবে কাজ করে

মূলত মস্তিষ্কের প্রি-ফ্রন্টাল লোব থেকে ‘ই-ট্যাটু’ সিগন্যাল সংগ্রহ করে। প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়ার জন্য ইইজি এবং ইওজি— উভয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে থাকে। ত্বকের মতো পাতলা স্বচ্ছ ইলাস্টিক জাতীয় (কার্বন যুক্ত পলিইউরেথিন) উপাদানের উপরে ‘ট্যাটু’গুলি বসানো হয়েছে। দুই ভ্রুর মাঝে ‘তৃতীয় নয়ন’-এর মতোই একটি ডাকটিকিটের আকারের প্যাচ বসানো থাকে। এরই মধ্যে থাকে ব্যাটারি। এটিই যন্ত্রটির কেন্দ্র বলা যেতে পারে। যন্ত্রটিতে বেগ নিরোধক ইলেক্ট্রোড ব্যবহার করা হয়েছে বলে ব্যবহার করার সময় নড়াচড়া, মুখের অভিব্যক্তি বা ঘামের কারণে প্রয়োজনীয় তথ্য পেতে কোনও সমস্যা হবে না। পাশাপাশি, নামমাত্র ওজনের কারণে দীর্ঘ ক্ষণ যন্ত্রটি ব্যবহার করা যাবে।

কোন পেশায় সুবিধা

আপাতত ‘পাইলট প্রজেক্ট’ হিসেবে ‘ই-ট্যাটু’ তৈরি করা হয়েছে। প্রতিনিয়ত তা নিয়ে সমীক্ষাও করা হচ্ছে। যন্ত্রটির অন্যতম আবিষ্কারক অধ্যাপক ন্যানশু লু জানিয়েছেন, শল্যচিকিৎসক, বিমানচালক বা রেসিং ড্রাইভারদের ক্ষেত্রে এই যন্ত্রটি উপকারী হতে পারে। তাঁদের দ্রুত জটিল সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়ে মস্তিষ্ক কী ভাবে এবং কোন পথে মানসিক চাপকে নিয়ন্ত্রণ করে, তার সুনির্দিষ্ট বিবরণ জানাতে পারবে ‘ই-ট্যাটু’। পাশাপাশি, কারও মানসিক চাপ মাত্রা অতিক্রম করলে যন্ত্রটি সেই ব্যক্তিকে প্রয়োজনীয় সঙ্কেত পাঠিয়ে সাবধানও করতে পারে বলে দাবি করেছেন ন্যানশু।

আর কী কী করতে পারে

বর্তমানে স্মার্টঘড়ি এবং আংটি অনেকেই ব্যবহার করেন। কিন্তু সেখানে মানসিক চাপ মাপা সম্ভব নয়। আবিষ্কারকেরা দাবি করেছেন, ‘ই-ট্যাটু’ মানসিক চাপ মাপার পাশাপাশি স্মার্টঘড়ির মতো রক্তচাপ, মদ্যপানের পরিমাণ মাপতে সক্ষম। ভবিষ্যতে যন্ত্রটির ব্যবহারিক প্রয়োগের পরিধিও বৃদ্ধি করতে চাইছেন তাঁরা।

দাম কি আকাশছোঁয়া

এখন প্রশ্ন, ‘ই-ট্যাটু’র মূল্য কি সাধারণের বাজেটের মধ্যে থাকবে? ন্যানশু জানিয়েছেন, তাঁরা চেষ্টা করছেন যন্ত্রটির দাম ২০০ মার্কিন ডলারের (ভারতীয় মুদ্রায় কমবেশি ১৭ হাজার টাকা) মধ্যে রাখতে। সে ক্ষেত্রে গ্রাহকদের তাঁরা ‘ই-ট্যাটু’ মোবাইল অ্যাপের সুবিধা দিতেও চাইছেন। প্রত্যেকদিনের তথ্য ব্যবহারকারীর মোবাইল অ্যাপে সংরক্ষিত হবে।

ফ্যাশন না কি ‘ফাঁপা’ আওয়াজ

অনেকের মতে, ‘ই-ট্যাটু’র সঙ্গে কোনও সায়েন্স ফিকশন ছবির সাদৃশ্য রয়েছে। তাই এই যন্ত্র নতুন কোনও ফ্যাশন ট্রেন্ড তৈরি করতে পারে। তবে অন্য পক্ষের মতে, যন্ত্রটিকে সাধারণ মানুষের ব্যবহারযোগ্য করে তুলতে আরও পরীক্ষা এবং কাঠামোগত পরিবর্তন প্রয়োজন।

Mental Health Mental State brain health New Research Worklife
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy