Advertisement
E-Paper

আঠেরো গুণের আঠেরো গুণী এক মঞ্চে, জমজমাট ‘এইট্টিন আন্ডার এইট্টিন’ সম্মানের আসর

নানা প্রতিভার এক মঞ্চ সচরাচর হয় না। কিন্তু কখনও কখনও হয়। যেমন হল শুক্রবার বিকেলে। দ্য টেলিগ্রাফ অনলাইনের ‘এডুগ্রাফ এইট্টিন আন্ডার এইট্টিন’-এর সম্মাননা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শশী তারুর।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২৫ ২০:২০
দ্য টেলিগ্রাফ অনলাইনের ‘এডুগ্রাফ এইট্টিন আন্ডার এইট্টিন’-এর মঞ্চে আনন্দবাজার ডট কম ও দ্য টেলিগ্রাফ অনলাইনের প্রধান সম্পাদক অভীক সরকার এবং প্রধান অতিথি শশী তারুরের সঙ্গে কৃতীরা।।

দ্য টেলিগ্রাফ অনলাইনের ‘এডুগ্রাফ এইট্টিন আন্ডার এইট্টিন’-এর মঞ্চে আনন্দবাজার ডট কম ও দ্য টেলিগ্রাফ অনলাইনের প্রধান সম্পাদক অভীক সরকার এবং প্রধান অতিথি শশী তারুরের সঙ্গে কৃতীরা।। — নিজস্ব চিত্র।

কেউ বাঁশি বাজায়, কেউ নাচ করে, কেউ দাবা খেলে, কেউ পিয়ানো বাজায়, কেউ সমাজকর্মী, কেউ ব্যডমিন্টন খেলে, কেউ নতুন জিনিস অবিষ্কারে মন দিয়েছে, কেউ রোলার স্কেট পায়ে পরে ঘুরে বেড়ায়। আবার সকলে এক মঞ্চে এসেও দাঁড়ায়।

নানা প্রতিভার এক মঞ্চ সচরাচর হয় না। কিন্তু কখনও কখনও হয়। যেমন হল শুক্রবার বিকেলে।

শুক্রবার ছিল দ্য টেলিগ্রাফ অনলাইনের ‘এডুগ্রাফ এইট্টিন আন্ডার এইট্টিন’-এর সেরা ১৮-র নাম ঘোষণার দিন। সাউথ সিটি স্কুলের প্রেক্ষাগৃহে জড়ো হয়েছিলেন পড়ুয়া, অভিভাবক, শিক্ষকেরা। ১৮ বছর বয়সের নীচের ১৮ জন কৃতী স্কুলপড়ুয়াকে সম্মান জানালেন উদ্যোক্তারা। সে মঞ্চেই জড়ো হয়েছিল নানা ক্ষেত্রের কৃতীরা।

লেখাপড়ায় অসাধারণেরা তো ছিলই, তবে তালিকায় ছিল খেলা, গান, সাঁতার থেকে সমাজসেবা— নানা কাজের সঙ্গে যুক্ত কিশোর-কিশোরীরা।

এই কৃতীদের কেউ ১৮ বছর বয়সে পা দেওয়ার আগে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে জায়গা করে নিয়েছে, কেউ বা সমাজসেবা করে জীবন কাটাবে বলে ইতিমধ্যেই ঠিক করে ফেলেছে। আর তাদের কাণ্ড দেখে মুগ্ধ হয়ে প্রধান অতিথি রাজনীতিক ও লেখক শশী তারুর অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে এক কথোপকথনে বললেন, ‘‘কিশোর-কিশোরীরা এখন বড্ড এগিয়ে। তাদের দেখলে এইটাই মনে হয়। ১৪ বছর বয়সে এভারেস্টেও চড়ছে! আমরা ওই বয়সে এত কিছু পারতাম?’’

এ বার ছিল ‘এডুগ্রাফ এইট্টিন আন্ডার এইট্টিন’-এর চতুর্থ বর্ষ। পূর্ব ভারতের বিভিন্ন স্কুল থেকে ১৮-অনূর্ধ্ব কৃতীদের বেছে সম্মান জানাতে গত কয়েক মাস ধরে চলেছে বাছাই পর্ব। বহু প্রতিযোগীর মধ্যে থেকে চূড়ান্ত পর্বে পৌঁছোয় হাতে গোনা কয়েক জন পড়ুয়া। তাদের মধ্যে থেকে ১৮ জন সেরাকে বেছে নিয়েছেন বিচারকেরা।

দ্য টেলিগ্রাফ অনলাইনের ‘এডুগ্রাফ এইট্টিন আন্ডার এইট্টিন’-এর মঞ্চে প্রধান অতিথি শশী তারুরের সঙ্গে স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়।

দ্য টেলিগ্রাফ অনলাইনের ‘এডুগ্রাফ এইট্টিন আন্ডার এইট্টিন’-এর মঞ্চে প্রধান অতিথি শশী তারুরের সঙ্গে স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। — নিজস্ব চিত্র।

দেশের নানা অঞ্চল থেকে প্রতিযোগিতায় যোগ দেওয়ার আবেদন জমা পড়েছিল। ইটানগর থেকে গুয়াহাটি— প্রতিযোগিতায় নাম লিখিয়েছিল নানা জায়গার স্কুলপড়ুয়ারা। প্রাথমিক বাছাই পর্বের পরে উঠে আসে কয়েক জনের নাম। সেখান থেকেই সেরা আঠেরোকে বেছে নেন নয় বিচারক— মনোরোগ চিকিৎসক জয় রঞ্জন রাম, নৃত্যশিল্পী তনুশ্রী শঙ্কর, সঙ্গীত পরিচালক ও তবলিয়া বিক্রম ঘোষ, উদ্যোগপতি এবং সঙ্গীতকার দেবাদিত্য চৌধুরী, পেশাদার গল্‌ফ খেলোয়াড় ইন্দ্রজিৎ ভালুটিয়া, শিক্ষাবিদ সুজাতা সেন, দাবাড়ু দিব্যেন্দু বড়ুয়া, সমাজকর্মী মুদার পাথেরিয়া এবং বিজ্ঞানী সুমন্ত্র চট্টোপাধ্যায়।

কারা এই কৃতী? কাদের দেখে মুগ্ধ হলেন বিচারকেরা?

সেরা আঠেরোর তালিকায় উঠে এল নানা কাজে পারদর্শীদের নাম। তেজপুরের অসম ভ্যালি স্কুলের অগ্নিভপ্রকাশ বোরা সমাজসেবায় মগ্ন। নাচের পারদর্শী অনন্য জুগাড়ে ভুবনেশ্বরের ওডিএম পাবলিক স্কুলের পড়ুয়া। নৈহাটির মেয়ে অঙ্কলিকা চক্রবর্তী সেন্ট লিউকস ডে স্কুলে পড়ে। টেবিল টেনিস খেলে ইতিমধ্যেই নাম করেছে সে। বীরভূমের পশ্চিম কাঁদিপুর জুনিয়র হাইস্কুলের পড়ুয়া অনুরাগ মজুমদার নিত্যনতুন জিনিস আবিষ্কারে মন দিয়েছে। কলকাতার দ্য হেরিটেজ স্কুলের বিপাশা পাল ক্যারাটেতে পারদর্শী। দাবারু দেবপ্রিয় মান্না জিডি বিড়লা সেন্টার ফর এডুকেশনে পড়ে। ইটানগরের লিটল স্টার স্কুলের গেটো সোরা ব্যাডমিন্টন খেলে নাম করেছে নানা স্তরে। শট পাটে নজর কেড়েছে নালন্দার সেন্ট পলস ইংলিশ স্কুলের গোল্ডি কুমারী। গুয়াহাটির মহর্ষী বিদ্যা মন্দির স্কুল-৩ থেকে এসেছিল সাঁতারু কস্তুরী গগৈ। কৌস্তুভ রায় কলকাতার ডিএভি পাবলিক স্কুলে পড়ে, সরোদবাদক সে। খড়্গপুরে গ্রিফিন্স ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে পড়ে ক্যারাটেতে পারদর্শী আর এক কৃতী উর্জা সামন্ত। জিডি বিড়লা সেন্টার ফর এডুকেশনের প্রাপ্তি কুমার আবার নানা ক্ষেত্রে কৃতী। পিয়ানো বাদক রোজ় দাম রায় বাড়িতেই লেখাপড়া শেখে। বিবেকানন্দ মিশন স্কুলের সন্নিধৃতা চক্রবর্তী নৃত্যে মন দিয়েছে ছোটবেলা থেকেই। নদিয়ার বেদীভবন রবিতীর্থ বিদ্যালয়ের সারণ্য সরকার বাঁশি বাজায়। বহু ক্ষেত্রে পারদর্শী উদিতাকঙ্কন ফুকন অসমের ডিপিএস দুলিয়াযানে পড়ে। বাণিজ্যে মন দিয়েছে গুয়াহাটির সংস্কৃতি দ্য গুরুকুলের ভামিকা সিংগল। বিদুষী আগরওয়াল লা মার্টিনিয়ার ফর গার্লস স্কুলের ছাত্রী। সে রোলার স্কেটিং এবং জিমন্যাস্টিক করে।

তবে এই সবের পাশাপাশি অল্পবয়সিদের আরও বিভিন্ন বিষয়ে ভাবা দরকার, মনে করিয়ে দিলেন শশী। তাঁর কাছে স্বস্তিকার প্রশ্ন ছিল, কী কী নিয়ে ভাবা দরকার এই প্রজন্মের? তার উত্তরেই শশী বলেন, ‘‘যেমন পারিপার্শ্বিক নিয়ে ভাবতে হবে, তেমনই বৃহত্তর বিষয় নিয়েও ভাবতে শিখতে হবে।’’ নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের উদ্দেশে শশীর পরামর্শ— ‘‘একটা জিনিস সব সময় মাথায় রাখবে, জীবনের একটা মানে থাকে যেন। জীবনের একটা লক্ষ্য যেন থাকে। সব সময় নিজের সেরা রূপটিকে প্রকাশের চেষ্টা করো। খুঁজে বার করো, ঠিক কোন কাজে তুমি সবচেয়ে ভাল। দেখবে, সেখানে আর কোনও প্রতিযোগিতা নেই। সেখানে তুমি তুমিই হবে।’’

Telegraph 18 under 18 award
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy