E-Paper

তীব্র গরমে এত কাহিলের নেপথ্যেও কি সেই কোভিড?

হাওয়া অফিস এখনও পাকাপাকি স্বস্তির খবর শোনাতে পারছে না। বরং প্রতিদিনই বাতাসে আর্দ্রতার মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, এই কারণেই গলগল করে ঘাম বেরোচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০২৩ ০৭:০১
Summer

সেবা: জ্বালা ধরানো গরমে বাসকর্মী, যাত্রীদের জল এগিয়ে দিচ্ছেন এক তরুণী। মঙ্গলবার, বেলেঘাটায়। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।

জ্যৈষ্ঠের তীব্র তাপে হাঁসফাঁস অবস্থা বঙ্গবাসীর। তারই মধ্যে দিনকয়েক আগের ‘ক্ষণিকের অতিথি’ কয়েক পশলা বৃষ্টি আরও সমস্যা বাড়িয়েছে। কিছু ক্ষণের স্বস্তি মিললেও পর মুহূর্তে তীব্র গরমে নাজেহাল অবস্থা। আর তাতেই মাথাচাড়া দিচ্ছে রোগ-ব্যাধি।

এ দিকে, হাওয়া অফিস এখনও পাকাপাকি স্বস্তির খবর শোনাতে পারছে না। বরং প্রতিদিনই বাতাসে আর্দ্রতার মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, এই কারণেই গলগল করে ঘাম বেরোচ্ছে।বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকায় সেই ঘাম সহজে বাষ্পীভূত হতে না পেরে, উল্টে শরীরে থেকে গিয়ে সমস্যা আরও বাড়াচ্ছে। ফলে ঘরে ঘরে বাড়ছে জ্বর, সর্দি, কাশির প্রকোপ। সেই সঙ্গে পেট এবং ত্বকের সমস্যা। বেশি ঘাম বেরিয়ে শরীরেজলশূন্যতার কারণে দুর্বলতা, মাথা ঝিমঝিম করা, মাংসপেশিতে টান লাগার মতো উপসর্গও দেখা দিচ্ছে। পাশাপাশি, তীব্র গরমে হুটহাট করে এসি-তে ঢোকা এবং সেই অবস্থা থেকে বেরোনোর জন্যও শরীরে বিভিন্ন সংক্রমণ বাসা বাঁধছে বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।

জনস্বাস্থ্য বিষয়ক চিকিৎসক অনির্বাণ দলুই বলেন, ‘‘এসিতে বার বার ঢোকা ও বেরোনোর অর্থই হল, দ্রুত তাপমাত্রার পরিবর্তন। এর ফলে অ্যালার্জির প্রকোপ বাড়ে, সেই সঙ্গে ভাইরাস ও ব্যাক্টিরিয়া দ্রুত বংশবৃদ্ধি করে। তাতে শ্বাসযন্ত্রে সংক্রমণ হয়ে জ্বর, হাঁচি, গলা ব্যথা, সর্দি-কাশি শুরু হয়। এমনকি, নিউমোনিয়াও হতে পারে।’’ তিনি আরও জানাচ্ছেন, অতিরিক্ত ঘাম ও যথার্থ পরিচ্ছন্নতার অভাবে ত্বকে র‌্যাশ, চুলকানি, ছত্রাকজাতীয় সংক্রমণও দেখা যায়। খুশকির সমস্যাও বাড়ে। তাপের সঙ্গে আর্দ্রতা জুটি বাঁধায় গলগল করে ঘাম বেরোনোয় শরীরে জলশূন্যতা দেখা দিতে পারে। তাই প্রস্রাবের মাত্রার দিকেও নজর রাখার কথা জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। তাঁদের কথায়, ‘‘প্রস্রাবের মাত্রা কমে গেলে, রং ঘন হলে বা দীর্ঘ ক্ষণ প্রস্রাব না হলে, ক্লান্তি-তেষ্টা থাকলে বুঝতে হবে শরীরে জলশূন্যতা হচ্ছে।’’

আবহাওয়ার কারণে এসি-র ব্যবহার এখন বেশি মাত্রায় হচ্ছে। রোদে পুড়ে, ঘেমেনেয়ে এসে বেশির ভাগই তড়িঘড়ি এসিতে ঢুকে শরীর ঠান্ডা করতে চাইছেন। এই অতি দ্রুত তাপমাত্রার পরিবর্তনই শারীরিক নানা সমস্যা ডেকে আনছে বলে মত কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিনের বিভাগীয় প্রধান, চিকিৎসক সৌমিত্র ঘোষের। তিনি জানাচ্ছেন, শরীর ঠান্ডা করার জন্য তার নিজস্ব ব্যবস্থাপনা রয়েছে। কিন্তু বাতাসে আর্দ্রতা ক্রমাগত বৃদ্ধি পেতে থাকলে, সেই ব্যবস্থাপনা ঠিক মতো কার্যকর থাকে না। তাতে ঘাম শুকোতে চায় না। বরং, তড়িঘড়ি গরম থেকে কনকনে ঠান্ডা ঘরে ঢোকা বা বেরোনোর ফলে সেই ঘাম শরীরে বসে গিয়ে বিপত্তি বাধে।

আবার মেডিসিনের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার বলেন, ‘‘গত কয়েক দিনে সর্দি, গলা ব্যথা, গলা খুশখুশ, জ্বরের রোগী বেড়েছে।একটা বিষয় ভাবতে হবে। আগেও তীব্র গরম হত, কিন্তু এত সংখ্যক মানুষকে সর্দিগর্মিতে আক্রান্ত হতে দেখা যেত না। তা হলে এখন কেন হচ্ছে? এর নেপথ্যেও কি কোভিড? তার প্রভাবেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমছে কি না, সেটাও এ বার দেখতে হবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

summer COVID-19

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy