শীত এসেই গেল প্রায়। ভোরের দিকে রাতে ট্যাঙ্কের জল বেশ ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। তাই গিজ়ার চালাতে শুরু করেছেন অনেকেই। শীতের সময়টা গিজ়ার চলবেই। তাই এই সময়ে সতর্ক থাকা জরুরি। গিজ়ারের সুইচ অন রেখে অনেকেই বাথরুমে স্নান করেন। এই অভ্যাসে বিপদ ঘনাতে পারে যখন তখন। আবার দীর্ঘ সময় গিজ়ার চালিয়ে রাখাও উচিত নয়। তাই সতর্ক থাকতে কিছু বিষয় খেয়াল রাখা খুব জরুরি।
স্নানের সময়ে গিজ়ার চালিয়ে রাখা কি নিরাপদ?
স্নান করার সময়ে গিজ়ার চালিয়ে রাখা নিরাপদ নয়। স্টোরেজ বা ইনস্ট্যান্ট যেমনই গিজ়ার হোক না কেন, তার সুইচ অন থাকলে দুর্ঘটনা ঘটার ঝুঁকি থেকেই যাবে। কী কী বিপদ ঘটতে পারে?
১) শৌচাগারের ভিজে স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে সুইচ ও সকেটগুলি প্রায়শই জলীয় বাষ্প বা জলের সংস্পর্শে আসে। স্নানের সময় গিজার চালু থাকলে, যদি ভিজে হাত বা জল সুইচে স্পর্শ করে, তা হলে শর্ট সার্কিট হওয়ার আশঙ্কা থাকবে। যেহেতু আপনি জলের সংস্পর্শে আছেন, তাই বৈদ্যুতিক শক লাগার ঝুঁকিও থাকবে।
২) গিজ়ার চালু রাখলে জল এত গরম হয়ে উঠবে, যে সতর্ক না থাকলে ত্বক পুড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকবে।অত্যধিক গরম জল মাথায় ঢেলে ফেললে, মাথার ত্বকও পুড়ে যাবে। গরম জল থেকে চোখেরও ক্ষতি হতে পারে।
আরও পড়ুন:
৩) ইনস্ট্যান্ট গিজ়ার একটানা দীর্ঘ সময় ধরে ব্যবহার করা উচিত নয়। গিজ়ারে বিস্ফোরণ ঘটার আশঙ্কাও থাকে।
৪) গিজ়ার যেখানে রয়েছে তার কাছাকাছি দাহ্য বস্তু রাখলেও বিপদ ঘটতে পারে। স্নানের সময়ে গিজ়ার চালু রয়েছে, এই সময়ে কাছাকাছি শৌখিন মোমবাতি, দেশলাই-লাইটার রাখা ঠিক নয়। আবার অ্যালকোহল রয়েছে এমন কোনও সুগন্ধি, জেল বা প্রসাধনীর সামগ্রীও কাছাকাছি রাখা উচিত নয়। তা থেকে বিপদ ঘটতে পারে।
গিজ়ার ব্যবহারে সতর্কতা?
স্নানের ১০-১৫ মিনিট আগে গিজ়ার চালু করুন। বাথরুমে ঢোকার আগে সুইচ অফ করে দিন।
নিশ্চিত করুন যে গিজ়ারের সঙ্গে সঠিক আর্থিং বা গ্রাউন্ডিং সংযোগ আছে কি না। না থাকলে প্রশিক্ষিত কারও পরামর্শ নিন।
অভিজ্ঞ ও প্রশিক্ষিত কাউকে দিয়েই গিজ়ার ইনস্টল করাবেন। না হলে ভুল তারের সংযোগে বিপদ ঘটতে পারে।
গিজ়ারের থার্মোস্ট্যাট (তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ) পরীক্ষা করিয়ে রাখা জরুরি। জল অতিরিক্ত গরম হয়ে গেলে নিজে থেকেই তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত হয়ে যাবে। এই ব্যবস্থা কাজ না করলে ঠিক করিয়ে নিতে হবে।
স্টোরেজ় গিজ়ার হলে প্রেসার রিলিজ় ভালভ ঠিকমতো কাজ করছে কি না দেখে নিন। না হলে থার্মোস্ট্যাটের উপর চাপ বাড়বে ও গিজ়ার তাড়াতাড়ি খারাপ হয়ে যাবে।
গিজ়ারের তাপমাত্রা ৪০-৫০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের বেশি যেন না হয়। ব্যবহারের আগে তাপমাত্রা সেট করে নিন। অতিরিক্ত তাপমাত্রা যন্ত্রাংশের উপর চাপ বৃদ্ধি করে।
বাড়িতে যদি ঘন ঘন বিদ্যুতের ওঠানামা হয়, তা হলে ভোল্টেজ় স্টেবিলাইজ়ার ব্যবহার করুন। এতে দুর্ঘটনা ঘটার ঝুঁকি কমবে।
গিজ়ারের বাইরের অংশ পরিষ্কার ও শুকনো রাখুন। কোনও ছিদ্র দেখা গেলে দ্রুত মেরামতের ব্যবস্থা করুন।