সকালে ঘুম ভাঙা মাত্র হাত চলে যায় মাথার কাছে রাখা মোবাইলের দিকে। দিনভরের কাজের ফাঁকে মাঝেমধ্যেই মোবাইলে ইনস্টল করে রাখা অ্যাপগুলিতে আনাগোনা চলেই। কোনওটিতে কেনাকাটা সারছেন, কোনওটিতে নিজের ছবি এডিট করছেন। সবেতেই ব্যক্তিগত তথ্য উজাড় করে দিচ্ছেন। নিজের ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ডের নম্বর সেভ করে রাখছেন। কখনও ভেবে দেখেছেন কি, গুগ্ল প্লে স্টোর বা অ্যাপল প্লে স্টোর থেকে পছন্দের যে অ্যাপটি ইনস্টল করেছেন, সেটি আদৌ সুরক্ষিত কি না? আসল ও নকলের তফাত না বুঝেই এমন অসংখ্য ভুয়ো অ্যাপ প্রায় রোজই ইনস্টল করে ফেলছেন অনেকে। সেখানে নিজেদের ব্যাঙ্কের তথ্যও দিচ্ছেন। আর এ ভাবে অজান্তেই গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য চলে যাচ্ছে হ্যাকারদের হাতে। যদি নিজে আসল আর নকলের তফাত না বুঝতে পারেন, তা হলে ফোনের সেটিংসে ছোট্ট একটা বদল করে রাখুন।
ভুয়ো অ্যাপ থেকে বাঁচার উপায়
এমন অনেক অ্যাপ রয়েছে, যেগুলিতে ভাইরাস বা ম্যালঅয়্যার ইনস্টল করে দেয় সাইবার প্রতারকেরা। এই ধরনের অ্যাপ মোবাইলে ইনস্টল হওয়া মাত্র, তা নজরদারি শুরু করে দেয় ফোনের সর্বত্র। সবচেয়ে আগে গ্রাহকের কনট্যাক্ট লিস্টে থাকা নম্বরগুলিকে কব্জা করে, তার পর ধীরে ধীরে মিডিয়া, বাকি অ্যাপ ও সেটিংসে নিজেদের ম্যালঅয়্যার ঢুকিয়ে দেয়। ফলে ফোনে যত অ্যাকাউন্ট, অ্যাপ রয়েছে সেগুলি অনায়াসে প্রতারকদের হাতের মুঠোয় চলে আসে। আপনার অজান্তেই যে আপনার ফোনটি তৃতীয় পক্ষ ব্যবহার করে চলেছে, তা ধরাই মুশকিল হয়ে পড়ে। তাই প্লে স্টোর থেকে অ্যাপ ডাউনলোডের আগে কিছু বিষয় খেয়াল করতেই হবে।
আরও পড়ুন:
১) গুগ্ল প্লে স্টোর অ্যাপটি খুলে প্রথমেই প্রোফাইল আইকনে ক্লিক করুন।
২) প্লে স্টোরের উপরে ডান দিকে আইকনটি রয়েছে। সেখানে ক্লিক করে সেটিংসে যান।
৩) সেটিংসে ক্লিক করলেই অনেকগুলি অপশন আসবে। সেখান থেকে ‘অ্যাবাউট’-এ ক্লিক করুন।
৪) ‘অ্যাবাউট’-এ ক্লিক করলে দেখবেন, ‘প্লে প্রোটেক্ট’অপশন আসছে। সেটির লাইসেন্স রয়েছে কি না, তা দেখে নিন। যদি দেখেন ‘সার্টিফায়েড’ লেখা রয়েছে, তার মানে বুঝতে হবে, আপনার ফোন সুরক্ষিত রয়েছে।
৫) গুগ্ল প্লে স্টোরের বাইরে ইন্টারনেট থেকে যদি কোনও অ্যাপ ডাউনলোড করেন, তা হলে আগে ‘ইমপ্রুভ হার্মফুল অ্যাপ ডিটেকশন’-এ যান। সেটিংস থেকে যেতে হবে। সেখানে গিয়ে গুগ্ল প্লে প্রোটেক্ট অন করে দিলেই প্লে স্টোর সেই অ্যাপটিকে স্ক্যান করা শুরু করবে। যদি ক্ষতিকর কিছু পায়, তা হলে সতর্ক করবে।
সুরক্ষিত থাকতে আরও কিছু বিষয়ে খেয়াল রাখুন। যেমন, ফোনের সফ্টঅয়্যার সব সময় আপডেট করে রাখুন। আপনার স্মার্টফোনে যদি সফ্টঅয়্যার আপডেট করা থাকে, তা হলে সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থার সুবিধা পাবেন। ফোনের ‘প্রাইভেসি সেটিংস’-এ কিছু বদল করে নিন। সবচেয়ে আগে নিজের ফোনের লোকেশন ম্যাপ বন্ধ রাখুন। তা হলে আপনার ফোন ট্র্যাক করা যাবে না। নিখরচার ওয়াইফাই ব্যবহার করে কোনও অ্যাপ ইনস্টল করবেন না। অজানা অ্যাপের মাধ্যমে ম্যালঅয়্যার বা ক্ষতিকর সফ্টঅয়্যার ইনস্টলড হয়ে যেতে পারে ফোনে। যদি কোনও অ্যাপ ডাউনলোড করতেই হয়, তা হলে চেক বক্সে ক্লিক করার আগে ভাল করে নিয়মাবলি পড়ে নিন।