মহিলাদের নিয়ে তাঁদের বাড়ির লোকজন আসেন, তাঁদের মধ্য থেকে পছন্দের বরকে বেছে নিতে। ছবি- সংগৃহীত
বাজারে আলু,পটল, চাল-ডাল বিক্রি হয়। কিন্তু বর বিক্রির কিস্সা শুনেছেন কখনও? ভাবছেন বুঝি মশকরা হচ্ছে! আজ্ঞে না। মনের মতো বর দর-দাম করে কিনে নিয়ে যান কনের বাড়ির লোকেরা। এই ঘটনা আজকের নয়। ৭০০ বছর ধরে চলছে এই বাজার। বিহারের মধুবনী জেলায়।
গোটা জেলা থেকে মৈথিলী ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের পুরুষরা এসে ওই বাজারে সম্ভাব্য বর হিসাবে লাইন দিয়ে দাঁড়ান। কারও পরনে সাবেকি পোশাক, কারও আবার শার্ট-প্যান্ট। বরের মূল্য নির্ভর করে তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা ও পরিবারিক পরিচয়ের উপরে। মহিলাদের নিয়ে তাঁদের বাড়ির লোকজন আসেন, তাঁদের মধ্য থেকে পছন্দের বরকে বেছে নিতে। স্থানীয় বাসিন্দারা এই বিশেষ বাজারকে ‘বরের বাজার’ বা ‘সৌরথ সভা’ বলে থাকেন।
প্রতি বছর একটি নির্দিষ্ট সময়ে জেলার এক বাগানে বসে এই ন’দিনের সৌরথ সভা। যদি কোনও মহিলা ওই বাজারে এসে কোনও পুরুষকে পছন্দ করেন এবং বিয়েতে সম্মতি দেন, তখন তাঁর পরিবারের লোকেরা ওই পুরুষের পরিবারের সঙ্গে সম্ভাব্য সম্বন্ধ স্থাপন নিয়ে কথাবার্তা এগোতে শুরু করেন।
এই অদ্ভুত ঐতিহ্যের জন্মদাতা ছিলেন কর্নাট রাজবংশের রাজা হরি সিংহ। তাঁর উদ্দেশ্য ছিল বিভিন্ন গোত্রের মধ্যে বিবাহ চালু করা এবং বিবাহ প্রথাকে যৌতুকমুক্ত করা। সাধারণত লাল রঙের ধুতি পরে বাজারের বট গাছের নীচে বরেরা দাঁড়িয়ে থাকবেন, এটিই ছিল প্রথা।
এই ৭০০ বছরের পুরনো এই প্রথায় কিন্তু, ম্যারেজ রেজিস্টার বা স্থানীয় ভাষায় ‘পঞ্জিকর’দের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে। সাধারণত সৌরথ সভায় কনের বাবা-মা তাঁদের মেয়ের জন্য উপযুক্ত কোনও সঙ্গী খুঁজে পাওয়া মাত্রই, বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে থাকেন। পঞ্জিকররাই সেই বিয়ে সরকারি ভাবে নথিভুক্ত করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy